আবার গোডসে সময়ের বিরুদ্ধে যাদবপুরের সেই ছাত্ররা আমরণ অনশনে, আবার হোক কলরব
ইহার পরেও বহাল তবিয়তে কলন্কিত উপাচার্য।
পলাশ বিশ্বাস
গান্ধীর হত্যাকারির মুর্তি বসানো হচ্ছে দিল্লীর ত্রিশ জানুযারি রোডে যেখানে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল,তার ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে মন্দির মার্গ অবস্থিত হিন্দু মহাসভার অফিসে এবং একশো শতাংশের হিন্দুত্বের পতাকাবাহকদের দাবি,এর জন্য সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই৷সিপাই বিদ্রোহের শহর মিরাটে গোডসে মন্দির তৈরি হল বলে৷অথচ বিডম্বনা হল এই সেই গান্ধীর সত্যাগ্রহই এখনো প্রতিবাদের ভাষা৷মণিপুরের লৌহমানবী টানা চোদ্দো বছর আফসা আইন বাতিলের দাবিতে এখনো অনশনে৷রাজঘাটে হিন্দুত্বকরণের বিরুদ্ধে অনশন চলছে৷আবার যাদবপুরেও গোডসে সময়ের বিরুদ্ধ সেই ছাত্ররা আমরণ অনশনে,যারা কোলকাতার রাজপথে শ্লোগান তুলেছে এবং ঢাকায় তাঁর প্রতিধ্বনি হয়েছে,সঙঘ জামাত ভাই ভাই,দুইয়ের এক দড়িতে ফাঁসি চাই৷
মনে রাখা দরকার,নাথুরাম উগ্র হিন্দুবাদী আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল হিন্দু মহাসভা'র সূত্রে। বিভিন্ন বিষয় উপলক্ষে গান্ধীজীর উপবাস করার কৌশলকে নাথুরাম অপকৌশল হিসাবে বিবেচনা করতে শুরু করে। একই সাথে হিন্দু মহাসভার অন্যান্য সভ্যদের মতো সেও বিশ্বাস করতো যে, গান্ধীজী মুসলমানদের স্বার্থকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষ বিভাজিত হওয়ার জন্য এরা গান্ধীজীকেই দায়ী করে। সে গান্ধীজীর অহিংস নীতির ঘোর বিরোধী ছিল। তার মতে- অহিংস নীতির ফলে হিন্দুরা ক্রমান্বয়ে তাদের আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলছে। এই কারণেই সে গান্ধীজীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি তারিখে, দিল্লীর বিরলা ভবনে (বিরলা হাউস) সান্ধ্যা প্রার্থনাসভায় গান্ধীজী শান্তির বাণী প্রচারের জন্য উপস্থিত হওয়ার প্রাক্কালে, নাথুরাম গান্ধীজীকে খুব নিকট থেকে তিনবার গুলি করে। এবং গান্ধীজী ঘটনাস্থলেই মৃত্যবরণ করেন।
এরপর নাথুরামকে গ্রেফতার করা হয়। এবং বিচারে মৃত্যদণ্ড হয়, ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বরে। তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরী করা হয় ১৫ নভেম্বরে।
মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গোডসের নামে মন্দির প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে হিন্দু মহাসভার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে স্থানীয় গ্রামবাসী।
রোববার উত্তর প্রদেশের মীরুত জেলার ২০টি গ্রামের অধিবাসী রোববার মন্দির প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার প্রতিবাদে এক র্যা লী করে সেখানকার মানুষ। নবনির্মান সেনার নেতৃত্বে এই র্যা লী অনুষ্ঠিত হয়। নবনির্মান সেনা প্রধান অমিত জানি এদিন মন্দির প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন।
সাধারণ সমাজ মহাত্মা গান্ধীর বিরুদ্ধে মহাসভার 'প্রোপাগান্ডা' প্রতিরোধ এবং তাঁর হত্যাকারীর পক্ষে অবস্থান প্রতিহত করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। গ্রামবাসী এবিষয়ে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত যাবে বলে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।
অমিত দ্য হিন্দুকে বলেন, গোডসে মন্দির প্রতিষ্ঠা হলে তা হবে ভারতের আদর্শের অপমান। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। এই ইস্যুতে সারাদেশের মানুষকে একত্রিত হয়ে প্রতিহত করার আহ্বান জানান। জানুয়ারির ১১ তারিখে তিনি এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো কথা বলেননি প্রসঙ্গে অমিত বলেন, আমরা শুধু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এই বিষয়ে অভিযোগই জানাবো না, সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে অনুরোধ জানাবো।
ঘটনা হল,বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর নগর কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না এবার ছাত্র আন্দোলন ভিত কাঁপিয়ে দিচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত 'হোক কলরব' ছাত্রআন্দোলন । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ভারতের কলকাতা শহরের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে । সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে তার উপর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ সেই অভিযোগের যথাযথ মর্যাদা দেননি বলে জানা যায়। কতৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচারের দাবি নিয়ে প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্রছাত্রী। এরপর তাদের এই ধারাবাহিক বিক্ষোভ ও অবস্থানের খবর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায়, যেখানে প্রতিবাদজনিত যাবতীয় সংবাদ পর্যায়ক্রমিক ভাবে সম্প্রচারিত হতে থাকে #হোককলরব (#hokkolorob) হ্যাশট্যাগের সাথে। সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখ পর্যন্ত ঘটতে থাকা ধারাবাহিক বিক্ষোভের পরও সমঝোতার সিদ্ধান্তে না-পৌঁছনো গেলে উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু অধ্যাপককে ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের দল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির ঘটনার প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ প্রবেশে অনুমতি দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে ভারতের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
ইহার পরেও বহাল তবিয়তে কলন্কিত উপাচার্য।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'হোক কলরব'. গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশি তাণ্ডবের জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার প্রতিবাদে প্রায় তিন মাস ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। গত ২৮ অগাস্ট এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন এখন নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে শ্লীলতাহানির সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত বিচারের দাবিতে ছাত্রছাত্রী মাঠে নামলেও বর্তমানে আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অপসারণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ইতিমধ্যে একদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেট দিয়ে মিছিলটা বেরোল। স্লোগানে যেন হোক কলরব-এর সুর, চুমু চুমু চুমু চাই, চুমু খেয়ে বাঁচতে চাই। আমার দেহ, আমার মন, দূর হটো রাজশাসন। গেরুয়া সন্ত্রাস মানছি না, মানব না। কয়েকশো পড়ুয়ার স্লোগান-শাউটিং শুনে অটো-বাস-ট্যাক্সির যাত্রীরা রীতিমতো কৌতূহলী হয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখছেন।
উল্লেখ্য,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শাসকদলের অন্দরে জটিলতা ক্রমেই বাড়ছে৷ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সমস্যা মিটে যাবে বলে দাবি করছেন বটে, কিন্ত্ত নেতা-মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় স্পষ্ট, আসলে সরকারই দিশাহীনতায় ভুগছে৷
ইহার পরেও বহাল তবিয়তে কলন্কিত উপাচার্য।
ইতিমধ্য অমিত শাহের বঙ্গ বিজয় অভিযানের পক্ষে দুঃসংবাদ,আজকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী,পশ্চিমবঙ্গকে দলতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে বাম ঐক্যকে সুদৃঢ় করার আহ্বান জানালেন লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চ্যাটার্জি৷ দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর এই প্রথম সি পি আই এম পার্টির ডাকা কোনও সভায় তিনি যোগ দিলেন৷ গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের হাতে প্রহূত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্হ থাকার পর সম্প্রতি মারা যান জেলার প্রবীণ সি পি এম নেতা হীরেন্দ্রনাথ ঘোষ৷ তাঁর স্মরণসভাতেই বক্তা হিসেবে ডাকা হয়েছিল সোমনাথবাবুকে৷ প্রাক্তন এই সি পি এম নেতা অসুস্হতার জন্য মঞ্চে উঠতে পারেননি৷ শ্রোতাদের আসনে বসেই তাঁর দেওয়া বক্তব্য বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করে৷ চাঁচাছোলা ভাষায় নাম না করে রাজ্য সরকার ও শাসক দলকে একহাত নেন সোমনাথবাবু৷ তিনি বলেন, রাজ্যে প্রশাসনকে ব্যবহার করে যেভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে দলতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, তাতে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ সাতের দশকের ঘৃণ্য রাজনীতির সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে বলেন, প্রশাসনকে দলের কাজে লাগানো হচ্ছে৷ সর্বত্র অরাজকতা, অশাম্তি চলছে৷ আগেও বলেছি আবারও বলছি, পশ্চিমবঙ্গকে রাহুমুক্ত করতে হবে৷ আর সেজন্য বামপম্হী শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে৷ এর জন্য দরকার বাম ঐক্যকে সুদৃঢ় করা৷ এদিন সোমনাথবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, দল থেকে বহিষ্কারের পর যে-সব নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, তিনিও তাঁদের পাশে আছেন, থাকবেন৷ তিনি বলেন, হীরেন্দ্রনাথ ঘোষ-সহ কিছু নেতা আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন৷ ওঁর মতো মানুষ হয় না বলেও জানিয়েছেন সোমনাথবাবু৷ সদ্য দলের জেলা সম্পাদকের পদে আসা বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ রামচন্দ্র ডোম হীরেন্দ্রনাথ ঘোষের মতো অজাতশত্রু মানুষকে কীভাবে তৃণমূলের গুন্ডারা নৃশংসভাবে খুন করেছিল তার বর্ণনা দিয়ে বলেন, সারা রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল যেভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে না পারলে চরম বিপদ৷ তিনিও সোমনাথবাবুর সুরেই বাম ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করার ডাক দেন৷ প্রাক্তন সাংসদ মালিনী ভট্টাচার্য, রাজ্য নেতা মদন ঘোষ, বোলপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তপন হোড় প্রমুখ ভাষণ দেন৷
