জামাত এজেন্ডার পক্ষে সওয়াল,দুই বাংলা এক হোক
মমতার ঈলিশ দৈত্যের হাসিনা জবাব পানি নাই,ভাইস্যা যাইব ঈলিশ
দেব কহিলেন, দুই বাংলা এক করে দাও, এটাই আমাদের স্বপ্ন
সে যা হল তা হল,বিশ্ব বাংলায় আবার রটিল,রবীন্দ্রনাথে নিয়ে আমাদের ন্যাকামি এখন রীতিমত ছেলে খেলা।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জ্বলছে তো জ্বলছে,কতটা ইন্ধন যোগালেন দিদি,হিসাব হবে পরে।
পলাশ বিশ্বাস
দিদির সফর সঙ্গীরা কেলো কম করেন নি বাংলাদেশ সফরে।এক অতি জনপ্রিয় গায়কের কন্ঠে ভুলভাল রবীন্দ্র সহ্গীতের কেলো শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত ঢাকতে গিয়ে আরও এক দফা কেলো।
দিদির বিবেকানন্দ কথা নেি বার্তা নেই দুম করে দুই বাংলা এক করার ডাক দিয়ে বসলেন,এখন দেখা দরকার সুখা তিস্তার পানিতে কতটা সুনামী হয় দুই বাংলা এক করার এই নব্য জেহাদে।দিদির এই অভূতপূর্ব ঈলিশ ডিপ্লোমেসিতেকোথাকার জল কোথায় গড়ায়।
জামাত যোগাযোগ খন্ডাতে জমাত এজেন্ডার পক্ষেই সওযাল করে বসলেন দিদির বিরবেকানন্দ।
অতএব দেবকে ফারুকীর পরামর্শ কলকাতায় গিয়ে আন্দোলনে নামুন।
দুই বাংলাকে এক করতে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় নায়ক দেবের আহ্বান তৈরি হয়েছে তোলপাড়। কলকাতায় ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আন্দোলনে নামতে তাকে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=%20NjQ4MzQ=&s=Mg==
তবু সান্ত্বনা,তিস্তা ও সীমান্ত সমস্যার জটখোলাসহ অনেক 'আশার দুয়ার খুলে' তিন দিনের সফর শেষে দেশে ফিরে এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
শনিবার রাত পৌনে দশটার দিকে সফরসঙ্গীদের নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট-২২৯ যোগে মমতা ব্যানার্জী ঢাকা ত্যাগ করেন। তাঁর এই সফরকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'নতুন আশার দুয়ার খোলা'র সঙ্গে তুলনা করে যাবার বেলায় কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, 'আবার আসিব ফিরে... এই বাংলায়'। শাহজালাল বিমানবন্দরে তাঁকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
জনকন্ঠ লিখেছেঃএ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সফরকে 'ইটস্ আ নিউ বিগিনিং' উল্লেখ করে মমতা ব্যানার্জী বলেন, এর মধ্য দিয়ে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। তিস্তা সমস্যার সমাধান হতে কতটা সময় লাগতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিস্তা সমস্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দিন। আমি মনে করি, মাত্র দেড় দিনে অনেক বৈঠক হয়েছে, প্রত্যেকটাই সফল এবং খুবই ভাল হয়েছে। এ সফর দুই দেশের অর্থনীতি, উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে কাজে আসবে। এভাবে যাতায়াত করলে দুই দেশের মধ্যে নতুন দরজা খুলে যাবে, মনের দরজা খুলে যাবে। সকলকে আমন্ত্রণ জানাই, আপনারা আসুন, যাতায়াত করুন। তিনি বলেন, আমাদের এ সফর অনেক দিন মনে থাকবে। এটি ইতিহাসের পাতায় থাকবে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে পুরো বাঙালী যেভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করল, কিভাবে তারা দিনটিকে অতিবাহিত করল তা দেখতে পারলাম নিজ চোখে। এটি নিজ চোখে দেখা অনেক বড় ব্যাপার। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম দেখেছি। বায়ান্নর ভাষা শহীদদের স্মৃতির পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছে। এখানকার মানুষের আতিথেয়তা তাঁর চিরকাল মনে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন মমতা।