Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Friday, December 19, 2014

Saradindu Uddipan:জেহাদের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছে মালালার দীপ্ত আভাঃ


জেহাদের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছে মালালার দীপ্ত আভাঃ
পেশোয়ারের সৈনিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে নিস্পাপ শিশুদের হত্যা করার পর তেহরিক–ই-তালিবান মুখে যা খুশি স্বীকার করুক না কেন আসলে তারা যে মালালার উদাত্ত আহ্বানে এবং সামাজিক পুনর্গঠনের কর্মসূচীতে ভয় পেয়ে গেছে তার নানা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত ১০ই সেপ্টেম্বর নোবেল পুরস্কার ভাষণে মালালা উদাত্ত কন্ঠে ঘোষণা করেছিল, 
" প্রিয় বোন এবং ভাইয়েরা... কেন আমারা সেই দেশগুলিকে শক্তিশালী বলি যারা যুদ্ধে বলশালী কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুর্বল? যে হাতে বন্দুক তুলে দেওয়া এত সহজ সেই হাতে বই তুলে দেওয়া এত কঠিন কেন? 
আমরা এখন আধুনিক যুগে বাস করছি এবং আমরা বিশ্বাস করি যে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। আমরা ৪৫ বছর আগে চাঁদে পৌঁছে গেছি এবং তাড়াতাড়িই মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করতে পারব। তারপর এই ২১ শতকে অবশ্যই আমরা প্রত্যেক শিশুকে উৎকর্ষ মূলক শিক্ষা দিতে সক্ষম হব। 
প্রিয় বোন এবং ভাইয়েরা, সহকর্মী শিশুরা, আমাদের কাজ করতে হবে...ওপেক্ষা করলে চলবে না। শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ বা আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দ নয়, আমাদের সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আমি, তুমি আমরা, এটাই আমাদের কর্তব্য। 
আমরা যেন সেই প্রথম প্রজন্ম হোই যারা শেষ শূন্য শ্রেণিকক্ষ, নষ্ট শৈশব এবং সম্ভাবনার জঞ্জাল দেখার সিদ্ধান্ত নিই। এটা যেন শেষের দিন হয় যখন একটি মেয়ে একটি ছেলে খারখানার ভিতরে তার শৈশব অতিবাহিত করে। এটা যেন শেষের দিন হয় যখন একটি মেয়ে বাল্যবিবাহের জন্য বাধ্য হয়। এটা যেন শেষের দিন হয় যখন একটি শিশু যুদ্ধে প্রাণ হারায়। এটা যেন শেষের দিন হয় যেন আমরা একটি শিশুকে বিদ্যালয়ের বাইরে দেখি। এই পরিস্থিতি যেন আমাদের সাথে সাথেই শেষ হয়। এই শেষের শুরু হোক... এক সাথে...আজ...এখানেই...এখনি। এই শেষ লগ্নের এখনই শুরু হোক"। Nobel Lecture by Malala Yousafzai, Oslo, 10 December 2014. 
এর ঠিক কদিন পরেই গত ১৬ই ডিসেম্বর সংঘটিত হয় এই নারকীয় হত্যালীলা। পাকিস্তানে সদ্য গজিয়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদী দল তেহরিক–ই-তালিবান স্বীকার করে যে, পাকিস্তানী সৈনিকদের শিক্ষা দিতে এই নিরপরাধ ১৩২ জন শিশু, ১০ জন শিক্ষক এবং ৩জন পাকিস্তানী সেনা সহ ১৪৫ জন মানুষের রক্ত স্নানের মাধ্যমে তারা ইসলামের পবিত্রতা রক্ষা করেছে। একই সঙ্গে পালন করেছে জেহাদী ধর্ম। পৈশাচিক হত্যার দায় এভাবেই স্বীকার করে নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে তেহরিক –ই-তালিবান এর সর্বেসর্বা 'ফয়জল হায়াত' ওরফে 'মোল্লা ফয়জুল্লা' বা 'রেডিও মোল্লা'।
