Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Sunday, July 28, 2013

নন্দীগ্রামে বিচার অধরা কেন, বিড়ম্বনায় মুখ্যমন্ত্রী

নন্দীগ্রামে বিচার অধরা কেন, বিড়ম্বনায় মুখ্যমন্ত্রী

নন্দীগ্রামে বিচার অধরা কেন, বিড়ম্বনায় মুখ্যমন্ত্রী
ফিরোজ বিবি, নন্দীগ্রামের শহীদ জননী
এই সময়: নন্দীগ্রাম-তদন্ত নিয়ে হাইকোর্টে সিবিআই-এর তোলা অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য বিধানসভাকেই মঞ্চ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে শনিবার যে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর এই জবাবদিহি, সেখানে হাজির শুধুই তাঁর দলের সদস্যরা৷ বিরোধীরা যে কিছু বলবে-প্রশ্ন তুলবে, সে অবকাশই ছিল না, কেননা আলোচনা ছাড়া বাজেট পেশের 'প্রহসনে' ক্ষুব্ধ বাম ও কংগ্রেস প্রতিনিধিরা ততক্ষণে ওয়াকআউট করে বিধানসভা কক্ষের বাইরে৷

নিজের দলের লোকজনকেই শুধু সাক্ষী মেনে মমতার পাল্টা অভিযোগ, 'সিবিআই তদন্তে প্রকৃত অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ যারা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল, তাদের কোনও বিচার হবে না, শুধু নিচুতলার অফিসারদের শাস্তি হবে--এই বৈষম্য কেন?' এক সময়ে ঘটনা-মাত্রই সিবিআই তদন্ত চাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বস্ত্তত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা-সংস্থার কাজকর্ম নিয়েই এ দিন সংশয় প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মন্তব্য, 'তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডে কে তদন্ত করল! কোনও বিচারই হয়নি৷'

নন্দীগ্রামে জমি-রক্ষা আন্দোলনকারীদের উপর ২০০৭-এর ১৪ মার্চ পুলিশি গুলিচালনায় ১৪ জন নিহত হন৷ আহত হন শতাধিক মানুষ৷ হাইকোর্ট ঘটনার পর পরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়৷ তদানীন্তন বাম সরকারের শেষের শুরু এবং পালাবদলের সূচনা-বিন্দু হিসাবেই চিহ্নিত হয়ে আছে সেই ১৪ মার্চ৷ হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরুর পর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ভাবে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ে সিপিএম৷ পুলিশের সঙ্গে সিপিএম ক্যাডাররাও হামলা-গুলিচালনায় যুক্ত ছিল--বিরোধীদের এই অভিযোগ ভিত্তি পেয়ে যায় যখন খেজুরির শেরখাঁচকের জননী ইটভাটা থেকে সিপিএমের সশস্ত্র-বাহিনীকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই৷

রাজ্যপাটে পরিবর্তনের পর সেই সিবিআই-এর সঙ্গেই আশ্চর্যজনক ভাবে সংঘাত শুরু হয় নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ফসল ঘরে তোলা তৃণমূলের৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তমলুকের তত্‍কালীন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে পরিচালিত হোক সিবিআই তদন্ত--তৃণমূল সরকারের এই দাবি ঘিরেই মূলত সংঘাত৷ তৃণমূলের অভিযোগ, সে দিনের গুলিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ আর পুলিশ ও ক্যাডার-বাহিনীকে প্রত্যক্ষ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ৷ তাই তাঁদের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দিক সিবিআই--এই দাবি তোলে মমতার সরকার৷ কিন্ত্ত সিবিআই জানায়, বুদ্ধদেব-লক্ষ্মণ শেঠদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ তারা পায়নি৷ তবে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি চায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ কিন্ত্ত সে অনুমতি দীর্ঘ দিনই ঝুলিয়ে রেখেছে রাজ্য৷ বুদ্ধদেব-লক্ষ্মণদের বিরুদ্ধে চার্জশিট না-দিলে ওই পুলিশ-কর্তাদের ক্ষেত্রেও চার্জশিটের অমুমতি দেওয়া হবে না--রাজ্য সরকার এমন অদৃশ্য শর্ত চাপাচ্ছে বলে ক'দিন আগেই হাইকোর্টে অভিযোগ করে সিবিআই৷ 

সিবিআই-এর এই অভিযোগে চরম বিড়ম্বনায় পড়েই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় জবাবদিহির মোড়কে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে চেয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷ বস্ত্তত, মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ তোলার আগেই তাঁর দলেরই বিধায়ক 'শহিদ জননী' ফিরোজা বিবি বিচার চেয়ে সরকারের অস্বস্তি বহুগুন বাড়িয়ে দেন৷ বিধানসভার উল্লেখ-পর্বে নন্দীগ্রামের এই প্রবীণা বিধায়ক বলেন, 'বামফ্রন্ট আমলে সংঘটিত গণহত্যা-ধর্ষণের যাতে বিচার হয়, নন্দীগ্রামের সবাই যাতে বিচার পায়--তা সরকারকেই দেখতে হবে৷' 

ফিরোজার এই দাবি-আর্তির প্রেক্ষিতে মুখরক্ষার জন্যই মমতাকে মুখ খুলতে হয়েছে বলেও মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের৷ 'বিচারের দাবি'র সামনে পঞ্চায়েত ভোট-পর্বে নিহতদের বিষয়েও তাঁর সরকার 'মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি' নিয়ে ভাবছে বলে ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্ত্ত কী সেই দৃষ্টিভঙ্গি, তা খোলসা করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে গোলমালের দায় নির্বাচন কমিশন এবং বিরোধীদের উপর চাপানোর চেষ্টাও চালিয়েছেন সমানেই৷ এমনকী বাম আমলে নিহতের সংখ্যা টেনে প্রতিতুলনারও চেষ্টা করেছেন৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...