Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Saturday, April 20, 2013

সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন না করে আইন বদল করলেই ধর্ষন বন্ধ হচ্ছে না। ফের একবার লজ্জায় কেঁপে উঠল দেশ। ফের একবার প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে রাজধানীর রাজপথ। দিল্লিতে পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যাকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফের একবার রাস্তায় ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।সংসদের বাজেট অধিবেশনে ভূমি অধিগ্রহন বিল সহ অনেক জরুরী আইন প্রণয়নের এজেন্ডা।এমত অবস্থায় আবার ধর্ষণ।এই নিয়ে সোরগুল হবেই।যার ফলে, সংসদীয় সর্বদলীয় সর্বসম্মতিতে জনগণের সর্বনাশ কতটা হবে, কিছুতেই জানা হবে না।ঠিক আগের মতোই। এদিকে পশ্চিম বঙ্গ এখন চিটফান্ড নিয়ে উত্তাল। চিটফান্ডে পরিণত দেশের কালো টাকার অর্থব্যবস্থা।যাদের দৌলতে চিটফান্ডের এই রমরমা,তাঁদের কিছুই হবে না। যতই হৈ হাঙ্গামা হোক্ না কেন, চিরকালর মত শুধু সর্বস্বান্ত হবেন সাধারণ মানুষ।সরকার শুধু এই জালিয়াত চিটফান্ডের এজেন্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। যারা জনগণেরটাকা আত্মসাত করতে সক্ষম, তারা পিঠের চামড়া বাঁচাতে আরো বেশি দক্ষ।


 সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন না করে আইন বদল করলেই ধর্ষন বন্ধ হচ্ছে না ফের একবার লজ্জায় কেঁপে উঠল দেশ। ফের একবার প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে রাজধানীর রাজপথ। দিল্লিতে পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যাকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফের একবার রাস্তায় ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।সংসদের বাজেট অধিবেশনে ভূমি অধিগ্রহন বিল সহ অনেক জরুরী আইন প্রণয়নের এজেন্ডা।এমত অবস্থায় আবার ধর্ষণ।এই নিয়ে সোরগুল হবেই।যার ফলে, সংসদীয় সর্বদলীয় সর্বসম্মতিতে জনগণের সর্বনাশ কতটা হবে, কিছুতেই জানা হবে না।ঠিক আগের মতোই। এদিকে পশ্চিম বঙ্গ এখন চিটফান্ড নিয়ে উত্তাল। চিটফান্ডে পরিণত দেশের কালো টাকার অর্থব্যবস্থা।যাদের দৌলতে চিটফান্ডের এই রমরমা,তাঁদের কিছুই হবে না। যতই হৈ হাঙ্গামা হোক্ না কেন, চিরকালর মত শুধু সর্বস্বান্ত হবেন সাধারণ মানুষ।সরকার শুধু এই জালিয়াত চিটফান্ডের এজেন্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। যারা জনগণেরটাকা আত্মসাত করতে সক্ষম, তারা পিঠের চামড়া বাঁচাতে আরো বেশি দক্ষ

বেতন ও ভাতা মিলিয়ে পিএফ কাটার প্রস্তাব

পলাশ বিশ্বাস


 সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন না করে আইন বদল করলেই ধর্ষন বন্ধ হচ্ছে না ফের একবার লজ্জায় কেঁপে উঠল দেশ। ফের একবার প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে রাজধানীর রাজপথ। দিল্লিতে পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যাকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফের একবার রাস্তায় ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।সংসদের বাজেট অধিবেশনে ভূমি অধিগ্রহন বিল সহ অনেক জরুরী আইন প্রণয়নের এজেন্ডা।এমত অবস্থায় আবার ধর্ষণ।এই নিয়ে সোরগুল হবেই।যার ফলে, সংসদীয় সর্বদলীয় সর্বসম্মতিতে জনগণের সর্বনাশ কতটা হবে, কিছুতেই জানা হবে না।ঠিক আগের মতোই। এদিকে পশ্চিম বঙ্গ এখন চিটফান্ড নিয়ে উত্তাল। চিটফান্ডে পরিণত দেশের কালো টাকার অর্থব্যবস্থা।যাদের দৌলতে চিটফান্ডের এই রমরমা,তাঁদের কিছুই হবে না। যতই হৈ হাঙ্গামা হোক্ না কেন, চিরকালর মত শুধু সর্বস্বান্ত হবেন সাধারণ মানুষ।সরকার শুধু এই জালিয়াত চিটফান্ডের এজেন্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। যারা জনগণেরটাকা আত্মসাত করতে সক্ষম, তারা পিঠের চামড়া বাঁচাতে আরো বেশি দক্ষ

 যে সমস্ত কর্মীরা ইপিএফও স্কিমের আওতায় পড়েন তাদের মূল বেতনের সঙ্গে অন্যান্য ভাতা যোগ করে যে মোট বেতন দাঁড়াবে তার উপর ভিত্তি করেই ভবিষ্যনিধি সঞ্চয় (প্রভিডেন্ট ফান্ড) কাটার পক্ষে সমর্থন দিয়েছে এই সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটি৷ এর ফলে সঞ্চয় বাড়লেও এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনের (ইপিএফও) পাঁচ কোটির বেশি সদস্য হাতে অনেক কম টাকা পাবে৷ 'কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক কমিটির সুপারিশটি বিবেচনা করার পরে তা ইপিএফও-র সর্ব্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পাঠানো হবে,' বলে সংস্থার এক ট্রাস্টি ও ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সচিব বি এন রাই বলেছেন৷ তিনি আরও বলেন, 'দেশের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও প্রভিডেন্ট ফান্ড কাটার ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে নিয়মিত ও একই খাতে যে সমস্ত ভাতা দেওয়া হয় সেগুলিকে যোগ করার প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছেন৷' 

পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশটি খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইপিএফও-র এক আধিকারিক৷ ২০১২-র ৩০ নভেম্বর তত্কালীন সেন্ট্রাল প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার আর সি মিশ্র সমস্ত নিয়মিত ভাতা সংস্থার কর্মীদের মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করার বিষয়ে একটি নির্দেশিকা আনেন৷ 'যে সমস্ত ভাতা সাধারণভাবে, প্রয়োজনীয়রূপে এবং বিভিন্ন সংস্থা কর্মীদের একই খাতে দিয়ে থাকে সেগুলিকে মূল বেতন বলেই ধরা হবে৷' নিয়ম অনুযায়ী একজন কর্মীর বেতন থেকে যে পরিমাণ টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতে কাটা হয় ঠিক সেই একই পরিমাণ টাকা কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ট অ্যাকাউন্টে জমা নিজেদের তরফ থেকে জমা দেওয়ার কথা সংস্থাগুলিরও৷ আর এই দায়বদ্ধতা কমাতেই কর্মীদের বেতন বিভিন্ন ভাতা হিসাবে ভাগ করে দেয় সংস্থাগুলি৷ নতুন নিয়ম চালু হলে আর এই দায় এড়াতে পারবে না সংস্থাগুলি৷ কিন্ত্ত, নির্দেশিকাটি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় বিষয়টি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছিল৷ পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকার একটি কমিটি গঠন করে৷ 

যে সমস্ত সংস্থা কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে সর্বাধিক সাত বছর তদন্ত চালানোর বিষয়ে রাই বলেন, 'কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে সংস্থাগুলি তাদের ভাগের টাকা জমা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টিকে কমিটি সমর্থন করে৷ তদন্তের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিলেও কর্মীদের আইনি অধিকার যাতে ভঙ্গ না হয় সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন৷' প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার হিসাবে দপ্তরে তাঁর শেষ দিনে (৩০ নভেম্বর) মিশ্র যে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন তার মধ্যে যে বিষয়গুলি সংস্থার মালিক এবং সংস্থাকে অপ্রস্ত্তত করে সেই বিষয়গুলি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে জানান রাই৷ নির্দেশিকা অনুযায়ী, সংস্থার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে এমন তথ্য যাচাই করার পরে তা সংশ্লিষ্ট কমপ্লায়েন্স অফিসারের কাছে তার বিবেচনার জন্য পেশ করতে হবে৷ কমপ্লায়েন্স অফিসার বিষয়টি বিবেচনা করে নির্দেশ দিলে তবেই চাকুরিদাতার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা যাবে৷ খঁুজে পাওয়া যাচ্ছে না এমন কর্মীর প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে ইপিএফও কোনও পদক্ষেপ করবে না বলেও ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল৷ 

 ফের ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গর্জে উঠল রাজধানী। চারদিন ধরে নিখোঁজ থাকা পাঁচ বছরের শিশুকন্যা উপর নারকীয় অত্যাচার ফিরিয়ে আনল দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের স্মৃতি। আপাতত পাঁচ বছর বয়সীনাবালিকার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন এইমসের চিকিত্‍সকরা। তবে সমগ্র ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে দিল্লির সাধারণ মানুষ।