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জ্বলছে তো জ্বলছে,কতটা ইন্ধন যোগালেন দিদি,হিসাব হবে পরে।যেমন গাজীপুরে হরতাল শুরুর আগের রাতেই ফের নাশকতায় লিপ্ত হয়েছে জামায়াত-বিএনপি। শনিবার পেট্রোলবোমায় ঢাকায় দুই পথচারী ও গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায় মহিলাসহ দুই বাসযাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধরা হলেন গাজীপুরের কলমেশ্বর এলাকার সামাদ মিয়ার মেয়ে সাহিদা ইয়াসমিন (৩৫) ও কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চন্দ্রার নুরুল ইসলামের ছেলে বাবুল হোসেন (১৮)। এদের মধ্যে গুরুতর বাবুলকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় বাস থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আরও দু'যাত্রী আহত হয়েছে। বলাকা পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে গাজীপুর যাচ্ছিল। এদিকে ঢাকার হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পেট্রোলবোমায় দুই পথচারী দগ্ধ হয়েছেন। আজিমপুর ও প্রেসক্লাব এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে চার শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছে পাঁচজন। দগ্ধ ও আহতদের ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ দুজন হলেন নূর মোহাম্মদ (২২) ও তাঁর শ্যালক পলাশ (৯)।
আজিমপুর মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণে আহত লিমা (১৭), অ্যানি (১৯), ঐশী (১৮) ও লাবণীকে (১৯) ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাঁরা সবাই ইডেন কলেজের ছাত্রী, আবাসিক হলে থাকেন।
রাত সাড়ে নয়টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় পরপর চারটি ককটেল বিস্ফোরণে এক রিক্সাচালক আহত হন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের বাংলাদেশ আগমন ঘিরে ঢাকার ১নং এজেন্ডায় যেমন তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা তুলে ধরা আছে। তেমনি মমতাও তাঁর ১নং এজেন্ডায় রেখেছেন বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া। কেননা দীর্ঘদিন ধরে পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে রফতানি বন্ধ৷বাংলাদেশ সফরের এই নির্যাস বাংলাদেশী মীডিযার।ঈলিশ পদে পদে জুটেছে দিদির থালায়।কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের আম জনতার ভাগ্যে ঈলিশ সূখা তিস্ত নদীর জল হয়েই রয়ে গেল।
বাংলাদেশ সফরে জামাত কেলেন্কারি থেকে মুক্ত হলেও হতে পারেন দিদি, কিন্তু ঈলিশ ত জূটলই না,বাংলাদেশ যখন অগ্নিদগ্ধ,যখন সংখ্যালঘূরা রাজনৈতিক সহিংসতার লক্ষ্যবস্ত,হাসিনার সঙ্গে ওপার বাংলার ব্যাপার স্যাপারে অযথা নাক গলাননি এপার বাংলার সর্বময়ী অধিশ্বরী।শুধু বার্তা দিলেন ,যাহা রটে,তাহা ঘটে না।ভারত সরকার ও তস্য অঙ্গরাজ্য পশ্চিম বঙ্গসরকার ছিল ও আছে আওয়ামী লীগ ও হাসিনার সঙ্গে।
দিদির ঈলিশ হল,আম বাঙ্গালি এ পারে হা পিত্যস করে বসেই থাকবে যে ঈলিস জুটলি না।ওপার বাংলায় আবার পানির লাগিয়াং হাহাকার।
তারই মাঝে হল এক কেলো,তৃণমূলি গায়কের কন্ঠে ভুল ভাল জাতীয় সঙ্গীত ভ্রাতৃত্বের আবহ যাচ্চে তা করে দিল।যদিও সাবিনা ইয়াসমিন,রুণা লৈলা ও বন্যা আসিয়া প্রতিবাদের জোয়ারে দিদির দৈত্য ভাসান হতে দেননি,কিন্তি প্রশ্ন থেকেই গেল যে ওপার বাংলার জাতীয় সঙ্গীতে এপার বাংলার সেতুবন্ধন নেই।
সে যা হল তা হল,বিশ্ব বাংলায় আবার রটিল,রবীন্দ্রনাথে নিয়ে আমাদের ন্যাকামি এখন রীতিমত ছেলে খেলা।
