Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Wednesday, July 24, 2013

৩১শে জানুয়ারি, ১৯৭৯। মরিচঝাঁপির পাশের দ্বীপ কুমিরমারিতে সংঘর্ষ হল পুলিশবাহিনী এবং মরিচঝাঁপিতে বসত করতে আসা উদ্বাস্তুদের মধ্যে। গুলি চালাল পুলিশ, মানুষ মরল। সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা দুই, উদ্বাস্তু নেতা রাইহরণ বাড়ইয়ের হিসেবে ১৪ থেকে ১৭।

৩১শে জানুয়ারি, ১৯৭৯। মরিচঝাঁপির পাশের দ্বীপ কুমিরমারিতে সংঘর্ষ হল পুলিশবাহিনী এবং মরিচঝাঁপিতে বসত করতে আসা উদ্বাস্তুদের মধ্যে। গুলি চালাল পুলিশ, মানুষ মরল। সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা দুই, উদ্বাস্তু নেতা রাইহরণ বাড়ইয়ের হিসেবে ১৪ থেকে ১৭।

গুলিতে লোক মরেছিল। কিন্তু ঠিক কত জন আজ ৩২ বছর পরে তা বলা কঠিন। তবে তা ছাড়াও, মধ্য ভারতের উদ্বাস্তু ক্যাম্প ছেড়ে রওয়ানা হওয়ার থেকে শুরু করে সুন্দরবনে আসা এবং আবার ফিরে যাওয়া -- প্রায় দেড় বছরের এই ঘটনাক্রমে প্রাণ গিয়েছিল বহু শত মানুষের -- আনাহারে এবং রোগে।

In reference to:

मरीचझांपी की छवियां

पलाश विश्वास

http://antahasthal.blogspot.in/2013/07/blog-post_23.html?showComment=1374650967929#c2489757792328816166


এই আমাদের কথা কাটাকাটি, বোমাবন্দুক, তৃষ্ণার জল আর আলোঝিলমিল। পড়ুনঃ ঋতু, সম-যৌনতা, বৃহন্নলা এবং অতীত ও বর্তমানের রক্ষণশীল ভারতীয় সমাজ 

এই সুতোর পাতাগুলি [1] [2] [3] [4] [5] [6] [7]     এই পাতায় আছে1--30


           বিষয় : মরিচঝাঁপি 
          বিভাগ : অন্যান্য
          বিষয়টি শুরু করেছেন : Achintyarup Ray
          IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 01:08 AM




Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 01:15 AM

আজ থেকে বত্তিরিশ বছর আগে, অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি, সুন্দরবনের দ্বীপ মরিচঝাঁপিতে বসত করতে আসা উদ্বাস্তুদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল পুলিশের। এ বছরের ৩১শে জানুয়ারি ফুরোনোর আগে শুরু করতে পারলাম না এ টই, কি আর করা যাবে। ১লা ফেব্রুয়ারিতেই করছি :-(

(বলে রাখি, বইমেলায় প্রকাশিত গুরুর ক্রোড়পত্র "উচ্ছেদের সাতকাহন'-এ মরিচঝাঁপি নিয়ে একখানা লেখা ছাপা হয়েছে। সেখান থেকে দু-এক প্যারা টুকলি চালাচ্ছি এখানে।)



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 01:36 AM

বিধিসম্মত সতর্কীকরণ: বৈজয়ন্তবাবু, তাতিন এবং আরও কাউকে কাউকে জানাই, এই লেখায় আপনাদের জন্য নতুন কিছু নাই



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 01:57 AM

একটু রিক্যাপ:

বামফ্রণ্ট সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পর, ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে দলে দলে মানুষ মধ্য ভারতের উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলি ছেড়ে চলে আসতে শুরু করে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি ঘরছাড়া মানুষ এসে পৌঁছয় পশ্চিমবঙ্গে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই স্বপ্ন ছিল সুন্দরবনে গিয়ে বসত করা।

এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত সে কথা নতুন সরকার বুঝে উঠতে পেরেছিল কি পারেনি তা তর্কের বিষয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের ঘুম যখন ভাঙ্গল ততদিনে ৩২,০০০-এরও বেশি লোক ভারতীয় সুন্দরবনের একেবারে পূর্ব সীমানায় মরিচঝাঁপি নামের এক খালি দ্বীপে গিয়ে উঠেছে, সেখানে বাস করার আশায়।

শুরুর দিকে প্রশাসন চেষ্টা করেছিল উদ্বাস্তুদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে ফেরত পাঠাতে, কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় অন্য পথ নিল সরকার। ১৯৭৯ সালের ২৬শে জানুয়ারি দ্বীপের চারদিকে জারি করা হল ১৪৪ ধারা। কারণ হিসেবে বলা হল মরিচঝাঁপি "একটি সংরক্ষিত অরণ্যের অংশ'। পাশাপাশি শুরু হল "অবরোধ'।