এদিন দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের সামনে ব্যাপক মিছিল করেন বিক্ষোভকারীরা। দিল্লি কমিশনার নীরজ পাণ্ডের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে তাঁরা। পাশাপাশি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবিও তোলা হয়। বিক্ষোভ এগিয়ে যায় এইমস হাসপাতালের দিকেও। যেখানে মারাত্মক নির্যাতিতা শিশুকন্যাটি চিকিত্‍সাধীন রয়েছে। ঘটনার পরিস্থিতি বুঝে দিল্লি প্রশাসনের তরফে এইমস হাসপাতাল ও পুলিশের সদর দপ্তর কড়া নিরাপত্তা ঘিরে ফেলা হয়েছে।

অবশেষে শিশুকন্যা ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত মনোজ কুমার(২৮)কে বিহারের মুজাফফরপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। ধৃত মনোজ পেশায় দর্জি, তার বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তকে মুজাফফরপুর আদালতে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশ।

সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল বছর পাঁচেকের মেয়েটি। চারদিন পর রক্তাক্ত অবস্থায় তার খোঁজ মেলে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে। টানা দুদিন ধরে বন্দি করে রাখা হয় ওই শিশুকন্যাকে। এই দুদিন ধরে খাবার ও জল খেতে না দিয়েই তার উপর পৈশাচিক অত্যাচার চালায় ওই প্রতিবেশী। পূর্ব দিল্লির গান্ধীনগর এলাকায় বেশ কয়েকটি নিম্নবিত্তের বাস রয়েছে। সেখানেই একটি ঘরের নীচের তলায় মেয়েটিকে আটকে রেখে শারীরিক নিগ্রহ করে বলে জানা গিয়েছে।

গঙ্গাজলঘাটি: এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার রাজামেলা গ্রামে৷ দুর্গাপুরের মায়াবাজারে যে দন্তরে তিনি কাজ করতেন, সেখান থেকেই শুক্রবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ তার পরে রাজামেলা গ্রামের বাড়িতে তাঁর জিনিসপত্র তল্লাশি করে জানা যায়, সম্প্রতি যে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, সেই গোষ্ঠীতে অনেক টাকা লগ্নি করেছিলেন ওই ব্যক্তি৷ শুধু তাই নয়, কাজ করতেন ওই গোষ্ঠীর এজেন্ট হিসেবেই৷ কাজেই, তাঁর পরিবারের অভিযোগ, টাকা খোওয়ানোর শোক এবং গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়ার আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি৷

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম যাদব মাঝি৷ বাড়ি বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার রাজামেলা গ্রামে৷ মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকেই কর্মসূত্রে দুর্গাপুরের বাসিন্দা যাদব৷ সেখানে গত ১৫ বছর গোপাল সূত্রধর নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনি কাজ করতেন৷ পুলিশের দাবি, ২০১২ সাল থেকে সারদা গোষ্ঠীতে লগ্নি করতে শুরু করেন যাদব৷ এজেন্ট হিসেবেও কাজ করতেন (অ্যাসোসিয়েট কোড নম্বর এম ও ১৭৩৪১২)৷ তাঁর বাড়িতে মেলা নথিপত্র থেকে জানা যায়, দেড় বছরে প্রায় সওয়া এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন সারদা গোষ্ঠীর নানা প্রকল্পে৷ যাদবের বাবা পুরঞ্জয় মাঝি জানান, 'লগ্নি করবে বলে ও আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিল৷ কিন্ত্ত সারদা গোষ্ঠীতে লগ্নি করবে, সে কথা তখন বলেনি৷ এখন বুঝতে পারছি৷ টিভিতে, কাগজে সারদা গোষ্ঠী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷' যাদবের দাদা রঘুনাথ মাঝি বলেন, 'কাগজপত্র দেখে জানলাম সারদাতে অনেক টাকা লগ্নি করেছিল যাদব৷ এজেন্টও ছিল৷ সংস্থাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশা আর ভয় থেকেই আত্মহত্যা করেছে মনে হয়৷'

 ডুবে যাওয়া চিট ফান্ড সংস্থা সারদা গ্রুপের পরিণতি থেকে রাজ্য সরকার কি কোনও শিক্ষা নিচ্ছে? এই মুহূর্তের সব চেয়ে বড় প্রশ্ন, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অসংখ্য চিট ফান্ড সংস্থার সারদার মতো হাল হলে সরকার কী ব্যবস্থা নেবে৷ সারদার এই চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে শনিবার সরকারের কোনও ভাষ্য পাওয়া যায়নি, তবে শাসকদলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বিভিন্ন চিট ফান্ড সংস্থার আমানতকারী এবং এজেন্টকে আশ্বস্ত করেছেন৷ তিনি এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'সরকার এই সমস্যাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে৷ এই ধরনের সংস্থাগুলির কারবার নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজছে সরকার৷ প্রয়োজনে বিধি প্রণয়ন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷' তবে কী সেই উপায়, মুকুল তা বিশদে বলতে চাননি৷ মুকুলের যুক্তি, তিনি যেহেতু সরাসরি সরকারের প্রতিনিধি নন, তাই তাঁর পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়৷ তবে তিনি এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, 'সরকার আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবে না৷'

সারদার পরিণতি এবং অসংখ্য আমানতকারীর চোখের জল দেখে বিভিন্ন চিট ফান্ডে টাকা রাখা মানুষের রাতের ঘুম চলে গিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে শুরু করে শাসকদলের সদর দপ্তরে প্রতিদিন উপচে পড়ছে অসংখ্য 'ঠকে যাওয়া' আমানতকারী এবং এজেন্টের ভিড়৷ তাঁদের অভিযোগ, এই সব সংস্থার পিছনে শাসকদলের নেতাদের মদত রয়েছে৷ নাস্তানাবুদ শাসকদল অবশ্য চিট ফান্ড কারবারে মদত দেওয়ার যাবতীয় অভিযোগ নস্যাত্ করছে৷ মুকুল বলেন, 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন৷' পিঠোপিঠি প্রশ্ন ওঠে, দলে দলে মানুষ তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য উত্সুক কেন? মুকুলের যুক্তি, তিনি যেহেতু একজন রাজনীতিক, তাই ভুক্তভোগীরা তাঁকে সমস্যার কথা জানাতে আসছেন৷

তৃণমূলের যে সাংসদের বিরুদ্ধে নানা মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শনিবার পর্যন্ত দল তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে৷ মুকুল বলেন, 'কেউ বা কারা এই নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে৷ আপনারা যে সাংসদের কথা বলছেন উনি ওই সংস্থায় চাকুরিজীবী ছিলেন৷' দলীয় নেতৃত্ব প্রকাশ্যে কবুল না-করলেও দলের অন্দরে এই সাংসদই এখন মুখ্য চর্চার বিষয়৷ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ওই সাংসদ সারদা গোষ্ঠী থেকে মাসিক যে বেতন পেতেন তা দলের অজানা ছিল না৷ তিনি নিয়ম করে আয়করও দাখিল করেছেন৷ দলের আর এক সাংসদ এবং অভিনেত্রী শতাব্দী রায় সারদা গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও ঠিক নয় বলে দাবি করেন মুকুল৷ তাঁর কথায়, 'শতাব্দী রায় ওই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন না৷ কে ছিলেন, আমি জানি৷' পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা গত দু'দিন ধরে স্লোগান দিচ্ছেন৷ এর প্রতিক্রিয়ায় মুকুল বলেন, 'মদন মিত্র সারদা গ্রুপের কর্মী ইউনিয়নের নেতা৷ এটা হতেই পারে৷ আপনিও নেতা হতে পারেন৷ আমিও হতে পারি৷ তাতে কিছু যায় আসে না৷' মুকুলের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, সারদা গ্রুপের এই কেলেঙ্কারি নিয়ে বিভিন্ন জেলায় যে বিক্ষোভ-হামলা শুরু হয়েছে, তাতে সরকার এবং দল বিব্রত৷ তাই তিনি বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছেন, সারদার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই৷ কিন্ত্ত সারদার সঙ্গে যে জেলায় জেলায় শাসকদলের নেতাদের যথেষ্ট দহরম মহরম, সেটা সকলেই জানে৷ 


নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরের শিশুকন্যার ধর্ষণের খবরে গভীর বিচলিত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। এইমস হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে মেয়েটি। গত ১৬ ডিসেম্বর রাতের রাজধানীতে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীর গণধর্ষণের প্রতিবাদে আমজনতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, ধর্ষণ রোধে কড়া সাজার সংস্থান সহ বিল সংসদে গৃহীত হওয়ার পরও চারদিন ধরে প্রতিবেশী যুবকের লালসার শিকার হয়েছে একটি বাচ্চা মেয়ে, এই খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, তাকে বাঁচানোর জন্য যত ভালো চিকিত্সার ব্যবস্থা করা সম্ভব, তা যেন করা হয়।
এইমসে মেয়েটির চিকিত্সা চলার মধ্যেই বাইরে ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন মহিলার সঙ্গে পুলিশ যে নিন্দনীয় আচরণ করেছে, সেই দৃশ্যের টিভি ফুটেজ দেখেও উষ্মা জানিয়েছেন মনমোহন। এ ব্যাপারে তিনি দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গেও কথা বলেছেন। টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, একটি মেয়েকে থাপ্পড় মারছে, ধাক্কা দিচ্ছে পুলিশ।প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দোষী পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের এ ধরনের আচরণ কখনই বরদাস্ত করা যায় না।প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (পিএমও)  থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৫ বছরের শিশুকন্যার ওপর যৌন নিগ্রহ এবং হাসপাতালে তার সঙ্কটজনক অবস্থার খবরে প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।ধর্ষণ ও ওই জাতীয় অপরাধের বীজ সমাজের বুক থেকে চিরতরে নির্মূল করতে সমাজকে যে আত্মানুসন্ধানে নামতে হবে, নিজের গভীরে তাকাতে হবে, ফের সে কথা বলেছেন তিনি।(ফাইল চিত্র)

টুজি স্পেকট্রাম কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমকে কার্যত ক্লিনচিট দিল যৌথ সংসদীয় কমিটি। স্পেকট্রাম দুর্নীতির সঙ্গে দু`জনের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়েছে জেপিসি। 

জেপিসির পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, স্পেকট্রাম চুক্তি পরিবর্তনের কথা প্রধানমন্ত্রী কিংবা অর্থমন্ত্রীকে কিছুই জানাননি তৎকালীন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজা। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, `ফাস্ট কাম ফাস্ট সার্ভ` পরিষেবার ভিত্তিতে স্পেকট্রাম বণ্টন করা হলেও তাতে যে পক্ষপাতিত্বের দুর্নীতি ঘটানো হয়েছে, সে বিষয়েও বিন্দু বিসর্গ অনুগত ছিলেন না মনমোহন সিং কিংবা চিদাম্বরম। 

চলতি মাসের শুরুতে বিজেপি টুজি কাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে ফের সরব হয়। যশবন্ত সিংয়ের দাবি তোলেন, প্রধানমন্ত্রীকে যৌথ সংসদীয় কমিটির সামনে পেশ হতে হবে। এই দাবিতে সুর মিলিয়ে সরকারের ওপর চাপ বারায় বিরোধী দলগুলিও। 


নয়াদিল্লিঃ টুজি স্পেকট্রাম বন্টন সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে জানিয়েই নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করলেন প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজা৷টুজি কেলেঙ্কারিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)র খসড়া রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে নির্দোষ বলে ক্লিনচিট দিয়ে রাজার দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।বলা হয়েছে, তিনিই টুজি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিপথেচালিত করেছিলেন। অভিযোগ উড়িয়ে রাজা শুক্রবার বলেছেন, আমি প্রত্যেকটি পদক্ষেপ করেছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই।টেলিকম মন্ত্রক ছাড়ার পর আমি প্রত্যেককে বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই যা করার করেছি। গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতেও সেকথাই বলেছি।আমার বিরুদ্ধে যখন চার্জ গঠন হয়, তখনও আমার বক্তব্য ছিল এটাই।আমার অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট।প্রসঙ্গত, জেপিসি রিপোর্টের খসড়ায় স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির ঘটনাক্রম তুলে ধরে বলা হয়েছে, ইউনিভার্সাল অ্যাকসেস লাইসেন্স বন্টনের যে পদ্ধতি মানা হবে বলে টেলিকমমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছিল, এই উপসংহারেই আসতে হচ্ছে আমাদের।রাজা তাঁর দিকে ধেয়ে আসা অভিযোগের তীর ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। বলেছেন, আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করব।  আত্মরক্ষায় জেপিসি-কে আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত নোট পাঠাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রাজা। বলেছেন, আশা করছি, আমার নোট খতিয়ে দেখে জেপিসি আমায় ডাকবে।টুজি কেলেঙ্কারির তদন্ত সম্পর্কে  এক প্রশ্নের জবাবে রাজা বলেছেন, গোটা টুজি পর্বটাই বিশৃঙ্খলায় মোড়া।সিএজি হোক, সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলছি, সুপ্রিম কোর্টের মতামত পর্যন্ত ন্যায়বিচারকে লঙ্ঘন করছে।তবে আমার বিচারবিভাগের ওপর আস্থা আছে। বিচারপর্ব চলছে।নির্দোষ প্রমাণিত হব।রাজার পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর দল ডিএমকে।দলের সভাপতি এম কে করুণানিধি খসড়া জেপিসি রিপোর্টকে তুলোধনা করে বলেছেন, একজন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বিপথে চালিয়েছেন, কী করে এটা বিশ্বাস করা যায়?

http://www.abpananda.newsbullet.in/national/60-more/35834-2013-04-19-08-58-22


শিশুকন্যা ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠল রাজধানীর রাজপথ। সমগ্র ঘটনায় পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। দিল্লি পুলিসের সদর দফতরের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। হাতে পোস্টার আর ব্যানার, মুখে সরকার আর দিল্লি পুলিসের বিরুদ্ধে স্লোগান নিয়ে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী ব্যারিকেড ভেঙে ফেলারো চেষ্টা করেছেন। সামগ্রিক ভাবে দিল্লিতে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনা রোধে ব্যর্থ দিল্লি পুলিস কমিশনার নীরজ কুমারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। 

অবশেষে আজ সকালে পুলিসের জালে ধরা পড়ল দিল্লিতে শিশু কন্যা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযু্ক্ত যুবক। গতকালই দিল্লি পুলিস সূত্রে জানানো হয়েছিল, ওই যুবককে গ্রেফতার করতে বিহারের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে পুলিসের দুটি দল। এরপর  গতরাতে মুজাফফরপুর থেকে  গ্রেফতার করা হয় বছর আঠাশের মনোজকে। ধৃত মনোজ পেশায় দর্জি বলেই জানা গেছে। আগেই তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আজই অভিযুক্তকে মুজাফফরপুরে আদালতে পেশ করবে পুলিস। এরপরেই ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে দিল্লি নিয়ে আসা হবে বলেই পুলিসসূত্রে জানা গেছে।

পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে টানা দু`দিন ঘরে বন্দি করে ধর্ষণ চালিয়েছিল ধৃত দুষ্কৃতী। চলতি মাসের ১৫ তারিখ শিশুটিকে চুরি করে মনোজ। অভিযোগ দু`দিন ঘরের মধ্যে বন্দী রেখে মেয়েটির উপর পৈশাচিক অত্যাচার চালায় সে। ওই শিশুকন্যার বাবা সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন তাঁর মেয়ের নিরুদ্দেশের কথা থানায় জানালেও পুলিস উপযুক্ত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। উল্টে অভিযোগ, পুলিস শিশুটির বাবাকে টাকার বিনিময় চুপ থাকতে বলে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুকন্যাটির যৌনাঙ্গে মোমবাতি, বোতল ঢুকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। শিশুটির ঠোঁট ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। চিকিৎসারত ডাক্তার জানান তিনি চিকিৎসা জীবনে প্রথমবার এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখলেন। তাঁর কথায়, "পরীক্ষায় শিশুটির যৌনাঙ্গে ২০০ মিলিমিটার বোতল, মোমবাতির টুকরো ঢোকানোর ক্ষত দেখেছি আমরা। আমি জীবনে প্রথম এই বর্বরতা দেখলাম।

তিনি আরও জানিয়েছেন, "শিশুটির ঠোঁটে, গালে ক্ষতচিহ্ন। গলায় কালসিটে দেখে অনুমান করা যায় তাকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা চালিয়েছিল ওই দুষ্কৃতী। শিশুটিকে যখন ভর্তি করা হয় তখন তার রক্তচাপ স্বাভাবিকের অনেক নিচে।"

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে শাহদারার স্বামী দয়ানন্দ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে এইমসে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সূত্রে খবর। ওই শিশুটির অবস্থা এখনও বেশ আশঙ্কাজনক। আগামী ৪৮ ঘণ্টা না কাটলে কিছুই বলতে পারবেন না ডাক্তাররা জানিয়েছেন।