বাংলাদেশি মীডিয়ার ভবিষ্যত বাণী অক্ষরে অক্ষরে খেটে গেলঃছিটমহল বিনিময়ে সম্মতি দেয়ার জন্য পদ্মার ইলিশ কলকাতায় নিয়ে যেতে চান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়ার ইচ্ছাও তার রয়েছে। আমদানি-রফতানি বাড়ানো ছাড়াও পশ্চিবঙ্গে স্থায়ী শিল্প গড়ে তোলার বিষয়ে বাংলাদেশী শিল্পোদ্যোক্তাদের আহ্বান জানাবেন তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত ইস্যু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়টিকে এবারের ঢাকা সফরে তিনি পাশ কাটিয়েই যাবেন।
বাংলাদেশে সফররত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এপারে পানি প্রবাহিত হতে শুরু হলে ওপারে ইলিশ যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের দুষ্প্রাপ্যতার বিষয়টি অবহিত করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এভাবেই তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান।
আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। খবর ইউএনবির।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বহুল আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি যাতে দ্রুত সই হয়, এ বিষয়ে তিনি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন। যাতে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা হয় এবং কোনো পক্ষেরই ক্ষতি না হয়। এ ছাড়া স্থল সীমান্ত চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের পার্লামেন্টে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাজেট অধিবেশনে শুরু হবে। এই অধিবেশন চলাকালে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন করানো হবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের জন্য একটি কমিটি গঠনের আহ্বান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বাংলাদেশ পক্ষের কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে নিজ মন্ত্রিসভা থেকে তাঁদের পক্ষের কমিটির জন্য একজনকে মনোনীত করবেন মমতা।
বৈঠকে কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা পর্যন্ত সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া কলকাতায় নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সফরে যেতে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও নজরুল ফেলোশিপ উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি ছোটো নৌকা উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর দুই নেতা আধঘণ্টা একান্ত বৈঠক করেন।
যা প্রত্যাশা ছিল,তাহাই শেষপর্যন্ত এই সফরের ঝোল আমাদের পাতে,ঈলিশ নাই নাই।জামাই বরণ হইব কিসে।ন্নদুক কিছু ওপার বাংলায় কম পড়ে নাই।তাহাদের হক কথাঃ চার বছর ধরে কলকাতা-ঢাকা-দিল্লির মধ্যে অনেক টানাপোড়েন চলেছে। দিল্লিতে সরকার বদল হয়ে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সংসদীয় রাজনীতির কৌশলে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি মমতার পক্ষে আর আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দুই মাসের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় নরেন্দ্র মোদির কট্টর বিরোধী মমতা ব্যানার্জি আগেভাগে ঢাকায় পৌঁছে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির সপক্ষে মত ঘোষণা করে বাংলাদেশীদের কাছে নিজের সুনাম উজ্জ্বল করতে চান। একই সঙ্গে গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ থাকা পদ্মার ইলিশের রফতানি প্রক্রিয়াও পুনরায় চালু করতে চান তিনি। কারণ পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের ব্যাপক চাহিদা ও কদর রয়েছে।