৩১শে জানুয়ারি, ১৯৭৯। মরিচঝাঁপির পাশের দ্বীপ কুমিরমারিতে সংঘর্ষ হল পুলিশবাহিনী এবং মরিচঝাঁপিতে বসত করতে আসা উদ্বাস্তুদের মধ্যে। গুলি চালাল পুলিশ, মানুষ মরল। সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা দুই, উদ্বাস্তু নেতা রাইহরণ বাড়ইয়ের হিসেবে ১৪ থেকে ১৭।

গুলিতে লোক মরেছিল। কিন্তু ঠিক কত জন আজ ৩২ বছর পরে তা বলা কঠিন। তবে তা ছাড়াও, মধ্য ভারতের উদ্বাস্তু ক্যাম্প ছেড়ে রওয়ানা হওয়ার থেকে শুরু করে সুন্দরবনে আসা এবং আবার ফিরে যাওয়া -- প্রায় দেড় বছরের এই ঘটনাক্রমে প্রাণ গিয়েছিল বহু শত মানুষের -- আনাহারে এবং রোগে।

(সতর্কীকরণ: এই তথ্যগুলি টইয়ের পরবর্তী পোস্তোগুলিতে বারবার ঘুরে ফিরে আসবে)



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 02:13 AM

ঘরছাড়া মানুষ স্রোতের মুখে কুটোর মত চলে। রাজায়-মন্ত্রীতে কথা হয় গুজগুজ ফুসফুস, কাগজের ওপর কলমের আঁচড় পড়ে খসখস খসখস, আর নিমেষে দেশ হয় পরদেশ। জন্মের চেনা সূর্যসিঁড়ি বাড়ি রাতারাতি হয় পরের ঘর। তারপর তালাটুকু পর্যন্ত না লাগিয়ে দোর ভেজিয়ে রওয়ানা নতুন ঠিকানার খোঁজে। সঙ্গে কাচ্চাবাচ্চা, মাজা-ভাঙ্গা ঠাকুমা, নতুন বিয়ে হওয়া বৌ। ঘরের যেখানকার জিনিস যেমন, পড়ে রইল ঠিক সে রকম। যেন পাশের বাড়ি যাওয়ার জন্যে বেরোনো। পিছনে তাড়া করে আসে ভয়, আর স্রোতের টানে ভেসে চলে কুটো। এ দোর থেকে সে দোর, এ শহর, সে গ্রাম। ঘর ছেড়ে এসে ঠাঁই হয় ইস্টিশনে, টিনের-চাল ক্যাম্পে। সেপাই-সান্ত্রী এসে তাড়িয়ে নিয়ে যায় এ জায়গা থেকে সে জায়গা। ভাত চাইতে গেলে বলে দূর হ!



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.214          Date:01 Feb 2011 -- 02:52 AM

ঝাঁকে ঝাঁকে এসেছে ঘরছাড়ার দল। কেউ বাসা বেঁধেছে জবরদখল জমিতে, শহর কলকাতার আশেপাশে, কাউকে তুলে দেওয়া হয়েছে দণ্ডকারণ্যের ট্রেনে, কাউকে আবার আন্দামানের জাহাজে। নেই-ঠিকানা নিখুঁজির গলায় গান -- আমার ছেলে স্বরাজ চাইয়া গেছিল আন্দামানে, অহন গুষ্টিশুদ্ধা যাই আন্দামান স্বরাজের বিধানে। রাজনীতির সুতো কি ভালবাসার টান কে জানে, কখনো মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে এনেছে আন্দামানমুখো জাহাজ। কখনো বলা হয়েছে বাঙালীর ঠাঁই হবে বাংলার মাটিতে। সে ঠাঁই কেউ পেল, কেউ পেল না। যাদের যেতে হল দূর প্রদেশের অচেনা পথে, মন তাদের পড়ে রইল বাংলায়। বার বার ফিরতে চাইলেও, জায়গা মেলে নাই। আর রাজনীতি কি অন্য কোনো ব্যবসা যাদের জীবিকা, তাদের পাশার ছকে মিলে গেল নতুন ঘুঁটি -- পোয়া বারোর চাল।

১৯৭৮-এ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রণ্ট সরকার ক্ষমতায় আসার কিছু পরে, হাজার হাজার মানুষ দণ্ডকের বন্ধ্যা জমি ছেড়ে পাড়ি জমাল সুন্দরবনে। ক হপ্তার মধ্যে প্রায় দেড়লাখ ঘরছাড়া নতুন ঘরের আশায় চলল মরিচঝাঁপি দ্বীপের উদ্দেশ্যে। সরকার কিন্তু চাইল না এত লোকের ভার বইতে। অনেককে আটকানো হল পথে, কাউকে ফের পাঠানো হল দণ্ডকে, কেউ কেউ পেয়াদা-পুলিশের হাত এড়িয়ে ছড়িয়ে গেল এদিক-ওদিক গাঁয়ে গঞ্জে। তবুও, বিল-হাওড় আর ধানী ক্ষেতের স্বপ্ন চোখে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩২,০০০ মানুষ গিয়ে উঠল বাংলাদেশের গায়ে-লাগা মরিচঝাঁপিতে। সাল-তারিখের হিসেব যারা চায়, পুরোনো খাতা ঘাঁটলে তারা দেখতে পাবে, এসব ঘটেছিল ১৯৭৮-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে। বাংলা দেশে তখন বসন্ত।