আত্মীয় পরিজনদের বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার সন্ধেয় শিশুটিকে এইমসে স্থানান্তরিত করা হয়। তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও সঙ্কট এখনও কাটেনি বলেই জানিয়েছেন চিকিত্‍সকরা। একাধিক চিকিত্‍সক তাকে পরীক্ষা করছেন।

অন্যদিকে কর্তব্যে গাফিলতি এবং পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই দুই পুলিসকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে গান্ধীনগর থানার হেড অফিসার ধরমপাল সিং এবং সাব ইন্সপেক্টর মাহবীর সিংকে।

শিশুটির বাবার অভিযোগ, গান্ধীনগর থানায় এফআইআর দায়ের করতে গেলে পুলিস তাঁর হাতে দুহাজার টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার কথা বলে। 

প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ অস্বীকার করলেও শুক্রবার রাতে দিল্লি পুলিস সূত্রে জানানো হয়েছে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।  


পাঁচ বছরের একটি শিশু কন্যাকে টানা দু`দিন ঘরে বন্দি করে ধর্ষণ চালাল মেয়েটির প্রতিবেশী। দিল্লির গান্ধী নগরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখ শিশুটিকে চুরি করে ওই দুষ্কৃতী। অভিযোগ দু`দিন ঘরের মধ্যে বন্দী রেখে মেয়েটির উপর পৈশাচিক অত্যাচার চালায় সে। ওই শিশুকন্যার বাবা সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন তাঁর মেয়ের নিরুদ্দেশের কথা থানায় জানালেও পুলিস উপযুক্ত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। উল্টে অভিযোগ, পুলিস শিশুটির বাবাকে টাকার বিনিময় চুপ থাকতে বলে। 

হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুকন্যাটির যৌনাঙ্গে মোমবাতি, বোতল ঢুকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। শিশুটির ঠোঁট ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। চিকিৎসারত ডাক্তার জানান তিনি চিকিৎসা জীবনে প্রথমবার এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখলেন। তাঁর কথায়, "পরীক্ষায় শিশুটির যৌনাঙ্গে ২০০ মিলিমিটার বোতল, মোমবাতির টুকরো ঢোকানোর ক্ষত দেখেছি আমরা। আমি জীবনে প্রথম এই বর্বরতা দেখলাম।

তিনি আরও জানিয়েছেন, "শিশুটির ঠোঁটে, গালে ক্ষতচিহ্ন। গলায় কালসিটে দেখে অনুমান করা যায় তাকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা চালিয়েছিল ওই দুষ্কৃতী। শিশুটিকে যখন ভর্তি করা হয় তখন তার রক্তচাপ স্বাভাবিকের অনেক নিচে।"  

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে শাহদারার স্বামী দয়ানন্দ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে এইমসে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সূত্রে খবর। ওই শিশুটির অবস্থা এখনও বেশ আশঙ্কাজনক। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা না কাটলে কিছুই বলতে পারবেন না ডাক্তাররা জানিয়েছেন। 

পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে পুলিস।

গান্ধী নগরের যে আবাসনে ওই শিশু কন্যা ও তার পরিবার থাকে তারই নীচের তলায় থাকে বছর তিরিশের ওই ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি সম্পর্কে এর থেকে বেশি তথ্য প্রকাশে অস্বীকার করেছে পুলিস।

বুধবার সন্ধেতে ওই দুষ্কৃতীর ফ্ল্যাট থেকে শিশুটির গোঙানি আর আর্তনাদের শব্দ শুনে তার পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে। ফ্ল্যাটটির মালিক পলাতক।

অন্যদিকে, হাসপাতালের সামনে শিশুটির পরিবার, প্রতিবেশী ও কেজরিওয়ালের আম আদিমি পার্টির সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেন তাঁরা। এর সঙ্গেই ওই শিশুটিকে অন্য কোনও ভাল হাসপাতালে স্থান্তরিত করার দাবিও জানান তাঁরা। এই বিক্ষোভে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত ও দিল্লি পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।


মুম্বই: পাঁচ বছরের মেয়েটির শরীর-মনে প্রতিবেশী যুবকের পাশবিক অত্যাচারের দাগ চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি করেছে।এইমস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তার বেঁচে থাকার লড়াই অমিতাভ বচ্চনকে ভাবিয়ে তুলেছে। পাশবিকতার এমন ভয়াবহ চেহারা দেখে বাকরুদ্ধ সিনিয়র বচ্চনের অভিমত, যারা এ ধরনের বর্বরোচিত অপরাধ করে, তাদের সঠিক বিচার হওয়া উচিত জনতার আদালতে।জনসমক্ষেই তাদের সাজা হওয়া দরকার।নিজের ব্লগে বিগ বি লিখেছেন, একেবারে শেষ ধর্ষণের ঘটনাটির বীভত্সতা এবং তারপর ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে মেরে ফেলার চেষ্টা দেখে আমার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।এই নরাধমরা জানোয়ার বলে ডাকারও যোগ্য নয় কারণ পশুরাও কিছু আচরণবিধি মেনে চলে।এসব কী হচ্ছে আমাদের সমাজ, গোষ্ঠীতে? কেন, কীভাবে আমরা এমন নারকীয়, জঘন্য কাজ করার মতো নীচে নামলাম? কারা এইসব লোক, এলই বা কোথা থে? কোন মায়ের গর্ভে জন্ম হয়েছে এদের? এরা বড় হয়ে উঠেছেই বা কোন পরিবেশে? বুকের গভীরে জমে থাকা ক্ষোভ এভাবেই উগরে দিয়ে অমিতাভ লিখেছেন, এ ধরনের অপরাধীদের যথাযথ সাজা কারাদণ্ড নয়। আটকে, বেঁধে রেখে এদের বদলানো যাবে না, মানসিকতার বদল ঘটানো যাবে না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।প্রথমে ওদের জনসমক্ষে এনে অপমান করতে হবে, তারপর তুলে দিতে হবে জনতার হাতে।জনতা যেটা সঠিক মনে করবে, সেই সাজাই দেবে। একইসঙ্গে হতাশা-খেদ ঝরে পড়েছে বিগ বি-র ব্লগে। তিনি লিখেছেন, কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা হওয়া উচিত, সে ব্যাপারে যেন একটা সম্পূর্ণ শূন্যতা বিরাজ করছে।কারওই বোধহয় সমাধানসূত্র, বলা ভাল, রোধ করার রাস্তা জানা নেই। কবে, কখন একটা ঘটনা ঘটবে, আমরা সেজন্য বসে থাকি। তারপর মোকাবিলার রাস্তা খুঁজতে হাত পা ঝেড়ে মাঠে নেমে পড়ি। ধর্ষণ বা জঙ্গি হানা, কোনও ব্যাপারেই আমাদের হাতে মোকাবিলার কোনও বিধি-ব্যবস্থা নেই।আমরা সবাই একটা নিরাপত্তাহীন সময়ে বেঁচে আছি, যখন সরকার-প্রশাসনের ভয়, শৃঙ্খলার শাসন, এসবের  কোনও মূল্যই নেই। আমরা ভালবাসা, তাজা বাতাস নিয়ে বাঁচি, আর আশায় থাকি, অন্যদের ওপর যে বিপর্যয় নেমে এল, তার আঁচ যেন আমাদের গায়ে না পড়ে।(ফাইল চিত্র)


বেআইনি চিটফান্ড সংস্থা সারদা গোষ্ঠীর হাতে প্রতারিত লক্ষাধিক মানুষ। এজেন্ট এবং আমানতকারীদের ক্ষোভে উত্তাল গোটা রাজ্য। কিন্তু কিছুটা অদ্ভুতভাবেই ক্ষোভ শুধু ওই বাণিজ্যিক সংস্থার বিরুদ্ধে নয়। সর্বস্বান্ত মানুষজনের ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও সরকারের বিরুদ্ধেও। কেন?

বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, সরকার কি তাঁদের সারদা গোষ্ঠীতে টাকা রাখতে বলেছিল?
 
বিক্ষোভকারীরা এও বলছেন, জেলায় জেলায় সারদা গোষ্ঠীর দফতরে তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় নেতাদের ছবিও থাকত। এমনকী একই বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সারদা গোষ্ঠীর দফতর রয়েছে, এমন ছবিও দেখা গেছে ঘাটালে।  
 
শুধু তৃণমূল কংগ্রেস নেতারাই নন, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বোতভাবে সারদা গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু কেন?
 
২০১২-র ৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয় সারদা গোষ্ঠীর সংবাদপত্র কলম। এটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি ছোট কাগজের পাশে আছেন।
 
২০১২-র ২৭ মার্চ একটি নির্দেশ জারি করে সরকার। কী বলা হয়েছিল সেই নির্দেশে?