তাহাদের কথাঃ২০১৫ সালের মে মাসে মমতার নিজের বিধান সভা ভোট রয়েছে। তার আগে তিনি যদি ছিটমহল বিনিময়ে সম্মতি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় পুনরায় পদ্মার ইলিশ নিয়ে যেতে পারেন তাহলে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে তিনি যথেষ্ট সুবিধা পাবেন। বস্তুত এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে পদ্মার ইলিশের নিশ্চয়তা চাইবেন তিনি। যদি এটা তিনি পেয়ে যান তাহলে একই সঙ্গে দ্বিগুণ ফায়দা পাবেন।
আমাদের দিদি মমতা ব্যানার্জি গ্যাছেন আমাদের সাধের বাংলাদেশে। আমাদের হারানো দ্যাসে।বুড়ো ধুড়োদের স্মৃতির বাংলাদ্যাশে।আর তার পাতে ইলিশ উঠবে না, তাই কি হয়! শনিবার দুপুরে তাই গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে ইলিশই হয়ে রইলো অন্যতম আকর্ষণ।
এমনিতেই মাছে-ভাতে বাঙালি বলে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি আছে বাংলাদেশের মানুষের। তারওপর এ সফরে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আরো বেশি ইলিশ আমদানির একটা জোরালো দাবিও আছে মমতার।
তাই শনিবারের মধ্যাহ্নভোজে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যে বিশেষ ১২ পদের আয়োজন রাখা হলো তার প্রধান আকর্ষণ হয়ে রইলো বাংলাদেশের জাতীয় মাছ তথা মাছের রাজা ইলিশ।
সরষে ইলিশ, ইলিশ ভাজা, ইলিশের ডিম আর ভাপা ইলিশের সুনাম তাই শোনা গেলো মধ্যহ্নভোজে অংশ নেওয়া সব অতিথির মুখে। উপাদেয় এ খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে দেখা গেলো তাদের।
এছাড়া খাবারে তালিকায় আরো ছিলো চিতল মাছের কোপ্তা, চিংড়ির মালাইকারি, রূপচাঁদা ভাজা, রু্ইয়ের পেটি, খাসির রেজালা, চিকেন কারি, মিক্সড ভেজিটেবল কারি, মিক্সড ভেজিটেবল সালাদ। সঙ্গে ফলাহার তো ছিলোই। আরো ছিলো বাংলার বিখ্যাত রসমালাই, মিষ্টি দই।
ভাপা ইলিশ পরিবেশিত হয় রুটি আর মাখন সহকারে। সাদা ভাত ছিলো কালিজিরা চালের।
পানাহার আর ফলাহারের পর্ব শেষে ছিলো চা আর কফিও।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মানুষ যে কতোটা অতিথিপরায়ণ সেটাই যেনো প্রমাণ হলো আরও একবার।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের এক টুইট বার্তাতেও মমতাকে ১২ পদে আপ্যায়নের খবর পাওয়া গেছে।
মমতার সফরসঙ্গী টালিউড নায়ক দেব টুইট করেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর লাঞ্চে অংশ নিতে পেরে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।'
মমতা ব্যানার্জির ঢাকার হজরত শাহ জালাল আম্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলেন বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে৷ বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরন৷
শাহরিয়ার আলম মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন৷ আওয়ামী লীগের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে মমতা ব্যানার্জি এসেছিলেন প্রায় ১৬ বছর আগে। সেই সময়ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনাই৷
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশে এটাই মমতার প্রথম সফর৷ তাঁর চলাচল ও অবস্থান নিয়ে ঢাকায় নেওয়া হযেছে কড়া নিরাপত্তা। যা আগে ভারতের কোন শীর্ষ নেতার ক্ষেত্রে এতোটা চোখে পড়েনি।
ঢাকা রওনা হওয়ার আগে কলকাতায় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের বলেন, এই সফর দুই বাংলার সম্পর্ককে মজবুত করে তুলবে৷
তবে এরমধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে৷ তা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কী আলোচনা হয় সেদিকে তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশের মানুষ৷