সরকার কিন্তু ঠিক করল রিফুজিদের থাকতে দেওয়া হবে না এই দ্বীপে। বলা হল রিজার্ভ ফরেস্টের জায়গায় বাসা করা যাবে না। পাততাড়ি গুটিয়ে আবার ফিরতে হবে দণ্ডকবনে। কিন্তু একবার সেই রুখু জমি ছেড়ে যে এসেছে সে কি চায় আর সেখানে ফিরতে? ছিল কিছু লড়ুয়ে জোয়ানও। আর ছিল তারা, যাদের মনের কোনায় ছিল লাভের আশা। (দ্বীপের অনেক জমির পাট্টা বিলি করেছিল তারা, টাকা-পয়সাও নিয়েছিল তার জন্য। রিফুজিরা ছাড়াও তাই সুন্দরবনের অনেক দ্বীপ থেকে মানুষ গিয়ে কুঁড়ে বেঁধেছিল সেখানে, সস্তায় জমির আশায়।)

সংঘর্ষের পথ নিল সরকার। ১৯৭৯ সালের ২৬শে জানুয়ারি (কেউ কেউ বলেন ২৪শে তারিখে) মরিচঝাঁপি ঘিরে জারি করা হল ১৪৪ ধারা। সরস্বতীপুজোর তখন প্রায় এক হপ্তা বাকি।

লঞ্চে করে টহল দিত পুলিশ। দিনে রাতে। যাতে কেউ না ভাঙ্গতে পারে ১৪৪ ধারা। যাতে বাইরে থেকে কেউ না ঢুকতে পারে দ্বীপে। ফলে খাবার-দাবারের যোগানও গেল কমে। এমনিতেও খাদ্য সমস্যা ছিলই। পুলিশি ঘেরাও শুরু হওয়ার আগেও না খেয়ে মরেছে বেশ কিছু লোক। অবরোধের সময়ও মরল অনেকে।

অবরোধ শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক পরে, জানুয়ারির ৩১ তারিখে, সংঘর্ষ হল উদ্বাস্তু আর পুলিশবাহিনীর। ঘটনাস্থল মরিচঝাঁপির পাশের দ্বীপ কুমীরমারি। দুই দ্বীপের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে করানখালি নদী। গুলি চলল। লোক মরল। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা দুই। উদ্বাস্তুদের নেতা রাইহরণ বাড়ইয়ের হিসেবে ১৪ থেকে ১৭। এর আগেও, ১৯৭৮-এর সেপ্টেম্বর মাসে, আরও দুজন পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিল বলে বাড়ই লিখেছিলেন এক চিঠিতে। পরবর্তীকালে খবরের কাগজের রিপোর্টে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে এবং কিছু গবেষণাপত্রে কিন্তু মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে বহু গুণ। কেউ বলেছেন সব মিলিয়ে মরিচঝাঁপির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৭,০০০।

বত্রিশ বছর পেরিয়ে আসার পর এ হিসেব মেলানো খুব সহজ কাজ নয়। মাঝে মাঝে মনে হয় অসম্ভব বুঝি বা। তবে সরকারি হিসেবের দুই বা বেসরকারি গবেষকের ১৭,০০০ -- কোনোটাই হয়ত সত্যের খুব কাছাকাছি নয়।



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.242.1          Date:02 Feb 2011 -- 04:35 AM

মধ্য প্রদেশ এবং ওড়িশার ক্যাম্পগুলিতে যে উদ্বাস্তুদের পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা ওখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। তাঁদের মনের কোনো নিভৃত কোণায় একদিন না একদিন বাংলায় ফেরার একটা বাসনা রয়েই গিয়েছিল। আর রাজনৈতিক দলগুলিও -- প্রধানত বামপন্থীরা -- সে বাসনার চারায় সার-জল দিয়ে গেছে বার বার। কারণটা বোঝা খুব কঠিন নয়। এত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুর সমর্থন যে কোনো দলের পক্ষেই লোভনীয়।

১৯৬১ সালে, যখন তৎকালীন সরকার বাঙালী উদ্বাস্তুদের দণ্ডকারণ্যে পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন হাজার হাজার অনিচ্ছুক রিফিউজির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল অবিভক্ত সিপিআই। পার্টির নেতারা -- বিশেষ করে জ্যোতি বসু -- বলেছিলেন, এই উদ্বাস্তুদের কিছু অংশকে তো সুন্দরবনে পুনর্বাসন দেওয়া যেতে পারে। সুন্দরবনের হেড়োভাঙ্গা সেকেণ্ড স্কিম-এ তাঁদের বসতি করতে দেওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি দিয়েছিল পার্টি। মজার ব্যাপার হল, আঠার বছর পর এই জ্যোতি বসুর সরকারই কিন্তু ঐ একই রিফিউজিদের জোর করে ফেরত পাঠাল মধ্য ভারতে।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২৫,৮৪৯ টি উদ্বাস্তু পরিবারকে দণ্ডকারণ্যের বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল। বামপন্থী উদ্বাস্তু সংগঠন ইউনাইটেড সে¸ট্রাল রিফিউজি কাউন্সিল (ইউ সি আর সি)-এর নেতারা কিন্তু বরাবর যোগাযোগ রেখে গেছেন দণ্ডকের ঐ উদ্বাস্তুদের সঙ্গে। নেতাদের কেউ কেউ এমন আশ্বাসও দিয়েছেন যে একদিন না একদিন তাঁদের ঠিক ফিরিয়ে আনা হবে পশ্চিমবঙ্গে।