|
গভীর রাতে ছাত্রদের হাতে উপাচার্য-সহ কার্যকরী কমিটির সদস্যদের ঘেরাও নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে৷ মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ বিশাল পুলিস বাহিনী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনের সামনে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর নির্বিচারে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ৷এক যোগে মরিচঝাঁপি,নন্দীগ্রাম ও রবীন্দ্র সরোবর উত্সব বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরে৷তারপর হোক কলরব সেই সেপ্টেম্বর মাস থেকে টানা চলছেই৷ইতিমধ্যে শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে লাগাতার ছাত্রআন্দজোলন দমন করার হরেক কিসিমের দাওয়াই দেওয়া সত্বেও আন্দোলন কিন্তু আজও চলছে৷শাসকপক্ষের উপাচার্য এখন ও বহাল৷আগে ছিলেন অস্থাই ,এখন বরং স্থাই৷
উল্লেখ্য,ইতিমধ্যে কালো পতাকা প্রদর্শন ও রাজ্যপালের কাছ থেকে সনদপত্র নিতে অস্বীকৃতি জানানোর মধ্য দিয়েই এবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেদিন সকাল ১০টায় সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হলেও উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর আবেদন অগ্রাহ্য করে সমাবর্তন বয়কট করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবর্তন বর্জন করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। সকাল ১০টায় সমাবর্তন শুরু হয়। তবে সকাল থেকেই বিদায়ী শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ পরাতে শুরু করেন বয়কটকারীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কিশোরীনাথ ত্রিপাঠি এসে উপস্থিত হলে তার গাড়িবহর ঘিরে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শ্লোগান দেয় ছাত্রছাত্রীরা। দেখানো হয় কালো পতাকা। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই শুরু হয় সমাবর্তন।
শিক্ষক সংগঠন 'জুটা' (যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন)-ও এই সমাবর্তন বয়কট করা ও অনশন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান ও অনশনে অংশ নেন শিক্ষকরা।
এই বছর কলা বিভাগের স্নাতক স্তরের সেরার সম্মান নেওয়ার জন্য নাম ডাকা হয় গীতশ্রী সরকারের। তিনি মঞ্চে উঠে রাজ্যপালকে সৌজন্য দেখিয়ে সনদপত্র ও পদক না নিয়ে নেমে আসেন। পরে তিনি বলেন, 'ভিসি রাতের অন্ধকারে পুলিশ দিয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা করেছেন। তার পদত্যাগের দাবিতেই আজ আমি এই প্রতিবাদ করলাম।'
এদিকে, সমাবর্তনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় সকাল থেকেই যাদবপুর ক্যাম্পাসে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধেই এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
ইহার পরেও বহাল তবিয়তে কলন্কিত উপাচার্য।
সুর নরম সরকারের, উপাচার্যকে কড়া বার্তা আচার্যর, অধিকারের দাবিতে অনশনে অনড় পড়ুয়ারা
কলকাতা: যাদবপুর কাণ্ডে আগাগোড়া অভিজিত্ চক্রবর্তীর পাশেই ছিল রাজ্য সরকার। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতেও সমান্তরালভাবে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে উপাচার্যের ভূমিকা অস্বস্তিতে পড়ে যায় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপরই উপাচার্যের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সরকারের। শিক্ষামন্ত্রীও সুর নরম করে ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন।
ক্যাম্পাসে শ্লীলতাহানির ঘটনায় গণ্ডোগোল শুরু হয়েছিল। আগুনে ঘি পড়ে ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে ক্যাম্পাসে পুলিস ঢোকার পর। তারপর থেকেই উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তীর অপসারণের দাবিতে থমকে যাদবপুর।
শুরু থেকেই উপাচার্যের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে শাসক দল। সেই সুবাদে ছাত্রীদের শহর স্তব্ধ করা আন্দোলনের পরও উপাচার্যের পদে স্থায়ী হন অভিজিত্ চক্রবর্তী।
এতে আন্দোলনও আরও তীব্র হয়। চারমাস পদে থেকেও সেই অবস্থার পরিবর্তন করতেও ব্যর্থ হন অভিজিত্ চক্রবর্তী।