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ এসেছেন৷ এই বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্তসহ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তবে মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিস্তার পানিবণ্টন।
মুখ্যমন্ত্রী বিমান থেকেই তাঁর সফর নিয়ে টুইট করেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, 'বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের যে তার নাইকো শেষ৷'
মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল৷ প্রতিদিনই দুই বাংলা থেকে বহু মানুষ যাতায়াত করেন৷ তিনি বলেন, তিস্তা পানিবণ্টন নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না৷ আলোচনা করি, তার পর বলব৷ সাংবাদিকদের মমতা বলেন, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় হবে৷
ছিটমহল প্রসঙ্গে মমতা বলেন, আমি এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সিদ্ধাম্ত আগেই জানিয়ে দিয়েছি৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের মৎস্যজীবী এবং অন্য অনেকে যাঁরা সীমাম্তের এপারে এসেছিলেন তাঁরা দীর্ঘদিন বিচারাধীন বন্দি ছিলেন৷ তাঁদের অনেককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷
বাংলাদেশে আসার আগে মমতার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের টেলিফোনে কথাও হয়৷ সুষমাকে মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ঘুরে এসে তিনি বিস্তারিত সব জানাবেন৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে এসেছেন একঝাঁক শিল্পপতি, চিত্রতারকা ও কয়েকজন মন্ত্রী৷ মন্ত্রীদের মধ্যে মমতার সঙ্গে আছেন ফিরহাদ হাকিম ও ব্রাত্য বসু৷ এসেছেন ২০ জনের মতো সাংবাদিক।
আরও এসেছেন মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র৷ অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, কবি সুবোধ সরকার, অরিন্দম শীল, সংসদ সদস্য মুনমুন সেন ও অভিনেতা দেব। জরুরি কাজ থাকায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আসতে পারেননি৷
আসার কথা ছিল কবির সুমনেরও৷ তিনি অসুস্থ৷
দেবকে ফারুকীর পরামর্শ কলকাতায় গিয়ে আন্দোলনে নামুন
দুই বাংলাকে এক করতে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় নায়ক দেবের আহ্বান তৈরি হয়েছে তোলপাড়। কলকাতায় ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আন্দোলনে নামতে তাকে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=%20NjQ4MzQ=&s=Mg==
দেব'দা কইলেন, "দুই বাংলা এক করে দাও"
এ কে এম ওয়াহিদুজ্জমান
আরে নাটকি কোথাকার! নাটকের জায়গা পাস না? বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে। তোরা আগে ভারতের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন হ, তারপর 'দুই বাংলা এক' করার জন্য আমি নিজেই তোদের পক্ষে থাকবো।
আরেক মমতাহীন নাটকী পানিবন্ধ করে দিয়ে এসে বলে, "যেন নিজের দেশে এসেছি"! ঢং এর জায়গা পায় না। এদেরকে একটাই শাস্তি দেয়া যায়- পেটপুরে ইলিশ মাছ খাওয়ানোর পর পানি পান করতে না দেয়া; বুঝিয়ে দেয়া, পানি না পেলে কেমন কষ্ট হয়।
বাংলাদেশের মানুষ এক অভিনেত্রীর নাটক দেখতে দেখতেই তিতিবিরক্ত, তার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে এয়েচে আরেকদল!
বাই দ্য ওয়ে- এক বছর আগেও যারা মমতাকে জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক বলতো, তারা এখন মমতা বন্দনায় গদগদ! কেইসটা কী? গতকাল সোনারগাঁ হোটেলে সব চেতনাধারীরাই তো ছিল!