Name:  til           Mail:             Country:  

IP Address : 220.253.65.196          Date:05 Feb 2011 -- 03:11 AM

তিন দিন হয়ে গেল কোন আপডেট নেই! টই খোলার আগে দশ কিস্তি জমা দেবার নিয়ম করা উচিত, হা পিত্যেশ করে বসে আছি যে।



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.19          Date:09 Feb 2011 -- 03:46 AM

বামফ্রণ্ট সরকারা ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পর, ১৯৭৮-এর জানুয়ারিতে মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের মন্ত্রী রাম চ্যাটার্জি আর অল ইণ্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা অশোক ঘোষ মধ্য ভারতের উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলিতে যান। উদ্বাস্তুদের বেশ কয়েকটা সভায় তাঁরা বক্তৃতাও দেন। সে সমস্ত সভায় এই বামপন্থী নেতাদের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতির নেতা সতীশ মণ্ডল। সতীশবাবু এবং তাঁর সংগঠনই কিন্তু উদ্বাস্তুদের সুন্দরবনে নিয়ে আসার জন্য বিশেষভাবে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন।



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.19          Date:09 Feb 2011 -- 04:17 AM

কথা হচ্ছিল নির্মল ঢালির সঙ্গে। ওড়িশার মালকানগিরির বাসিন্দা নির্মল। দণ্ডক থেকে আর সকলের সঙ্গে এসেছিলেন মরিচঝাঁপিতে, সেখানে যে স্কুল তৈরি করা হয়েছিল নির্মল ছিলেন তার হেডমাস্টার। ১৯৭৯-তে মরিচঝাঁপি খালি করার সময় ভদ্রলোককে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ, কলকাতার জেলে রাখে মাসখানেক, তারপর ছাড়া পেয়ে আবার ফিরে যান দণ্ডকে।

"আটাত্তর সালে কলকাতার নেতারা গিয়ে আমাদের বলেছিলেন আমরা যদি বাংলায় ফিরে যাই তাহলে পাঁচ কোটি বাঙালী তাদের দশ কোটি হাত বাড়িয়ে আমাদের বুকে টেনে নেবে।' তিরিশ বছরেরও বেশি সময় পর সে "অভিযোগ' অস্বীকার করলেন অশোক ঘোষ। এই লেখকের প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট বললেন এরকম কথা তিনি কখনো বলেন নি। রামবাবু আজকে বেঁচে নেই, কিন্তু তিনিও নাকি পরবর্তীকালে জ্যোতিবাবুকে বলেছিলেন উদ্বাস্তুদের বাংলায় ফিরে আসার জন্য এরকম উদার আহ্বান তিনি জানান নি। সত্যতা যাচাই করা কঠিন। তবে এটা সত্যি যে অশোকবাবু এবং রামবাবুর উপস্থিতিতে ঐ সব সভামঞ্চ থেকেই সতীশ মণ্ডল বলেছিলেন, "ভারতবর্ষ কারও বাপের সম্পত্তি নয়, আমাদের যেখানে ইচ্ছা সেখানেই গিয়ে থাকব। আমরা সুন্দরবনে গিয়ে বসত করতে চাই। চলুন, আমরা সবাই বাংলায় ফিরে যাই। মরি যদি বাংলাতেই গিয়ে মরব।'

(হাতের কাছে সমস্ত বই এবং কাগজ নিয়ে বসিনি, আমার একটা পুরোনো ইংরিজি লেখা পাশে রেখে লিখছি, এবং কোটেশনগুলো তার থেকে বাংলা করা। ফলে একটু ইদিক-উদিক হতে পারে।)

লক্ষ্য করার বিষয়, কলকাতার নেতারা যদি উদ্বাস্তুদের বাংলায় ফিরে আসতে না-ও বলে থাকেন, সতীশবাবু যখন এ কথা বললেন, তাঁরা কিন্তু সে বক্তব্যের কোনো প্রতিবাদও করেন নি।



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.246.19          Date:09 Feb 2011 -- 04:53 AM

সাংবাদিক তুষার ভট্টাচার্য একটি ডকুমেণ্টারি ফিল্ম বানিয়েছিলেন। নাম: "মরিচঝাঁপি ১৯৭৮-৭৯, আক্রান্ত মানবিকতা'। সেখানে দেখলাম প্রাক্তন মন্ত্রী এবং আর এস পি নেতা দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, "কিছু বামপন্থী নেতা দণ্ডকারণ্যে গিয়ে সেখানকার উদ্বাস্তুদের বাংলায় ফিরে আসতে বলেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন আপনারা আসুন, আমরা সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি দ্বীপে আপনাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেব।'