সরকারি সেই নির্দেশ অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি বহুল প্রচারিত বাংলা এবং  ইংরেজি দৈনিককে সরকারি পাঠাগারে না রাখার ফতোয়া জারি হয়। যে আটটি সংবাদপত্র সেইসময় সরকারের পছন্দের তালিকায় ছিল তার বেশ কয়েকটিই সারদা গোষ্ঠীর। সরকারি সেই ফতোয়া ঘিরে রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শুধু তৃণমূল কংগ্রেসই নয়, সারদা গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক যে সরকারও একের পর এক ঘটনায় সেই বার্তাই যায়। আর সম্ভবত সেই কারণেই সর্বস্বান্ত  মানুষের ক্ষোভ শুধু সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, শাসক দলের বিরুদ্ধেও।  



অপরাধী ইতিমধ্যেই পুলিসি হেফাজতে। কিন্তু তাতেও বাধ মানছে না মানুষের ক্ষোভ। সব ছাপিয়ে বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন একটাই। আর কবে পৃথিবীর বৃহত্তমে গণতন্ত্রে সুরক্ষিত হবে নারী ও শিশুরা?

এখনও পর্যন্ত দিল্লির ঘটনার টাইমলাইন 

সন্ধ্যা ৭.০৫টা-- এইমসর ডাক্তার ডি কে শর্মা বললেন, শিশুটি এখন ভালই আছে। জ্ঞান ফিরেছে, বাবা মায়ের সঙ্গে কথাও বলছে।

সন্ধ্যা ৭.০০টা- শিশুটিকে দেখতে এইমসে গেলেন সোনিয়া গান্ধী

সন্ধ্যা ৬.৩০টা- পটনা থেকে দিল্লিতে আনার পর মূল অভিযুক্তকে জেরা করছে পুলিস।

সন্ধ্যা ৬.৩০টা- বিজেপি নেতা আদবাণী বললেন, বারবার একই ঘটনা ঘটছে অথচ সরকার হাত গুঁটিয়ে বসে আছে।

 
৪.২০: ১০ জনপথের সামনে জড় হতে শুরু করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

৩.৫৫টা: ইন্ডিয়া গেট চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি। 

৩.৪৫: নিছক কিছু আইন প্রনোয়ন করে এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করা যাবে না বলে মত প্রকাশ করলেন বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাম জেঠমালানি। শিক্ষিত মানুষ কখনই এই ধরণের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না বলে মন্তব্য করেছেন এই প্রবীণ আইনজীবী। 

৩.৩৫: ইন্ডিয়াগেটে জড় হওয়া বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দিল দিল্লি পুলিস।

৩.১৫টা: ''এই নৃশংস ঘটনায় আমি মর্মাহত।'' মন্তব্য উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির।

৩.০০: সুশীল কুমার শিন্ডের বাড়ির সামনে পুলিসের সঙ্গে বিতন্ডায় জড়ালেন বিক্ষোভকারীরা।

২.৫৫টা-- মূল অভিযুক্তকে পটনা থেকে দিল্লি নিয়ে আসা হল।

২.৫০টা: সুষমা স্বরাজ এইমসে শিশুটির সঙ্গে দেখা করে এলেন। জানালেন ডাক্তাররা তাঁদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।

২.৩৫টা-- দিল্লি পুলিসে বড়সড় রদবদল হতে চলেছে। দিল্লির পুলিস কমিশনার নীরজ কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর

২.৩০টা--সোনিয়া গান্ধী জানালেন, এখন কথা বলার সময় নয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়।

২.২০টা-- দিল্লি পুলিসের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেওয়া হল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডের বাড়ির বাইরে থামানো হল প্রতিবাদ।

২টা ১৫--এইমস-এর ডাক্তাররা জানাল, শিশুটি এখন চিকিত্‍সায় বেশ ভাল সাড়া দিচ্ছে। চার পাঁচ দিনের মধ্যেই শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

২টা-- দিল্লি পুলিসের সদর দফতরে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের সঙ্গে যোগ দিলেন সিপিআই কর্মীরা

দুপুর ১টা ২৫: আহমেদাবাদ, বৃন্দাবন সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিশুটির আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা।

দুপুর ১টা ১৫: এইমসের ডাক্তাররা জানালেন অস্ত্রোপচার করা হবে মেয়েটির।


দুপুর ১২টা ৫৫: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে ঘোষণা করলেন রিপোর্ট হাতে এলেই এই ঘটনা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান ধৃত অভিযুক্তকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আর্জি শিন্ডের।  

দুপুর ১২টা ৫০: নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের দাবি করলেন সুষমা স্বরাজ। 

দুপুর ১২টা ৪০:  দিল্লি পুলিস কমিশনারের অপসারণ দাবি করলেন বিক্ষোভকারীরা। 

দুপুর ১২টা ৪০: পুলিস সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভরত মানুষদের শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ পুলিসের। ব্যারিকেড ভাঙার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি। 

দুপুর ১২টা ৪০: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জল কামান চালাল পুলিস। 

দুপুর ১২টা ৪০: দিল্লি পুলিসের সদর দফতরের সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভকারীদের। দলে দলে মানুষের বিক্ষোভে যোগদান। হেডকোয়ার্টারের সামনে তীব্র যানজট। 

দুপুর ১২টা ১৫: আটজন  ডাক্তারের বিশেষ দল জানাল মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন মেয়েটির অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। 

দুপুর ১২টা ১০: পূর্ব দিল্লির ডেপুটি পুলিস কমিশনার প্রভাকর জানালেন টানা ৪০ ঘণ্টা বন্দী ছিল পাঁচ বছরের শিশুটি। ধৃত মনোজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁরা দিল্লিতে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন বলে জানালেন তিনি। অভিযুক্ত মনোজ ১৫ বছর আগে দিল্লিতে আসে। প্রাথমিক ভাবে সে একটি কাপড়ের কারখান্য চাকরি করত বলে জানিয়েছেন ডিসিপি প্রভাকর। 

বেলা ১২টা: নিগৃহীতা শিশু কন্যাকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী

সকাল ১১টা ৫০: দিল্লি পুলিস কমিশনার নীরজ কুমার ইন্ডিয়া গেটের সামনে সাধারণ মানুষকে জমায়েত না হওয়ার আবেদন জানালেন। সংবাদমাধ্যমকে জানালেন দ্রুত এই কেসটিকে ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্টে স্থানান্তরিত করা হবে।

সকাল ১১টা ৩৫: শিশুটির উপর চলা পৈশাচিক অত্যাচারের মর্মাহত, জানালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ক্রমবর্ধমান এই মূল্যবোধের অবক্ষয়কে সামাজিক ভাবেই রোধ করতে হবে। শিশুটির জন্য সেরা চিকিৎসার দাবি জানালেন রাষ্ট্রপতি। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন তিনি।  এখনই রোধ করতে হবে।   শিশুটির দ্রুত আরোগ্যকামনার জন্য আমি ওর পরিবারের সঙ্গেই প্রার্থনা করছি। জানালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। 

সকাল ১১টা ২৭: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ এইএমসে মেয়েটিকে দেখে এলেন।

সকাল ১১টা ১৯: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুশীল কুমার শিন্ডের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ ছাত্র-ছাত্রীদের।

সকাল ১১টা ১৭: এখনও পর্যন্ত এই ধরনের জঘন্য অপরাধ রোধে সরকারের তরফ থেকে কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মন্তব্য বিজেপি প্রেসিডেন্ট রাজনাথ সিংয়ের।

সকাল ১১টা ১৫: প্রতিবাদরত মেয়েটিকে চড় মেরে ওই পুলিসকর্মী কি একটুও লজ্জিত নন? মানসিকতার পরিবর্ত্ন প্রয়োজন। না হলে কেউই নিজেকে আর দিল্লিতে নিরাপদ মনে করবে না। মন্তব্য সুষমা স্বরাজের। 

সকাল ১১টা ৫: দিল্লি পুলিসের অবিলম্বে দোষ স্বীকার করে নেওয়া উচিৎ। মন্তব্য প্রাক্তন পুলিস অফিসার কিরণ বেদীর। 

সকাল ১০টা ৩৭: হাসপাতালের ভিতর প্রতিবাদকে এখনই থামানোর দাবি জানালেন কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত। জানালেন এই ঘটনানিয়ে নোংরা রাজধানী বন্ধ করা হোক। 

সকাল ১০টা ৩৬: ধর্ষকদের কঠোরতম শাস্তি প্রয়োজন। তাদের হাত কেটে ফেলা উচিৎ প্রতিক্রিয়া জানালেন নাজমা হেপাতুল্লা।

সকাল ১০টা ২২: এইমসের বাইরে বিক্ষোভরত সাধারণ মানুষ অবিলম্বে অপরাধীর শাস্তির দাবি জানালেন।