http://www.bd-today.net/newsdetail/detail/49/114017
2015-02-21 8:41 GMT+06:00 Isha Khan <bdmailer@gmail.com>:
দুই বাংলা এক করে দাও, এটাই আমাদের স্বপ্ন : দেব (ভিডিও সহ)
দুই বাংলাকে এক করে দেওয়ার জন্য দুই দেশের সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়ক দেব। তিনি বলেছেন, দুই বাংলার স্বপ্ন এক, ইচ্ছেও এক। সব কিছুই এক। তাই দুই বাংলার এক হওয়া দরকার।
আজ শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে মতবিনিময়কালে দেব এ কথা বলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন, যার নাম দেওয়া হয়েছিল 'বৈঠকী বাংলা'।
অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত দেব বলেন, 'আমাদের ভাষাটা (বাংলা) পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে। আমি জানি, আমরা কেউ এটা আমাদের জন্য করছি না। আমাদের জীবনটা খুব ভালো কেটেছে, বা কেটেও যাবে। কিন্তু সমাজে আমরা যে স্থানটাতে আছি, এটা আমাদের দায়িত্ব, এই ভাষাটাকে নিয়ে আমাদের কিছু বলা উচিত। সেই কারণে হয়তো আমরা এখানে এসেছি। আমাদের স্বপ্ন এক, আমাদের ইচ্ছেটাও। সব কিছুই যখন এক, তাহলে আমরা দুই সরকারকে বলি যে প্লিজ, এপার বাংলা, ওপার বাংলাকে এক বাংলা করে দাও।'
অনুষ্ঠানে ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, 'আমি আপ্লুত। এত পরিচিত বন্ধুবান্ধব। হৃদয়ের টান। আমার একটা ছোট্ট কথা বলার। ৬৭-৬৮ বছর আগে এপার বাংলা, ওপার বাংলা হয়ে গিয়েছিল। তারপর অনেক কাণ্ড ঘটে গেছে। এখন থেকে এপার বাংলা, ওপার বাংলা না বললেই বোধহয় ভালো।'
গৌতম বলেন, 'বাংলার গান, বাংলার সাহিত্য, বাংলার নাটক, বাংলা সিনেমা। সেটা কোন দেশের তা নয়, সেটা সমগ্র বাঙালির। তার কারণ, বাংলা ভাষা হচ্ছে আমাদের গুরু। আমরা এখন থেকে শুধু মনে করি যেন দুই বাংলা সংস্কৃতির দিক দিয়ে একটাই। (তাহলে) আমার মনে হয়, আমরা অনেকটাই এগিয়ে যাব।'
http://www.prothomdin.com/news/6998
https://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=vUW4EF4f1Dc
'মনের জানালা খুলে' দেখলাম বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের ধরন
আনু মুহাম্মদ
'মনের জানালা খুলে' দেখলাম বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের ধরন। দুদেশের সরকারগুলো যেভাবে বন্ধুত্ব জারি রেখেছে তা সারসংক্ষেপ করা যায় এভাবে। বাংলাদেশের দিক থেকে:
১) ভারত সরকারের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে 'টিপাইমুখ বাঁধে কোন ক্ষতি হবে না', 'রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না' বলতে থাকা। (২) ফারাক্কার ক্ষতি ও নদী সংযোগ পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ ভয়াবহতা সম্পর্কে নীরব থাকা। (৩) অভিন্ন নদী গুলোর ওপর বাংলাদেশের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের কনভেনশন নিয়ে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকা। (৪) 'মানবিক কারণে' বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের চাল নিতে ট্রানজিট অধিকার দেওয়া। বিদ্যুৎ প্লান্টের জিনিষপত্র ভারতে নিতে নদী আড়াআড়ি বন্ধ করা। জনগণকে লাভক্ষতি কিছু না জানিয়ে ধীরে ধীরে ট্রানজিট চূড়ান্ত করা। (৫) সীমান্ত হত্যা নিয়ে নরম থাকা। কাঁটাতার সরানোর বিষয়ে কথা না বলা (৬) বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ, কর্ম সংস্থান, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করতে নানা প্রণোদনা। ইত্যাদি।