একটা কথা মাঝখানে বলে রাখি, নির্মল ঢালির সঙ্গে আমার যখন কথা হয়, উনি বলেছিলেন ঐ "পাঁচকোটি বাঙালীর দশকোটি হাত আপনাদের বুকে টেনে নেবে' কথাটি ছিল অশোক ঘোষের। কিন্তু তুষারবাবুর ডকুমেণ্টারিতে দেখছি উদ্বাস্তু নেতা রাধাকান্ত বিশ্বাস বলছেন ঐ কথা বলেছিলেন আমাদের এখনকার মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দ।

সন্দেহ নিরসনের জন্য দেখা করি কিরণময়বাবুর সঙ্গে। মন্ত্রী বললেন এরকম কথা উনি কখনই বলেন নি। বললেন, "আমি দণ্ডকারণ্যে গিয়েছিলাম রামবাবুর সঙ্গে। রামবাবু উদ্বাস্তুদের জিগ্যেস করলেন, আপনারা কোথায় যেতে চান? ওঁরা বললেন আমরা মরিচঝাঁপিতে গিয়ে থাকতে চাই। রামবাবু বললেন, ঠিক আছে। তারপরেই ওঁরা সুন্দরবনে চলে এলেন।'

(উল্লেখ্য, কিরণময়বাবু আর রামবাবু যখন দণ্ডকারণ্যে যান, অশোক ঘোষ কিন্তু সেবার তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না।)

সমাপতন: অশোকবাবু এবং রামবাবু দণ্ডক থেকে ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই উদ্বাস্তুরা সেখানকার ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসতে শুরু করল। হাজারে হাজারে মানুষ, যার যেটুকু সম্বল ছিল সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হয়ে পড়ল সুন্দরবনের পথে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ১৬০,০০০ দণ্ডকত্যাগী উদ্বাস্তু এসে পৌঁছল পশ্চিমবঙ্গে। এটা সরকারি হিসেব।



Name:  siki           Mail:             Country:  

IP Address : 123.242.248.130          Date:09 Feb 2011 -- 10:21 AM

অচিন্ত্য, মন্তব্য করছি না বলে এমন কিন্তু নয় যে এই সুতোটা পড়ছি না। বেশ মন দিয়েই পড়ছি।

আমার হাতের কাছে একটি প্রামাণ্য ডকুমেন্টারি বই আছে, মানে অফিসে নয়, বাড়িতে। আমি বরং সময় করে কিছু কিছু রিপোর্ট তুলে দেব সেখান থেকে, সেই সময়কার। বিধানসভায় জ্যোতি বসুর বক্তৃতা, ত্‌ৎকালীন তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, সেই সময়ে সুনীল গাঙ্গুলির প্রতিক্রিয়া ... শঙ্খ ঘোষের কবিতা ... 



Name:  d            Mail:             Country:  

IP Address : 14.99.122.217          Date:09 Feb 2011 -- 03:12 PM

শমীক, 'মরিচঝাঁপি ছিন্ন দেশ ছিন্ন ইতিহাস' এর কথা বলছ কি?
অচিনবাবু যাঁদের কথা লিখছেন (নির্মলকান্তি ঢালি ইত্যাদি) তাঁদের স্টেটমেন্ট আছে মধুময় পাল সম্পাদিত পরের বইটায় 'নিজের কথায় মরিচঝাঁপি'




Name:  Samik           Mail:             Country:  

IP Address : 123.242.248.130          Date:09 Feb 2011 -- 03:26 PM

বোধ হয় সেইটাই। সঠিক নামটা মনে নেই।



Name:  Kaju           Mail:             Country:  

IP Address : 121.244.209.245          Date:09 Feb 2011 -- 04:26 PM

শঙ্খ ঘোষের কবিতাটা একটু এখানে দিতে পারবে/ন কেউ? 'কবিতার মুহূর্ত' পড়তে পড়তে দেখছি, ওনার বেশ কয়েকটি এমন লেখা আছে, যার উৎস সমাজের বা তৎকালীন সময়ের এক একটি জ্বলন্ত বাস্তবতা। মরিচঝাঁপির সেইসব 'গলার কাছে পাথর বাঁধা বস্তামানুষ'-দের কথা কোন কবিতায় আছে, জানার জন্যে 'আগ্রহ মোর অধীর অতি'। :-)



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 121.241.214.34          Date:09 Feb 2011 -- 05:30 PM

শমীক, বইয়ের অভাব নেই। প্রচুর বই এই বিষয় নিয়ে বাজারে আছে, আমার কাছেও আছে। তবে সব বইয়ের সব লেখা, এমন কি সব ইণ্টারভিউ, সব সময় প্রামাণ্য বলে মনে করার কারণ আছে বলে মনে হয় না। (ডকুমেণ্টগুলো, যেমন জ্যোতিবাবুর বক্তৃতা, বুদ্ধবাবুর বক্তৃতা, সুনীলের লেখা ইত্যাদির কথা বলছি না।)
এই লেখা শেষ হওয়ার পর এসব নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলা যেতে পারে। (কিন্তু গোয়িং বাই মাই লেখার স্পিড ... যাক্‌গে)



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 122.252.231.10          Date:09 Feb 2011 -- 08:07 PM

এইটা খুঁজছ?

