Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Monday, August 26, 2013

পাহাড় ছাড়তে হুড়োহুড়ি, সংশয় আন্দোলনে

পাহাড় ছাড়তে হুড়োহুড়ি, সংশয় আন্দোলনে

পাহাড় ছাড়তে হুড়োহুড়ি, সংশয় আন্দোলনে
সঞ্জয় চক্রবর্তী

দার্জিলিং: বাসে ভিড় দেখে শঙ্কিত গোর্খাল্যান্ডের দাবিদাররা৷ উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস দেখলেই হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে৷ দলে দলে পাহাড় ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ৷ চরম খাদ্য সঙ্কটে কেউ সমতলে গিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ কেউ আবার রোজগারের আশায় নেমে যাচ্ছেন শিলিগুড়িতে৷ লাগাতার বন্ধ ক্রমেই সহ্যসীমার বাইরে চলে যাওয়ায় পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করছেন সাধারণ মানুষ৷

এতে দিশেহারা মোর্চা নেতৃত্ব আন্দোলনের রাশ তুলে দিচ্ছেন দলের ছাত্র শাখার হাতে৷ ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররাই মঙ্গলবার থেকে 'ঘর বাহার জনতা'র কর্মসূচি সফল করার দায়িত্ব নেবে৷ গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে রবিবার আবার ধাক্কা খেয়েছে মোর্চা৷ এ দিন ওই কমিটি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ সিপিআরএম আলাদা ভাবে মিছিল করেছে৷ প্রকাশ্যে না-বললেও বন্ধে বিরতি চাইছে ওই কমিটির অধিকাংশ শরিক৷

পরিস্থিতি দেখে পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলনের 'ন্যাচারাল ডেথ' হতে চলেছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব৷ যারা পাহাড় ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা সরকার দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আসবেনই বলে এ দিনও গৌতমবাবু ঘোষণা করলেও নির্দিষ্ট দিন জানাননি৷ কোথায় লেপচাদের দেওয়া সংবর্ধনা গ্রহণ করবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়, তাও জানাননি তিনি৷

এ দিকে সংবর্ধনা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইন্ডিজেনাস লেপচা কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পুর্ব ঘোষিত বৈঠক এ দিন হয়নি৷ শনিবার বৈঠক অসম্পূর্ণ ছিল বলে জানিয়ে সংগঠনের সম্পাদক ভূপেন্দ্র লেপচা বলেছিলেন, রবিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ কিন্ত্ত এ দিন বৈঠকটিই হয়নি৷ ভূপেন্দ্রবাবুকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি৷ তাঁকে মোবাইলেও ধরা যায়নি৷ এনটি লেপচা, লোপসাং লেপচা প্রমুখ লেপচা নেতাদের মোবাইল বেজে গিয়েছে৷ তাঁরা সাড়া দেননি৷ ফলে তাঁরা আদৌ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷

পাহাড় সচল প্রমাণ করার জন্য প্রায় দশ দিন ধরে ওই এলাকায় বাস চালাচ্ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম৷ প্রথমে ফাঁকা চললেও গত দু'দিন ধরে প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে বাসগুলিতে৷ বিশেষ করে শিলিগুড়িগামী বাসগুলিতে ঝুলে ঝুলে, এমনকী ছাদে চড়েও পাহাড়ের মানুষকে সমতলে যেতে দেখা যাচ্ছে৷ তাঁরা মুখ খুলতে সাহস না-পেলেও অন্তরঙ্গ আলোচনায় জানিয়েছেন, ঘরে খাবার নেই৷ রোজগারের উপায় নেই৷ তাই পাহাড় ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোনও পথ নেই৷

কিন্ত্ত বিরক্তিতে সাধারণ মানুষের পাহাড় ছাড়ার কথা মানতে রাজি নন মোর্চা নেতারা৷ যদিও দলের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী কালিম্পংয়ে এ দিন এক সভায় পাহাড় ছেড়ে না-যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন৷ আন্দোলনের প্রয়োজনেই সবার পাহাড়ে থাকা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ তবে তাঁর দাবি, যারা পাহাড় ছাড়ছেন, তাঁরা মূলত শিলিগুড়িরই বাসিন্দা৷ জিএনএলএফের আন্দোলনের সময় ১৯৮৪-তেও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল৷ কার্শিয়াং, মিরিক থেকে অনেকে হেঁটেই শিলিগুড়ি চলে যাচ্ছেন৷ এতে আবার সমতলে যাতে উত্তেজনা না-ছড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে প্রশাসন৷

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ দিন বলেন, 'দিনের পর দিন এমন অযৌক্তিক বনধের আর কোনও পরিণতি হতে পারে না৷ শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে কমিটি গড়ে ঘরছাড়াদের দিকে নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ 'ঘর বাহার জনতা'র নামে বন্ধে অটল মোর্চা অবশ্য এ সব নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়৷ রবিবার দলের ছাত্র ও যুব শাখার সঙ্গে পাতলেবাসে বৈঠক করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং৷ মঙ্গলবার থেকে টানা পাঁচদিন পাহাড়ে ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্ররা মিছিল করবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি৷

গোর্খা লিগ আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ এ দিন জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি ছাড়ল রাষ্ট্রীয় গোর্খা কংগ্রেস৷ দলের সভাপতি নিমা তামাং বলেন, 'আমরা চাই সিকিমের সঙ্গে দার্জিলিং যুক্ত হোক৷ তিন্ত্ত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে থেকে তা সম্ভব করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না৷ তাই আমরা সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কমিটির আহ্বায়ককে জানিয়ে দিয়েছি৷' আহ্বায়ক এনোস দাস প্রধান ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন৷ তিনি বলেন, '৩০ অগস্ট কমিটির পরবর্তী বৈঠক ডাকা হয়েছে৷' কমিটি সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বন্ধের একতরফা ডাক দেওয়ার জন্য মোর্চাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...