ভারতের দিক থেকে: (১) মাঝেমধ্যে পিঠ চাপড়ে দেয়া। (২) নদী, সীমান্ত, অসম বাণিজ্য সবকিছুই বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা। বেশিরভাগ নদীতে একতরফা বাঁধ দেয়া। (৩) ফেনসিডিলসহ সবরকম চোরাই পণ্য আনতে সীমান্তে উদার নীতি। অন্যদিকে নিয়মিতভাবে গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিক এমনকি ভেতরে এসে কৃষক হত্যা। (৪) ভারতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ, পণ্য বাজারে নানা বাধা দেয়া। (৫) নেপাল ও ভূটানের সাথে সড়ক যোগাযোগ দশক দশক ধরে ঝুলিয়ে রাখা। (৬) নিজেদের ট্রানজিট পথের উন্নয়নে ঋণ প্রদান। (৭) সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৎপরতা, নির্মাণকাজ ভারতীয় কোম্পানিকে দেয়া নিশ্চিত করবার জন্য দরপত্র সংশোধনের চাপ। (৮) কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে বন্ধুত্বের আহবান। ইত্যাদি।
আমরা এই অপমানজনক অবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা দুদেশের মানুষের মধ্যে প্রকৃত বন্ধুত্ব চাই, যোগাযোগ চাই, গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক আধিপত্যমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া চাই।
http://satkahan.com/Column/bangladesh-and-india-friendship-analise-professor-anu-muhammod
__._,_.___
বাঘা সিদ্দিকী-এরশাদ-ইনু : ভারতের তিন মিত্র
রঞ্জন বসু, দিল্লি প্রতিনিধি॥
বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যে গত সাড়ে চার দশক ধরে, সে কথা অজানা নয় কারও। শেখ পরিবারের কথা ছেড়ে দিলেও তোফায়েল আহমেদ বা প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক বা এমন আরও অনেক নেতার সঙ্গেই ভারতের শীর্ষ রাজনীতিকদের রীতিমতো ঘনিষ্ঠতা ছিল বা আছে। তবে ঘটনা হলো– এখন আওয়ামী লীগের বাইরে এমন আরও অন্তত তিনজন রাজনীতিকও সেই একই দাবি করতে পারেন। তারা হলেন কাদের সিদ্দিকী, জেনারেল এইচ এম এরশাদ আর হাসানুল হক ইনু।
তিনজনের পটভূমি আলাদা, রাজনৈতিক জীবনের পরিপ্রেক্ষিতেও কোনও মিল নেই। তারপরও কোনও না কোনওভাবে এই তিনজনই ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সেই সম্পর্কের মধ্যেও অনেক ওঠাপড়া ছিল, সবসময় যে তারা ভারতের সুনজরে ছিলেন তাও বলা যাবে না। তারপরও আজকের তারিখে এই তিনজনের মতামত ও পরামর্শকে ভারত যে গুরুত্ব দেয় এবং তাদের মিত্র বলে মনে করে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
ধরা যাক টাঙ্গাইলের কাদের সিদ্দিকীর কথাই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই নায়ক, বঙ্গবীর বাঘা সিদ্দিকীকে কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেকটা সময়ই দেশের বাইরেই কাটাতে হয়েছিল। আর তার প্রায় পুরো সময়টাই তিনি ছিলেন ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয়ে, এক রকম ভারত সরকারের অতিথি হয়েই।
কলকাতা থেকে একশো কিলোমিটার দূরে বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে শ্রীপল্লী বলে একটি জায়গায় তার জন্য সেফ হাউসের ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল ভারত। (এই সেই বর্ধমান শহর, যেখানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সূত্র ধরে জেএমবি জঙ্গিদের ভারতে ঘাঁটি বানানোর খবর শিরোনামে এসেছে)। আটের দশক ও নয়ের দশকের গোড়ার দিকে সেই শহরই ছিল বাঘা সিদ্দিকীর ঠিকানা, সরকারি আশ্রয়ে ওই মধ্যবিত্ত পাড়ায় নিতান্ত আটপৌরে জীবন কাটাতেন– লুঙ্গি পরে পাড়ার দোকানে চাও খেতে আসতেন। ছিয়ানব্বইয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর আবার দেশে ফেরেন তিনি।
সেই সময় থেকেই কাদের সিদ্দিকীর প্রায় অবাধ যাতায়াত দিল্লির ক্ষমতার অন্দরমহলে। আজও ঢাকা থেকে দিল্লিতে আসলে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী কিংবা অন্যান্য বন্ধুদের জন্য পোড়াবাড়ির চমচম বা পদ্মার ইলিশ আনতে ভোলেন না। এমনকি, যদি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দিল্লির সরাসরি কথা বলতে অসুবিধা থাকে, তার বার্তাও এনে যথাস্থানে পৌঁছে দেন বলে শোনা যায়!