"ট্রেনের থেকে ঝাঁপ দিয়েছ ধান শিয়রে।
গলার কাছে পাথরবাঁধা বস্তামানুষ।
মাটির থেকে উঠছিল তার মাতৃভূমি
বুকের নীচে রইলো বিঁধে বৃহস্পতি।'



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 112.133.206.18          Date:09 Feb 2011 -- 08:18 PM

সরি। পুরোটা লিখিনি আগের বার। পোস্ট করছি পুরো কবিতাটা।



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 112.133.206.18          Date:09 Feb 2011 -- 08:25 PM

ট্রেনের থেকে ঝাঁপ দিয়েছে ধানশিয়রে
গলার কাছে পাথর বাঁধা বস্তামানুষ

মাটির থেকে উঠছিল তার মাতৃভূমি
বুকের নিচে রইল বিঁধে বৃহস্পতি

ইচ্ছে ছিল তমালছোঁয়া দু:খ ছিল
কিন্তু হঠাৎ টান দিয়েছে উলটোরথে

এসেছিলাম আমরা সবাই এসেছিলাম
বলতে বলতে ঝাঁপ দিল তাই অন্ধকারে

কামরাজোড়া অন্য সবাই চমকে উঠে
অল্পমুখের কৌতূহলে দেখল শুধু

ছন্দ আছে আসাযাওয়ার ছন্দ আছে
আর তা ছাড়া ধ্বংস তো নয় বরং এ যে

সবার কাছে লাথি খাবার পদ্মবুকে
দেশ নেই যার এইভাবে দেশ খুঁজে বেড়ায়

উলটোরথের ভিখিরি দেশ খুঁজে বেড়ায়
গলায় পাথর বুকের নিচে বৃহস্পতি।

(উলটোরথ/শঙ্খ ঘোষ)



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 112.133.206.18          Date:09 Feb 2011 -- 08:30 PM

তুমি বললে মানবতা
আমি বললে পাপ
বন্ধ করে দিয়েছে দেশ
সমস্ত তার ঝাঁপ।
তুমি বললে হিটলারি-ও
জনপ্রেমে ভরা
আমি বললে গজদন্ত
তুমি বললে ছড়া।

তুমি বললে বাঁচার দাবি
আমি বললে ছুতো
হামলে কেন এল সবাই
দিব্যি খেত শুত।
হোক না জীবন শুকনো খরা
বন্ধ্যা বা নিষ্ফলা।
আমি বললে সেপাই দিয়ে
উপড়ে নেবে গলা।

তুমি বললে দণ্ডকে নয়
আপন ভূমিই চাই
আমি বললে ভণ্ড, কেবল
লোক খেপাবার চাঁই।
চোখের সামনে ধুঁকলে মানুষ
উড়িয়ে দেবে টিয়া
তুমি বললে বিপ্লব, আর
আমি প্রতিক্রিয়া।

(তুমি আর নেই সে তুমি/শঙ্খ ঘোষ)



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 112.133.206.18          Date:09 Feb 2011 -- 08:37 PM

                এ-দুয়োরে যায় : দূর-দূর!
                ও-দুয়োরে যায় : ছেই-ছেই!

সুয়োরানী লো সুয়োরানী তোর
রাজ্যে দিল হানা
পাথরচাপা কপাল যার সেই
ঘুঁটেকুড়ুনির ছনা

ঘেন্নায় মরি, ছি!

                মন্ত্রী বলল, দেখছি
                কোটাল বলল, দেখছি

ঢোল ডগরে পড়ে কাঠি
রক্তে রাঙা হয় মাটি
কাড়ে না কেউ রা
ভালোমানুষের ছা

সাতটি চাঁপা সাতটি গাছে
পারুল বোন রইল কাছে

দণ্ডকে যায় ধর্মরাজার
কলের ডুলি
এই গল্পে ভর্তি ক'রে
ঠাকুরমার ঝুলি।।

(ঠাকুরমার ঝুলি/সুভাষ মুখোপাধ্যায়)




Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.242.108          Date:10 Feb 2011 -- 03:47 AM

মরিচঝাঁপি নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করছি বেশ কিছুদিন, কিন্তু কিছুতেই শান্ত মস্তিষ্কে বসে লিখতে পারি না। এ গল্প যতটা সহজ মনে হয় ঠিক ততটা সহজ নয় হয়ত। খোঁজ করতে করতে মনে হয়েছে বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী এবং ব্যক্তির বিভিন্ন ইন্টারেস্ট বিভিন্নভাবে কাজ করেছিল মরিচঝাঁপির ঘটনায়। সে ইণ্টারেস্ট কখনো দলগত বা গোষ্ঠীগত, কখনো এমন কি ব্যক্তিগত। কিছু মানুষের লাভের অঙ্কের, উচ্চাকাঙ্ক্ষার এবং লোভের খেলার দাম দিতে হয়েছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে। কথাগুলো মনে হলেই -- অশোক মিত্তির মশাই যেমন লিখেছিলেন -- ন্যক্কারে আমার শ্লেষ্মা ভরে ওঠে। মস্তিষ্ক ঠিক মত কাজ করতে চায় না আর