এখানে বলে রাখি যে, এই 'মোল্লা ফয়জুল্লা' বা 'রেডিও মোল্লা' গত ২০১২ সালে মালালাকে হত্যা করার জন্য শরিয়তি ফরমান জারি করেছিল। মালালা গুলি বিদ্ধ হলে সারা দুনিয়া জুড়ে শুরু হয়েছিল প্রার্থনা। মোমবাতির পবিত্র আলোকে মিলিত হয়েছি সারা বিশ্ব। একটি অন্বেষী প্রাণের করুণ আকুতি মানব মিলনের এক মহাক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল সেদিন। মহামানবের অনুভূতি, অবধ্য প্রাণশক্তি, অদম্য সাহসিকতা নিয়ে মালালা বেঁচে ওঠে। মোল্লাতান্ত্রিক কালাকানুন, আইএসআইএস এর ঘোষিত "লাভ জেহাদের" রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই চালিয়ে যেতে থাকে তার প্রগতিশীল কর্মধারা। বিদগ্ধ মনন ও দীপ্ত আভাতেই নোবেল পুরস্কারের তালিকায় স্থান করে নেয় মালালা। নোবেল পুরস্কারের সমস্ত অর্থ মালালা ফাউন্ডেশন দান করে তার মাতৃভূমি পাকিস্তানেই শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার সংকল্প গ্রহণ করে। অশিক্ষা, শিশুশ্রম, অন্ধবিশ্বাস, বাল্যবিবাহ, যুদ্ধোন্মাদনার বিরুদ্ধে নিরন্তর কাজ করে বিশ্বের সমস্ত শিশুকে তাদের কাঙ্ক্ষিত মার্গে পৌঁছে দেবার মহান ব্রত ধ্বনিত হয় তার কণ্ঠে। 
সম্ভবত এখানেই রেডিও মোল্লাদের বিপদ। তারা মোল্লাপন্থী, গোড়া, সুড়ঙ্গের জীব। 
আধুনিক বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস ও প্রগতি তাদের নীতির পরিপন্থী। তারা বিশ্বাস করে বাল্য বিবাহে। বহু বিবাহের মাধ্যমে নেকী বা পুণ্য অর্জন করা যায় বলে তারা মনে করে। তারা মনে করে যে নারীর চোখ, ঠোট, চিবুক পরপুরুষকে কামনার আগুনে দগ্ধ করতে পারে। তাই গোটা নারী শরীরকে বোরখার অন্তরালে লুকিয়ে রাখাই তাদের ফরমান। নারী স্বাধীনতা, নারী শিক্ষা এবং নারীর স্বশক্তিকরণ তাদের কাছে অবান্তর। বরং এগুলিকে গুনাহ বলে মনে করে এবং এই গুনাহগারদের কাফের হিসেবে হত্যা করতে পারলেই তাদের জান্নাত প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। 
কিন্তু মালালার অদম্য কর্মকাণ্ডে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে এই সুড়ঙ্গ জীবীরা। জনপুঞ্জের বিপুল সমর্থন পাচ্ছে মালালা। আর সেই কারণেই ধর্ম যুদ্ধ, জেহাদ বা লাভ জেহাদের ভিত ধ্বসে পড়তে শুরু করেছে। তাই যে শিশুদের নিয়ে মালালা এক কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমাতে চায় সেই শিশুদেরই টার্গেট করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জল্লাদেরা। সংঘটিত করেছে এই পৈশাচিক শিশুমেধ। 
অত্যন্ত মর্মবেদনার সাথে জানাচ্ছি যে, এই যদি জেহাদ বা ধর্মযুদ্ধের নমুনা হয়, নিরপরাধ শিশুদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে যদি সেই ধর্মের বিজয় উল্লাস ঘোষিত হয় তবে নিঃসন্দেহে এটা শয়তানের ধর্ম, পিশাচের ধর্ম, নরখাদকদের ধর্ম। আর কোন ফরমান যদি এই হত্যালীলা সংঘটিত করার জন্য উৎসাহ জোগায় নির্দ্বিধায় তা শয়তানী ফরমান। কোন ভাবেই এই পথ ইসলাম বা শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ হতে পারেনা, কোন ভাবেই এই কদর্যত পন্থায় বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। মালালা এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য নিন্দা প্রকাশ করেছে। আমরাও এই বর্বরতার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাই।

জেহাদের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছে মালালার দীপ্ত আভাঃ  পেশোয়ারের সৈনিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে নিস্পাপ শিশুদের হত্যা করার পর তেহরিক–ই-তালিবান মুখে যা খুশি স্বীকার করুক না কেন আসলে তারা যে মালালার উদাত্ত আহ্বানে এবং সামাজিক পুনর্গঠনের কর্মসূচীতে ভয় পেয়ে গেছে তার নানা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত ১০ই সেপ্টেম্বর নোবেল পুরস্কার ভাষণে মালালা উদাত্ত কন্ঠে ঘোষণা করেছিল,
Like ·  · Share

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...