সকাল ১০টা ২০: শিশুটির অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। জানালেন এইমসের ডাক্তাররা। 
 
সকাল ১০টা ১৫: কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মণিশ তেওয়ারি ঘটনাটিকে হৃদয়বিদারক ও ক্ষমাহীন বলে মন্তব্য করলেন।

সকাল ১০টা ৮: দিল্লি পুলিস হেডকোয়ার্টারের বাইরে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা দিল্লি পুলিস কমিশনারের অপসারণ দাবি করলেন। 

সকাল ১০টা ৬: এটাই সময়...নাবালিকা ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন জারি করা উচিৎ সরকারের। মন্তব্য বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানির।

সকাল ৯টা ৪৪: কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ জানালেন তাঁরা সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন আইন ও শাস্তি সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিসকে।

সকাল ৯টা ৩০: আজমের শরিফে নিগৃহীতা শিশুটির আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা।

সকাল ৯টা ২৫: এরা কি পুলিস নাকী গুণ্ডা বাহিনী? প্রশ্ন সিপিআইএম নেত্রী বৃন্দা কারাতের। 

রাত ৩টে: ধৃত মনোজ কুমারকে দিল্লিতে নিয়ে আসার জন্য ৭২ ঘণ্টার ট্রানসিট রিমান্ড

রাত ২টো: বিহার থেকে ধৃত এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত মনোজ কুমার। 

সুদীপ্ত সেনের উত্থান কাহিনি

সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। এমুহূর্তের সবচেয়ে আলোচিত নাম। যিনি মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সামান্য এক ব্যবসায়ী থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছেন। কীভাবে এতটা ফুলেফেঁপে উঠলেন সুদীপ্ত সেন? কারা রয়েছেন তাঁর এই উত্থানের পিছনে?          

নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে ব্যবসায়ী জীবনে আত্মপ্রকাশ রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হিসেবে। বেহালা ট্রাম ডিপোর কাছে তখন ছোট্ট একটি অফিস ছিল সুদীপ্ত সেনের। 
সূত্রের খবর, পৈলান এলাকায় একসময় বহু জমি বিক্রি করেন তিনি। তা থেকে প্রচুর কাচা টাকা হাতে আসে। এরপরই দুহাজার ছয়ে সুদীপ্ত সেন নেমে পড়েন চিট ফান্ড ব্যবসায়।

শোনা যায়, তাঁর আগে সেন পরিবারেরই ভূদেব সেন ছিলেন সঞ্চয়নী সেভিংস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির মালিক। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে প্রচুর লগ্নিকারীকে ধোঁকা দিয়েছিল ওই সংস্থাও। উনিশশো চুরানব্বইয়ে গ্রেফতার হন ভূদেব সেন। যদিও তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের কথা বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন সুদীপ্ত সেন।   
তিনি চিট ফান্ড ব্যবসায় নামার পর অল্প কিছু সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে বিশাল সারদা সাম্রাজ্য খাড়া করে ফেলেন। 

সারদা গোষ্ঠীর কোম্পানিগুলির মধ্যে রয়েছে -- সারদা কনস্ট্রাকশন, সারদা রিয়েলিটি, সারদা ট্যুরজ অ্যান্ড ট্রাভেলস, সারদা এক্সপোর্ট। 

সূত্রের খবর, ২০০৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ক্রমশ বাড়তে থাকে সুদীপ্ত সেনের। সেই সময়েই তিনি সংবাদমাধ্যমেও নিজের সংস্থার শাখা-প্রশাখা বিস্তার করতে শুরু করে দেন। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেল মিলিয়ে দশ-দশটি মিডিয়া হাউস খুলে বসে সারদা গোষ্ঠী। সরকার ওই গোষ্ঠীর পাশে রয়েছে, এই ছবি বারবার সামনে উঠে আসতে থাকে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও দেখা যায় সারদা গোষ্ঠীর একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করতে। 

শাসক দলের মন্ত্রী, সাংসদ সহ নেতাদের সঙ্গে এইসময় সুদীপ্ত সেনের রমরমা বাড়তে থাকে বলে খবর বিভিন্ন মহলে। এই সমস্ত ঘটনা জনমানসে সারদা গোষ্ঠীর বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়াতে অনুঘটকের কাজ করে বলে পর্ষবেক্ষকদের ধারণা। একটি সূত্রের খবর, দুহাজার ছয়ে চিট ফান্ড ব্যবসা শুরুর পর গত সাত বছরে সুদীপ্ত সেনের সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে বাইশ হাজার কোটি টাকা।


তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে সারদা গোষ্ঠীর এজেন্টদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মুকুল রায়ের বৈঠক ভেস্তে গেল। বৈঠক অসমাপ্ত রেখেই বেরিয়ে গেলেন মুকুল রায়। বেলার দিকে তৃণমূল ভবনের সামনে জড়ো হন এজেন্টরা। গতকালই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তাঁরা।  আজ তিনজন এজেন্টকে ডেকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মুকুল রায়। কিন্তু বৈঠক অসমাপ্তই থেকে যায়। এর আগে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন এজেন্টরা। 

কোটি টাকা খরচ করে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কেনেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। এছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসকে নানা ভাবে সাহায্য করত সারদা। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরী। শুধু সারদাই নয়, অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস এমন অনেক চিটফান্ডের গোষ্ঠীর থেকেই ডোনেশন নিয়েছে। বেকারিত্ব দূর করার নাম করে রাজ্যের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এই চিটফান্ডগুলি। এর পিছনে মদত ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। এমনই অভিযোগ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের। আগে ব্যবস্থা না নিয়ে এখন প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে চাইলে, তেমন কোনও লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

অন্যদিকে ইতিমধ্যেই সরকারের পিঠ বাঁচাতে সামনে চলে এসেছেন রাজ্যের প্রথম সারির নেতা মন্ত্রীরা। "সরকার কাউকে সারদা গোষ্ঠীতে টাকা লগ্নি করতে বলেনি।" এই সরকারের আমলে বেআইনি চিট ফান্ড তৈরি হয়নি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে সরকার অইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। বললেন, মন্ত্রী মদন মিত্র। এদিন তৃণমূল ভবনে সারদার এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক অসমাপ্ত রেখে বেরিয়ে আসেন মুকুল রায়। বাইরে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে ধৈর্য্য হারান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনের বাইরে কেন তাঁকে প্রশ্ন করা হবে সেই প্রশ্ন তুলে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এর পর থেকে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র অনেক আগেই ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের কোনও কোনও মহলে এবং কোনও কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ওই বেআইনি চিটফান্ড গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে সারদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনই অভিযোগ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের। বেআইনি চিটফান্ড সংস্থাকে বৈধতা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। অভিযোগ সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিমের। সারদা গোষ্ঠীর যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়ার কথা ছিল, সেই সম্পত্তির কী অবস্থা, তার তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।    

তৃণমূল ভবনের সামনে অবশ্য বিক্ষোভ দেখাতে পারেননি সারদা গোষ্ঠীর এজেন্টরা। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিস। এরপরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মুকুল রায় তিনজন এজেন্টকে ডেকে পাঠিয়ে বৈঠকে বসেন। কিন্তু ভেস্তে যায় বৈঠক। বৈঠক ছেড়ে মাঝপথেই বেরিয়ে যান মুকুল রায়। এরপরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ধৈর্য হারান মুকুল রায়


সারদা গোষ্ঠীর প্রতারণায় হাহাকার রাজ্যজুড়ে। প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকারের ভূমিকাও। বাম আমলেই বিধানসভায় পাস হয়েছিল, বেআইনি আর্থিক সংস্থা প্রতিরোধক বিল। কিন্তু, গত দুবছরেও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে তা কার্যকর করার চেষ্টা করেনি বর্তমান সরকার। এমনকী, সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের জবাবেও নিরুত্তর থাকার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিরুদ্ধে।   

অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রীয়তাতেই এই পরিস্থিতি। বেআইনি চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ শুরু হয়েছিল বাম সরকারের আমলেই। ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থাগুলিকে রুখতে তৈরি হয়েছে ইকনমিক অফেন্স উইং। যার উদ্দেশ্য ছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সেবির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে বেআইনি সংস্থাগুলির মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া। 

আটকে প্রতিরোধ বিল

২০০৯-এর ২৩ ডিসেম্বর বিধানসভায় পাস হয়েছিল প্রটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটরস অফ ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন বিল 

বিলে বেআইনি চিট ফান্ডগুলির বিরুদ্ধে আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়

ওই বিলে প্রতারক সংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সম্পত্তি ক্রোক করে গ্রাহকের টাকা ফেরতের বন্দোবস্তের কথা বলা হয়