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.242.108          Date:10 Feb 2011 -- 04:15 AM

নির্মল ঢালি বলেছিলেন অশোক ঘোষ এবং রাম চ্যাটার্জী মধ্য ভারতের বিভিন্ন উদ্বাস্তু ক্যাম্প এলাকায় বেশ কয়েকটি মিটিং করেন সে বার -- ১৯৭৮-এর জানুয়ারি মাসের ১৬ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত। মধুময় পালের বইয়ে সতীশ মণ্ডলের যে চিঠি ছাপা হয়েছে, তাতেও দেখছি লেখা:
"আপনারা জানেন যে গত ১৬/১/৭৮ তাং উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতির নেতৃত্বে প: বাংলা বামফ্রন্ট সরকারের স্বরাষ্ট্র (অসামরিক প্রতিরক্ষা) বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী মাননীয় শ্রী রাম চ্যাটার্জী ও বামফ্রন্ট সরকারের উপদেষ্টা কমিটির সম্পাদক ও ফরোয়ার্ড ব্লকের (প: বাংলা) সাধারণ সম্পাদক মাননীয় শ্রী অশোক ঘোষ বহির্বাংলায় বাঙালী উদ্বাস্তুদের অবস্থা সরেজমিনে তদন্ত ও স্বচক্ষে অবলোকন করার জন্য মানা সহ দণ্ডকারণ্য ও অন্যান্য এলাকায় পরিদর্শনে আসেন।
"উক্ত নেতৃবৃন্দ ১৬/১/৭৮ তাং থেকে ১৯/১/৭৮ তাং পর্যন্ত বিরামহীনভাবে মধ্যপ্রদেশের পারালকোট জোন, মহারাষ্ট্রের চান্দা (চন্দ্রপুর), অন্ধ্রপ্রদেশের কাগজনগর প্রভৃতি অঞ্চলের মর্মান্তিক দু:খপূর্ণ কাহিনী স্বকর্ণে শ্রবণ করেছেন এবং হৃদয় বিদারক করুণ অবস্থা স্বচক্ষে পরিদর্শন করেন এবং চারটি জনসভায় তাঁদের উল্লেখযোগ্য বক্তব্য রেখে ১৯/১/৭৮ তাং বোম্বে-হাওড়া মেলযোগে কলকাতা অভিমুখে যাত্রা করেন।'



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.242.108          Date:10 Feb 2011 -- 04:37 AM

তাহলে তিন দিনে তিন রাজ্যে মোট চারটি জনসভা করলেন রামবাবু আর অশোকবাবু। শুধু তাতেই শুরু হয়ে গেল এত বড় এক্সোডাস? সন্দেহ হয়। মনে হয় দীর্ঘদিনের সুচিন্তিত পরিকল্পনা ছাড়া কি এরকম ঘটতে পারে? কাদের সে পরিকল্পনা? সুন্দরবনের কথা না হয় বহু বছর ধরে বলা হচ্ছে, কিন্তু কেন মরিচঝাঁপি? অন্য কোনো দ্বীপ কেন নয়?



Name:  Kaju           Mail:             Country:  

IP Address : 121.244.209.245          Date:10 Feb 2011 -- 10:21 AM

অর্পণকে ধন্য প্লাস প্লাস। :-)

হ্যাঁ, 'উল্টোরথ'-টা পড়েছি আগে। এর উৎস-ও মরিচঝাঁপি বলেই মনে হয় পড়তে গেলে, পুনর্বাসনের পরে নির্মমভাবে উচ্ছেদ, শেয়ালদা স্টেশনে উদ্বাস্তুর গিজগিজে ভিড়, ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেয়া এক কিশোরীর। দ্বিতীয়টা বোধায় প্রত্যক্ষভাবে মরিচঝাঁপির ঘটনায় অনুপ্রাণিত। কারণ দণ্ডকের উল্লেখ আছে।



Name:  siki           Mail:             Country:  

IP Address : 123.242.248.130          Date:10 Feb 2011 -- 10:34 AM

হুঁ, বইটা মরিচঝাঁপি, ছিন্ন দেশ, ছিন্ন ইতিহাস। যেটা আমার কাছে আছে। সম্পাদনা মধুময় পাল। বোধ হয় অর্পণও ঐ একই বই থেকেই কবিতাগুলো নামাল।

অচিন্ত্যর নিবন্ধ এর পর থেকে শুরু হচ্ছে। এগোক।



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 112.133.206.18          Date:10 Feb 2011 -- 10:39 AM

হ্যাঁ, আমি ওখান থেকেই টুকেছি। কাল অনেকটা ফিরে পড়লামও।

অচিন্ত্যর পরের কিস্তির জন্য প্রতীক্ষারত।



Name:  Arpan           Mail:             Country:  