বাংলাদেশের সাবেক সেনা-শাসক জেনারেল এরশাদকে অবশ্য কোনও দূতের কাজ করতে হয় না– তবে তিনি নিজে একজন সাবেক সেনাপ্রধান হলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে খুব ভালোবাসেন। অন্তত এরকমটাই ধারণা ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর এক সাবেক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার। জেনারেল এরশাদ যখন সামরিক শাসক হিসেবে ইসলামকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করেন তখন তার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল– কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পর ধীরে ধীরে তিনি আবার সেই সম্পর্ক দারুণভাবে মেরামত করতে পেরেছেন বলেই বলছিলেন ওই কর্মকর্তা।
আসলে এরশাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব গভীর আর পুরনো। তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা এখনও কোচবিহারের দিনহাটাতেই থাকেন, রংপুরে যাওয়ার আগে নিজেও স্কুলজীবনের অনেকটা দিনহাটাতেই কাটিয়েছেন। সে সময় 'পেয়ারাদা'-র নেতৃত্বে কীভাবে দিনহাটার স্কুলের ছেলেপিলেরা মেয়েদের পেছনে লাগত, তার সরস বর্ণনা আছে কবি উৎপলকুমার বসুর বর্ণনাতেই। সেই পেয়ারাদাই পরে জেনারেল এরশাদ হয়েছেন, এমনকি ভারতের দেরাদুনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতেই সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।
ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনে পরে যা-ই করে থাকুন না-কেন, এরশাদকে ভারতের আজকের নীতিনির্ধারকরা কিন্তু এখনও ভারতের মিত্র ও একজন আপাদমস্তক ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ বলেই মনে করেন। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে এদিন বলছিলেন, 'বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ওপর মি. এরশাদের আর সেরকম কোনও প্রভাব নেই তা আমরা জানি, কিন্তু তার রাজনৈতিক মস্তিষ্ক এখনও ভীষণ ক্ষুরধার। ফলে তার মতামতকে ভারত বরাবরই গুরুত্ব দেয়।'
বর্তমানে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন যিনি, সেই জাসদের নেতা হাসানুল হক ইনু-র সঙ্গে আবার দিল্লির কংগ্রেসি নেতাদের ততটা ঘনিষ্ঠতা ছিল না– কিন্তু তিনি ভারতের সিপিআই বা সিপিএমের অনেক বামপন্থী নেতারই বেশ কাছের লোক ও প্রিয়পাত্র ছিলেন।
ভারতে সিপিআই ও সিপিএম নেতারা সরাসরি কেন্দ্রের ক্ষমতায় বা ক্ষমতাসীন জোটে অল্প সময়ই ছিলেন, কিন্তু দিল্লিতে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি কখনোই কম ছিল না, তাদের হাত ধরেই ভারতে অনেক বন্ধু তৈরি করতে পেরেছিলেন এই পোড়খাওয়া বাংলাদেশি রাজনীতিক। দিল্লিতে ইনুর ঘন ঘন আনাগোনাও সেই নয়ের দশক থেকেই। পরে গত দশ বছরের কংগ্রেস আমলে তিনি কংগ্রেস মহলেও অনেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছেন, এবং এখন সাউথ ব্লকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে তাকে একজন অগ্রগণ্য ভারতবন্ধু হিসেবেই গণ্য করেন।
আওয়ামী লীগের বাইরের এই তিন রাজনীতিক বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের হয়ে কোনও কলকাঠি নাড়ছেন না বা কোনও ষড়যন্ত্রেও সামিল নন বলেই ভারতের কর্মকর্তারা বলে থাকেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশে এমন প্রভাবশালী বন্ধুদের থাকাটা কাজে দেয় সবার জন্যই– আর ভারতও তার সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় পুরো মাত্রাতেই।
No comments:
Post a Comment