ফৌজদারি বিধিতে প্রতারকের যাবজ্জীবন কারাবাস পর্যন্ত শাস্তির বিধানও ছিল বিলটিতে

২০১০-এ রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল বিলটি  

সাধারণত এই ধরণের বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেতে সাত থেকে আট মাস লেগে যায়। ইতিমধ্যে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল হয়ে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। তারপর, দু`বছর কেটে গেলেও সেই বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন মেলেনি। যদিও এই সময় কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক ছিল তৃণমূল। নীতি নির্ধারণের একাধিক বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল তারা। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রীয়তাতেই গত দুবছরে রাজ্যজুড়ে ডালপালা মেলেছে বেআইনি চিট ফান্ড সারদা গোষ্ঠী।

সারদা কেন বেআইনি

সুদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানতকারীর টাকা জমা রাখার ব্যবসা করতে হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন লাগে, সারদা গোষ্ঠীর তা নেই

সম্পত্তি লেনদেন সংক্রান্ত ব্যবসায় যুক্ত আর্থিক সংস্থার, সেবির অনুমোদন লাগে। সারদা গোষ্ঠীর তাও নেই

রাজ্যের রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের তালিকায় সারদা গোষ্ঠীর নাম নথিভুক্ত নেই

২০১২-র অক্টোবরে রাজ্যে বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলির তালিকা পাঠিয়েছিল কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক। তালিকায় সবার উপরে ছিল সারদা গোষ্ঠীর নাম 

শুধু সারদা গোষ্ঠী নয় বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যজুড়ে মাথা তুলেছে আরও বহু বেআইনি আর্থিক সংস্থা

চিটফাণ্ডের রমরমা 

২০১০-এর মাঝামাঝি রাজ্যজুড়ে ৬৫ চিটফাণ্ড ছিল

অর্থ দফতরের হিসেব অনুযায়ী ২০১৩-এ রাজ্যে চিটফাণ্ডের সংখ্যা ১৩৫ 

এর বাইরেও, জেলায় জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য বেআইনি চিট ফান্ড। যাদের সম্মিলীত লেনদেনের পরিমাণ কেউই জানে না। চিটফাণ্ডের রমরমার প্রমাণ মেলে স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগের বেহাল দশা থেকেই।

বেহাল স্বল্পসঞ্চয়

২০১০-১১ অর্থবর্ষে রাজ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক সংস্থাগুলিতে স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পে লগ্নির মোট পরিমাণ ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি

বর্তমানে রাজ্যের রাষ্ট্রয়ত্ত আর্থিক সংস্থাগুলিতে লগ্নির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫৭ কোটি টাকা  

করা অনেক কিছুই যেত। হয়নি কিছুই। তারই ফলশ্রুতি এই হাহাকার। এত মানুষের  ক্ষোভ, হাহাকার আর কান্নার দায় কি এড়াতে পারে রাজ্য সরকার? উঠছে প্রশ্ন। যদিও মদন মিত্রের যুক্তি, সরকার তো আর চিটফান্ডে টাকা রাখতে বলেনি।  


সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন সেজন্য নোটিস জারি করা হল। আজ একথা জানিয়েছেন বিধাননগর পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ। সুদীপ্ত সেনের সংস্থার এবং তাঁর ব্যক্তিগত একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার সম্পত্তিও। সারদা গোষ্ঠীর এক অধিকর্তা মনোজ কুমার নাগেলকেও আজ গ্রেফতার করেছে পুলিস। 

সারদা  গোষ্ঠীর মতো ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থার কোনও সরকারি অনুমোদন ছিল না বলে জানা গেছে। ব্যাঙ্কিং সংস্থা না হওয়ায় আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন দরকার। বাজার থেকে শেয়ার, ডিবেঞ্চারের মাধ্যমে টাকা তুলতে গেলেও সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবির অনুমোদন প্রয়োজন। বাজারে বীমা সংক্রান্ত পলিসি বিক্রি করতে গেলে ইন্সিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অথরিটি বা আইআরডিএর অনুমোদন প্রয়োজন। রাজ্যে আর্থিক লেনদেনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে সরকারের অধীন রেজিস্ট্রার অব কোম্পানির নথিভুক্তিরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু উপরোক্ত কোনটিতেই নথিভুক্ত নয় সারদা গোষ্ঠী।

যদিও সারদা গোষ্ঠীর তরফে দাবি করা হয়েছে, যেহেতু  কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকে নথিভুক্তি আছে, ফলে অন্যকিছুতে নথিভুক্তির প্রয়োজন নেই তাদের। কিন্তু সম্প্রতি সাহারা গোষ্ঠীর একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, শুধুমাত্র কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকে নথিভুক্তি নয় সেবিতেও নথিভুক্তি প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন উঠছে রাজ্য সরকার এই ধরনের চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে পারে?  রাজ্যের ক্ষমতা কতটা রয়েছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজ্যের হাতে আর্থিক অপরাধ দমনের কোনও আইন নেই। যেহেতু শেয়ার, ডিবেঞ্চারের এর মাধ্যমে টাকা তুলছে সারদার মত ভুঁইফোঁড় সংস্থা। তাই এই সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতি, ফৌজদারি মামলা দায়ের হতে পারে।  

গতকালের পর আজও রাজ্যের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চিট ফান্ড সংস্থা সারদা গোষ্ঠীর এজেন্ট এবং গ্রাহকরা। কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় দেশজুড়ে বিপদের মুখে পড়েছে চিটফান্ড সংস্থাগুলি। এঁদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা তোলা হচ্ছে, কিন্তু ফেরতের নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। বন্ধের মুখে সুদীপ্ত সেনের মালিকানাধীন এ রাজ্যের চিটফান্ড সংস্থা সারদাও। 

আজ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে সারদা অফিসে এজেন্ট এবং গ্রাহকদের মধ্যে বচসা এবং হাতাহাতি হয়। গতকাল সল্টলেকে সারদার তিনটি অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান এজেন্টরা। এই এজেন্টদের অনেকে রাজ্যের বাইরের। চিটফান্ট প্রকল্পে এঁরা টাকা সংগ্রহ করতেন গ্রাহকদের থেকে। তাঁদের অভিযোগ, সংস্থার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারছেন না। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান এজেন্টরা। হাওড়ার ডোমজুরে দিলীপ পাল নামে সারদা গোষ্ঠীর এক এজেন্টের বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন কয়েকশো গ্রাহক। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুরে রাস্তা অবরোধ করেন সারদা গোষ্ঠীর এজেন্টরা। ডায়মন্ডহার, নিশ্চিন্দপুরে সারদার অফিস বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এজেন্ট এবং গ্রাহকরা বিক্ষোভ দেখায়। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতেও বিক্ষোভ হয়।

চিটফান্ড সংস্থা সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং সরকারের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই গোষ্ঠীর হাতে টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র মোট দশটি সংবাদমাধ্যমের  মালিক এই সংস্থা। পর্যবেক্ষকদের মতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের প্রচারকের ভূমিকা নিয়েছে এই সংবাদমাধ্যমগুলি। চিটফান্ড সংস্থাটির সিইও তৃণমূল কংগ্রেস দলের একজন রাজ্যসভার সাংসদ।

নির্বাচনের আগে বামদলগুলি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বারবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। তাদের অভিযোগ ছিল, বেআইনিভাবে সারদা গোষ্ঠী সাধারণ মানুষের থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে শাসকদলের হয়ে প্রচার করছে। সেই সময় তাদের অভিযোগ ছিল সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তুলে বিভিন্ন প্রকল্পে যে পরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা অসম্ভব। এমনকী শাসকদলের এক সাংসদ সোমেন মিত্র সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে নিজের দলের লোকজনদের যোগাযোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন। যে চিঠিতে তিনি জানান, রাজ্যের হাজার হাজার মানুষের টাকা আত্মসাত করছে সারদার মতো বেশকিছু সংস্থা।

কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠার পরও কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থাগুলির রমারমা ঠেকাতে ২০১০ সালে বিধানসভায় একটি বিল আনে ততকালীন বাম সরকার। বিলটি এখনও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের  অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সেই বিলটির ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেই অভিযোগ। 