IP Address : 122.252.231.10          Date:10 Feb 2011 -- 10:40 AM

উলটোরথের কবিতা নিয়ে শঙ্খবাবুর একটি নাতিদীর্ঘ লেখা বইটিতে আছে। অনুষ্টুপ পত্রিকায় বেরিয়েছিল বোধহয় ৮৭ সালে।



Name:  Kaju           Mail:             Country:  

IP Address : 121.244.209.245          Date:10 Feb 2011 -- 11:10 AM

'উল্টোরথ'-এর উৎস নিয়ে তো? হ্যাঁ, সেই লেখাটাই তো 'কবিতার মুহূর্ত'-তে আছে। :-)



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.245.154          Date:11 Feb 2011 -- 04:25 AM

উদ্বাস্তুরা মরিচঝাঁপিতে এসেছিল কবে? ১৯৭৮-এ, বামফ্রণ্ট সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পর -- শুরুতেই লিখেছি সে কথা। কিন্তু যে নেতারা তাদের নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা প্রথম কবে পা রেখেছিলেন মরিচঝাঁপি দ্বীপে? আরও তিন বছর আগে -- ১৯৭৫ সালে।

সেবার উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতির কয়েকজন সদস্য সতীশ মণ্ডলের নেতৃত্বে ঘুরে দেখতে আসেন সুন্দরবন অঞ্চল -- দেখতে আসেন কোন্‌ দ্বীপে বসত তৈরি করা যায় রিফিউজিদের জন্য। কয়েকটি জায়গা ঘুরে অবশেষে বাংলাদেশের প্রায় গায়ে-লাগা মরিচঝাঁপি দ্বীপটিই পছন্দ হল তাঁদের।

তার কয়েকদিন পর দণ্ডকের উদ্বাস্তুদের উৎসাহিত করে সেখানকার ক্যাম্প ছেড়ে সদলবলে পা বাড়ানো হল সুন্দরবনের পথে। কিন্তু সে পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল তখনকার কংগ্রেসী সরকার। মাঝপথ থেকেই রিফিউজিদের ফিরে যেতে হল দণ্ডকে। গ্রেফতার হলেন কয়েকজন উদ্বাস্তু নেতা।



Name:  achintyarup           Mail:             Country:  

IP Address : 59.93.245.154          Date:11 Feb 2011 -- 04:53 AM

১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে, ফের যখন মধ্য ভারতের ক্যাম্প ছেড়ে দলে দলে মানুষ রওয়ানা হল সুন্দরবনের দিকে, অবস্থা খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটা সর্বদলীয় টিম পাঠানো হল দণ্ডকে। কয়েকজন মন্ত্রীও ছিলেন সেই টিমে। সেই সময় দণ্ডকারণ্য থেকে ফাইল করা কয়েকটি খবরের কাগজের রিপোর্ট তুলে দিচ্ছি:

"…the refrain (of the refugees is) that 'we want to die in West Bengal'. But the question is whether the conviction has been created by some instigating agencies as the situation does not seem to justify such a feeling…

"The economic grievances listed by the refugees at every village the delegation visited were low yield of the land and unremunerative prices for the produce... Interestingly, the grievances listed in the memoranda received in far flung villages were all couched in the same language and even the grievances listed in the same order…

"At different places refugees did not deny that people had urged them to leave for West Bengal." – The Statesman, March 27, 1978



"Though many people talked of outside instigation, none identified the persons. The situation is intriguing and after a hectic tour of the area they (the all-party team) were convinced that there was an instigating group who wanted the settlers to leave. Though none of the ministers identified the group, they so strongly criticised the Udbastu Unnayansil Samiti that there was no doubt who the instigators were". – The Statesman, March 26, 1978
 

২রা এপ্রিল, ১৯৭৮। আনন্দবাজার পত্রিকা খবর:

(কোটেশনের মধ্যে লিখছি, কিন্তু এরও অরিজিনাল বাংলা কপিটি এখন সঙ্গে নেই, ফলে ইংরিজি থেকে অনুবাদ করতে হচ্ছে)

"সরকারী হিসেব মত রায়পুর স্টেশন ও সংলগ্ন অঞ্চলে এসে জড়ো হয়েছেন প্রায় ১০,০০০ ক্যাম্পত্যাগী মানুষ। তাঁদের সকলের মুখে একই কথা, আমরা বাংলায় গিয়ে মরতে চাই। রেলের অফিসাররা জানালেন গত চার-পাঁচ দিনে প্রায় ৩,০০০ কলকাতার টিকিট বিক্রি হয়েছে ... বেশ কয়েকজন উদ্বাস্তুর সঙ্গে কথা বললাম আমি। তাঁদের প্রত্যেকেই কলকাতায় যেতে চান এবং প্রত্যেকের কাছেই টিকিট আছে। এক একটা টিকিটের দাম ২৫ টাকা ৩৬ পয়সা। কোথা থেকে টিকিটের পয়সা এল জানতে চাইলে মুখ খুলছেন না কেউ।'

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...