বেশ কয়েকটি ঘটনায় ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারান নতুন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনে কিছুক্ষণ থেকে বাড়ি চলে যাওয়া নিয়েও সমালোচিত হন বিভিন্ন মহলে।
এমনকী প্রেসিডেন্সির ছাত্রী সুমন্তিকার মৃত্যু রহস্যের মাঝেই অভিজিত্বাবু মন্তব্য করেন, মাদক সেবনের মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রীর। শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই নয়, একের পর এক এধরণের ঘটনায় অভিজিত্ চক্রবর্তীকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে।
সেই উপাচার্যেরই পাশে থাকায় আখেরে তার আঁচ পড়তে শুরু করে রাজ্য সরকারের ওপরও। প্রশ্ন ওঠে শাসক দলের অন্দরেও।
কেন ব্যক্তি অভিজিত্ চক্রবর্তীর পাশে থেকে দলের গায়ে দাগ লাগবে সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন কোনও কোনও তৃণমূল নেতা।
এই পরিস্থিতিতে ফের শুরু হয় অনশন আন্দোলন। কিন্তু স্বয়ং উপাচার্য ছাত্রদের সঙ্গে কথাবার্তা এড়িয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এই এবস্থায় শুক্রবার থেকে আসরে নামেন শিক্ষামন্ত্রী। জট কাটাতে এবার আর তাই উপাচার্যের পাশে নন। বরং এবার তিনি নতুন ভূমিকায়। পড়ুয়াদের পাশে।
সোমবার প্রতীকী অনশনে বসতে চলেছেন অনশনরত পড়ুয়াদের অভিভাবকরা।
যাদবপুরে শ্লীলতাহানির ঘটনায় এবার উপাচার্যকে সতর্ক করলেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্লীলতাহানির ঘটানায় ব্যবস্থা নিতে দেরি হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আচার্য। আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি উদ্বেগ জানান, অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক অবস্থা নিয়েও। অসুস্থ ছাত্রদের চিকিত্সায় যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রীকে। এদিন ফের ছাত্রদের অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানান উপাচার্যকে বার্তা আচার্যের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজনের স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল। তাঁদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখতে ও চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের দাবিগুলি শিক্ষামন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করায় অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার পর ব্যবস্থা নিতে দেরি হওয়ায় উপাচার্যকে সতর্ক করেছেন আচার্য রাজ্যপাল। এ বিষয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
http://zeenews.india.com/bengali/kolkata/govt-changes-stand-on-ju-movement_124018.html
যাদবপুরের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব, উপাচার্যকে সতর্ক করলেন রাজ্যপাল
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, এবিপি আনন্দ
Saturday, 10 January 2015 05:04 PM
কলকাতা: যাদবপুরকাণ্ডে উপাচার্যকে এই প্রথম কড়া বার্তা আচার্যর। ছাত্রীর শ্লীলতাহানিকাণ্ডে তদন্তে বিলম্ব কেন, তা নিয়ে অভিজিত্ চক্রবর্তীকে সতর্ক করলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।
গত বছর অগাস্টে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে যাদবপুর ক্যাম্পাসে। গড়া হয় তদন্ত কমিটি। রিপোর্ট পাঠানো হয় রাজভবন ও উচ্চশিক্ষা দফতরে। কিন্তু কেন রিপোর্ট অনযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? রাজভবন থেকে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সতর্ক করেছেন আচার্য। অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
শনিবার অনশনে অসুস্থ দুই ছাত্রকে দেখতে হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই প্রতিবাদের মুখে পড়েন তিনি। কেন এতদিন পরেও পদত্যাগ নয় উপাচার্যের? প্রশ্ন তোলেন পড়ুয়ারা।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি হস্তক্ষেপের আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। পড়ুয়াদের সাফ কথা, উপাচার্যর পদত্যাগ কিম্বা অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু না হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে আন্দোলন।
শুধু পড়ুয়ারাই নয়, সোমবার থেকে একই দাবিতে প্রতীকি অনশনে বসছেন অভিভাবকরা। শুধু সূত্রের খবর, উপাচার্য এখনও অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা না করার ক্ষুব্ধ সরকার। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, সরকার বুঝেছে উপাচার্যর পদত্যাগ ছাড়া এই অচলাবস্থা কাটানো সম্ভব নয়। শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, কোনও উপাচার্যকে আচার্যর এরকম সতর্কবার্তা সাম্প্রতিক অতীতে বেনজির। তাদের প্রশ্ন, রাজভবন এবং সরকার যদি আরও আগে সক্রিয় হত, তাহলে কি জট এত জটিল হত?
No comments:
Post a Comment