Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Friday, April 19, 2013

ত্রাতা বিজেপি, জট কাটল জমি বিলে

ত্রাতা বিজেপি, জট কাটল জমি বিলে


ত্রাতা বিজেপি, জট কাটল জমি বিলে
নয়াদিল্লি: দু'বছরের বিতর্ক শেষে সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই পাশ হতে চলেছে বহুচর্চিত জমি অধিগ্রহণ বিল৷ বৃহস্পতিবারের দ্বিতীয় সর্বদলীয় বৈঠকে 'মোটামুটি মতৈক্যে'র পর আগামী সোমবারই সংশোধিত বিলটি লোকসভায় পেশ করতে চাইছে সরকার৷

কীভাবে সম্ভব হল এই মতৈক্য? যে বিজেপি গত কয়েক বছরে একের পর এক বিল পাশের ক্ষেত্রে মনমোহন সিং সরকারের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তারাই ইউপিএ-র ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হল৷ সরকার তাদের বেশ কিছু সংশোধনী মেনে নেওয়ায় জমি অধিগ্রহণ বিল সমর্থন করতে সম্মত হল বিজেপি৷ তৃণমূল, বামদলগুলি এবং ডিএমকে বিলটির বিরোধিতা করলেও, বিজেপি-র সমর্থন পেয়ে আর কালক্ষেপ করতে চাইছে না সরকার৷ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেছেন, যদি সংসদ সচল থাকে তো সোমবারই সংশোধিত বিলটি পেশ করা হবে৷ তাঁর দাবি, 'বিল নিয়ে মোটামুটি মতৈক্য হয়েছে৷ সকলেই চান বিলটি সংসদের আসন্ন অধিবেশনে পাশ হোক৷' সনিয়া ও রাহুল গান্ধীও দ্রুত বিলটি পাস করাতে চান৷

বৈঠকের শেষে বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, 'আমরা মোট বারোটি সংশোধনী দিয়েছিলাম৷ সেগুলির অধিকাংশই মেনে নিয়েছে সরকার৷ তাই বিলটি পাস করাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই৷'

বিজেপি-র সম্মতি পেতে বিলে বেশ কিছু পরিবর্তন করতে রাজি হয়েছে সরকার৷ এর মধ্যে বেশ কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন রয়েছে৷ যার ফলে বিলের চরিত্রও কিছুটা বদল হয়ে যাচ্ছে৷ বিজেপি বলেছিল, কৃষকের মালিকানা যাতে বজায় থাকে, সে জন্য জমি শুধু বিক্রি নয়, লিজে দেওয়ারও ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ ৩৩ থেকে ৯৯ বছরের লিজ হতে পারে৷ জমি লিজে দিয়ে মাসে মাসে টাকা পাবেন কৃষকরা৷ অবশ্য জমি তাঁরা লিজে দেবেন, না বিক্রি করবেন তা কৃষকই ঠিক করবেন৷ সরকার এই দাবি মেনে নিচ্ছে৷ আজ সর্বদলীয় বৈঠকে জয়রাম বলেছেন, সলিসিটার জেনারেলের সঙ্গে কথা চলছে৷ আইনগত অসুবিধা না থাকলে এটা মেনে নিতে অসুবিধা নেই৷ সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া জানিয়েছেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মত জানাইনি৷ এটা কৃষকদের পক্ষে হবে না বিপক্ষেযাবে সেটা আলোচনা করে দেখতে হবে৷'