গ্রেফতার করতে হবে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সারদা গোষ্ঠীর মালিক সুদীপ্ত সেনের গ্রেফতারির দাবিতে রাজ্যজুড়ে সংস্থার এজেন্ট ও লগ্নিকারীদের বিক্ষোভ চরমে পৌঁছল শনিবার৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির সামনে অবস্থানের পরে শনিবার সকালে তা আছড়ে পড়ে তৃণমূল ভবনে৷ এজেন্টদের দাবি, সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে শাসক দলের একাংশের ঘনিষ্ঠতা দেখেই এই কাজে উত্সাহিত হন তাঁরা৷ গোষ্ঠীর একাধিক আর্থিক অনিয়ম প্রকাশ্যে আসতেই জেলায় জেলায় সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ইতিমধ্যেই ব্যবসা বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন সুদীপ্ত সেন৷ এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষিপ্ত এজেন্ট-আমানতকারীরা তাণ্ডব চালান।টাকা ফেরানোর দাবিতে সংস্থার বিভিন্ন অফিসে ভাঙচুর চলে৷এদিকে দিনভর জেলায় জেলায় এজেন্ট, আমানতকারীদের বিক্ষোভের পর সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করে পুলিশ৷তাঁকে হন্যে হয় খুঁজছে পুলিশ৷ তিনি যাতে কোনওভাবেই দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য লুক-আউট নোটিস জারি করেছে পুলিশ৷ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে তদন্তকারী দল৷

এদিন সারদা গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায় সল্টলেক সেক্টর ফাইভের এ এল ব্লকে৷ এজেন্টদের অভিযোগ, ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম প্রকাশ্যে আসতেই লরিতে করে নথি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল৷ লরিটি আটক করেন তাঁরা৷ লরির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ সারদা গোষ্ঠীর একটি অফিস বন্ধকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় সেক্টর ফাইভের ডিএন ব্লকে৷ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান সংস্থার এজেন্টরা৷
টাকা না পেয়ে হাওড়ার ডোমজুড়ে সারদা গোষ্ঠীর এক এজেন্টের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা৷ আমানতকারীদের অভিযোগ, শনিবার সকালে গিয়ে তাঁরা দেখেন, এজেন্ট বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন৷ এরপরই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে এজেন্টের বাড়িতে৷ বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শিলিগুড়ি৷ সেবক রোডে বসে পড়ে বিক্ষোভ সারদার আমানতকারীদের৷ বেশকিছুক্ষণ হিল কার্ট রোড অবরোধ করেও বিক্ষোভ প্রদর্শন৷ বিক্ষোভ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনেও৷ বিক্ষোভের আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের বাড়ির সামনে৷ অবিলম্বে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বিক্ষোভ দেখান আমানতকারীরা৷ বিক্ষোভে সামিল হন সারদার এজেন্টরাও৷ মেয়াদ পূরণের পরও টাকা মিলছে না৷ এজেন্টরা অফিস বন্ধ করে পালিয়েছে৷ এই অভিযোগে বহরমপুরে সারদার অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চলে৷  সারদার দুটি অফিস বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে বিক্ষোভ চলে৷ এদিকে মায়াবাজার এলাকা থেকে যাদব মাঝি নামে সারদার এক এজেন্টের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়৷ যাদব মাঝির মৃত্যুর জন্য সারদা গোষ্ঠীর কর্তাদের কঠোর শাস্তির দাবি আমানতকারীদের৷ টাকা না পেয়ে কাঁথি-দিঘা বাইপাসে সারদা গোষ্ঠীর একটি আবাসন প্রকল্পে ব্যাপক ভাঙচুর চালান আমানতকারীরা৷  ভাঙচুরের পর ব্যাপক লুঠপাটও চালানো হয় বলে অভিযোগ৷  ঘাটালেও সারদার অফিসে ভাঙচুর চালান আমানতকারীরা৷ বিক্ষোভে সামিল হন সংস্থার এজেন্টরাও৷ বিক্ষোভকারীরা ৭টি কম্পিউটার নিয়ে চলে যান বলেও অভিযোগ৷  পুরুলিয়ায়ও সারদা গোষ্ঠীর বোর্ড খুলে অফিস বন্ধ করে দিলেন সংস্থার এজেন্টরা৷ 
শুক্রবার সন্ধ্যায়  কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনের ছবি৷ কয়েক ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চলার পর পুলিশ  বিক্ষোভকারী এজেন্টদের সরিয়ে দেয়৷ কিন্তু আজ সকাল থেকেই সংস্থার কয়েকশো এজেন্ট ও আমানতকারী জমায়েত হন তপসিয়ার তৃণমূল ভবনের সামনে৷ তুমুল বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। এজেন্টরা বলেন, শাসক দলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠতা দেখেই তাঁরা কাজে নেমেছিলেন৷ এখন সেই সংস্থার দিশাহারা অবস্থা৷ কর্ণধার বেপাত্তা৷ আমানতকারীরা টাকা পাচ্ছেন না৷  আমানতকারীদের রোষের শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের৷ বাড়ি ফিরতেও তাঁরা ভয় পাচ্ছেন৷ তাঁদের দাবি, অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুন মুখ্যমন্ত্রী৷

 এদিকে ১৬ এপ্রিল ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় সুদীপ্তবাবুর বিরুদ্ধে তাঁরই মালিকানাধীন সারদা গোষ্ঠীরই কয়েকটি সংস্থার কর্মীরা চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করেন৷ এরপর তদন্তে নামে পুলিশ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ মনোজ কুমার নাগেল নামে সংস্থার এক অধিকর্তাকে গ্রেফতারও করে৷ ডিসি ডিডি, বিধাননগর, অর্ণব ঘোষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তদন্তে সারদা গোষ্ঠীর ন'টি সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে৷ সংস্থার সবকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে পুলিশ৷ ফ্রিজ করা হয়েছে সুদীপ্তবাবুর ব্যাক্তিগত অ্যাকাউন্টও৷ তাঁর ১০০ কোটি টাকারও বেশি স্থাবর সম্পত্তির নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ৷ 

পুলিশ জানিয়েছে, যেসব সফটওয়্যারের মাধ্যমে সারদা গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড চলত, সেই সফটওয়্যার প্রস্ততকারী সংস্থার কাছে নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে৷ সংস্থার লেনদেন সম্পর্কে জানতে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে  প্রয়োজনে সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/35872-2013-04-20-08-53-19


কলকাতা:  বারবার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও এতদিন চিটফান্ডগুলির রমরমা ঠেকাতে তেমন একটা সক্রিয় পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ সূত্রের খবর, সারদা-বিপর্যয়ের পর অবশেষে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ তৈরির কথা ভাবছে কেন্দ্র৷ অর্থনীতির ফাঁক-ফোকরে গজিয়ে ওঠা ছোট ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি৷ জন্মলগ্ন থেকেই সাধারণ আমানতকারীদের টাকায় ফুলেফেঁপ উঠেছে৷ রাজপথ থেকে অলিগলি, এরা ডালপালা মেলেছে জেলায় জেলায়৷ এদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বাস্ত হয়েছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ৷ বাম আমলে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা সংস্থাগুলির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে তৃণমূল সরকারের আমলে৷ কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্র—কেউ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে৷ বারবার এনিয়ে সরব হয়েছেন সোমেন মিত্র, আবু হাসেম খান চৌধুরী এবং দীপা দাশমুন্সির মতো সাংসদেরা৷ কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, চিটফান্ডের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্যই তৃণমূলের মধ্যে একঘরে হতে হয়েছে সোমেন মিত্রকে৷ তাঁর স্ত্রীকে অপমানিত হতে হয়েছে

চিটফান্ড নিয়ে সংসদের ভিতরেও সরব হয়েছেন তরুণ কংগ্রেস সাংসদ সচিন পাইলট৷ কড়া পদক্ষেপ করার দাবি উঠছে৷ কিন্তু ঘরে-বাইরে দাবি জোরালো হলেও কখনওই এই চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে তেমন কোনও বড়সড় পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি কেন্দ্রকে৷ কখনও শুধুমাত্র কোনও সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেই ক্ষান্ত হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, তো কখনও রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে সেবি৷ এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যে সারদা-বিপর্যয়৷ সূত্রের খবর, 
অবশেষে ভুঁইফোড় সংস্থাগুলির গলায় লাগাম পরাতে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ ভবিষ্যতে সেই কর্তৃপক্ষের আওতায় দেশের সমস্ত অর্থলগ্নি সংস্থাকে নিয়ে এসে একটি আর্থিক শৃঙ্খলা গড়ে তুলতে চাইছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷ সম্প্রতি ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলির এই রমরমা রুখতে চিদম্বরমকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের পরামর্শ দেন।অর্থমন্ত্রকের বিশেষজ্ঞরা৷ সূত্রের খবর, সেই পরামর্শ মেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ তবে ওই নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সাংবিধানিক কাঠামো কী হবে, কী ভাবে সেটি কাজ করবে, তা রাজ্যগুলির সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনার পরেই ঠিক হবে৷
আগামী সোমবার দেশে ফিরছেন চিদম্বরম৷ তারপরই ওই নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর৷ সেই বৈঠকে ডাকা হবে অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীদেরও৷ (ফাইল চিত্র)

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34/35889

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...