তবে জমি লিজ দেওয়ার বিষয়টি রাজ্যের আওতায় পড়ে৷ তাই প্রতিটি রাজ্য সরকার যাতে আলাদা করে জমি অধিগ্রহণ বিল আনতে পারে সেই সংস্থানও রাখা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিলে৷ কিন্তু রাজ্যসভার বিরোধী নেতা অরুণ জেটলি প্রশ্ন তুলেছেন, যদি রাজ্যের আইন এবং কেন্দ্রীয় আইনের মধ্যে কোনও বিরোধ বাধে, সে ক্ষেত্রে তো সংসদের পাস করা আইনই বলবত্‍ হবে৷ তখন বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে৷ অর্থাত্‍ , পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইলেও জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে একশো শতাংশ কৃষকের সমর্থন লাগবে এমন ব্যবস্থা করতে পারবে না৷ জয়রাম তখন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন৷
বিজেপি-র দ্বিতীয় যে দাবি সরকার মেনেছে, তা হল, ২০১১ সলের সেপ্টেম্বরে যখন প্রস্তাবিত বিলটি আনা হয়, তারপর অনেক কর্পোরেট সংস্থা ও শিল্পপতি ভবিষ্যতে শিল্পস্থাপনের জন্য প্রচুর জমি কিনে রেখেছেন৷ সেই সব জমির জন্য বেশি দাম পাননি কৃষকরা৷ তাই সেই সময় থেকে বর্তমান বিলটি পাস হওয়ার পর বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়া পর্যন্ত ওই সব জমির ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাবেন মূল মালিক৷ বর্তমান বিলে যে ক্ষতিপূরণের কথা আছে, সেইমতো ওই জমির দাম নির্ধারণ হবে ও তার ৫০ শতাংশ ওই কৃষককে দিতে বাধ্য থাকবেন নতুন মালিকরা৷ বামেরও অবশ্য ওই একই দাবি জানিয়েছিল৷

তৃণমূল ও বামেদের দাবি ছিল, একশো শতাংশ কৃষকের সম্মতি ছাড়া জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না, এমন ব্যবস্থা বিলে রাখতে হবে৷ কিন্তু তাতে জয়রাম রাজি হননি৷ আসলে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর মত হল, এমনিতেই জমি অধিগ্রহণ বিল যথেষ্ট কড়া হয়েছে৷ এর থেকে বেশি কড়া করলে শিল্পপতিরা আর বিনিয়োগ করবেন না৷ ডিএমকে নেতা টি আর বালুর আবার বক্তব্য, কেন্দ্র কেন জমি অধিগ্রহণ বিল পাশ করবে? এটা পুরোপুরি রাজ্যের ব্যাপার৷ তাই রাজ্যের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হোক৷

বিলে বলা হয়েছে, সরকার যদি নিজে জমি অধিগ্রহণ করে তা হলে প্রয়োজন হলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিলের ধারা ওই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে রূপায়ণ নাও করতে পারে৷ বিজেপি-র কিন্তু দাবি ছিল, জমির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ পরিবর্তন করা যাবে না৷ এই দাবিও মেনেছে সরকার৷ ভাগচাষীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টিও জয়রাম মেনে নিয়েছেন৷ কিন্তু অনেক জটিলতা দেখা দেবে বলে অনথিভুক্ত ভাগচাষীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি মানেননি৷

এ ছাড়াও বিজেপি যে দাবিগুলি করেছিল, তার মধ্যে আছে, জমি অধিগ্রহণের শর্ত নির্দিষ্ট করতে হবে৷ শিল্পপতি চাইলেই পুরো জমি অধিগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না৷ একটি স্বাধীন সংস্থা খতিয়ে দেখবে, কতটা জমি দরকার, ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি শিল্প সংস্থার মুনাফার একটা অংশও দিতে হবে কৃষকদের, একজনকে দু-বার উচ্ছেদ করা যাবে না, জমি অধিগ্রহণের সামাজিক প্রভাব কতটা পড়ছে তা দেখতে একটি কমিটি করতে হবে৷ সাংসদ, বিধায়ক ও এনজিও-র প্রতিনিধিরা সেই কমিটিতে থাকবেন, আংশিক জমি অধিগ্রহণ হলে, বাকিটা ইচ্ছেমতো ব্যবহার করার অধিকার কৃষকদের থাকবে, সব অধিগ্রহণ আইনকে এক করে আইনটি করতে হবে৷ এই সব দাবির অনেকগুলিই মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন জয়রাম৷

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধিই ছিলেন না৷ ছিলেন না বিএসপি ও অকালি দলের নেতারাও৷ সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের আনা প্রধান কিছু সংশোধনী মানা হয়নি বলে তাঁরা এই বিল মানছেন না এবং বিলটি নিয়ে ভোটাভুটি চাইবেন৷ সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব শেষের দিকে বৈঠকে আসেন৷ তিনি বলেন, তাঁর দল চূড়ান্ত সংশোধিত বিলটি দেখে সিদ্ধান্ত নেবে৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...