আজ ফের আদালতে পেশ করা হল সুদীপ্ত সেন, অরবিন্দ সিং চৌহানকে। সুদীপ্ত সেনের জেল হেফাজতের আর্জি জানান হল বিধাননগর পুলিসের পক্ষ থেকে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে।
গতকালই শেষ হয়েছে সারদাকাণ্ডে ধৃত তিনজনের পুলিস হেফাজতের মেয়াদ। মনে করা হচ্ছে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সম্ভবত আর নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে না বিধানননগর পুলিস। তবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পুলিস আজ ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে।
অবশেষে শিল্পনীতির খসড়া ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। বণিক মহল ও সাধারণ মানুষের মতামতের জন্য আপাতত ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হল এই নীতি।
ক্ষমতায় আসার পরই নয়া শিল্পনীতি তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জমি সমস্যা, নতুন শিল্পের জন্য কী ইনসেনটিভ দেওয়া হবে তা নিয়ে জটিলতার কারণে প্রকাশ করা যায়নি শিল্পনীতি। তবে নতুন এই শিল্পনীতিতে আদৌ বেশি ইনসেনটিভ পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এই ঘোষণামতো, রাজ্য সরকারি দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে দশ বছরের কম সময় ধরে কাজ করছেন, এরকম অস্থায়ী ও চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মরতদের বেতন পাঁচ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাত হাজার টাকা করা হয়েছে৷ দশ বছরের বেশি সময় এই পদে কাজ করছেন, এমন কর্মীদের বেতন ৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে৷ গ্রুপ-সি পদে দশ বছরের কম সময় কর্মরত এই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে৷ এর বেশি সময় কর্মরতদের বেতন ৮ হাজার ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ হাজার টাকা করা হয়েছে৷
মহাকরণ সূত্রে খবর, জেলাগুলির সরকারি দপ্তরে অন্তত ৬০ হাজার অস্থায়ী রয়েছেন৷ সবচেয়ে বেশি কর্মী আছেন সেচ দপ্তরে৷ এঁরা কেউ চুক্তির ভিত্তিতে, কেউ অস্থায়ী কর্মী হিসেবে, আবার কেউ দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন৷ বাম আমলেই এই অস্থায়ী কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷ ঠিক হয়, পরিবর্তে এঁরা মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পাবেন এবং তিন বছর অন্তর ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি ঘটবে৷ ৬০ বছর পর অবসর নেওয়ার সময় এককালীন একটা টাকা সরকার দেবে৷ সেইমতো ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর সরকার নির্দেশিকা প্রকাশ করে৷ এরপর মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই বেতন কিছুটা সংশোধন করা হয়৷ কিন্ত্ত এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ জিটিএ চুক্তির পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং বিষয়টি সরকারের নজরে আনেন৷ কারণ পূর্বতন দার্জিলিঙ গোর্খা পার্বত্য পরিষদে অনেক এধরনের অস্থায়ী কর্মী রয়েছে৷
কমিশনের সচিব তাপস রায়ের তরফে পেশ করা এই লিভ পিটিশন নিয়ে আইনজ্ঞ মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে৷ কারণ গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের যে কপি আপলোড করা হয় তার ছত্রে ছত্রে সহমত, সমঝোতা শব্দগুলি রয়েছে৷ এমনকি রাজ্য সরকার ও কমিশন, দু'পক্ষই রায়ে খুশি, আছে এমন কথাও৷ এ দিন কমিশনের তরফে 'খুশি' শব্দটিও বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে৷ এই ভাবে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের প্রায় পুরোটা নিয়েই আপত্তি তুলেছে কমিশন, যা এক প্রকার নজিরবিহীন৷ কমিশন সম্মতি না-দিয়ে থাকলে কীসের ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে ওই শব্দগুলি উল্লেখ করেছিল তা নিয়ে বিভ্রান্ত বিচার-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ৷
তবে কমিশনের এই সিদ্ধান্তে পঞ্চায়েত ভোট আটকাচ্ছে না৷ তারা বলেছে, ভোট সম্পন্ন করা তাদের সাংবিধানিক কর্তব্য৷ তারা সেই দায়িত্ব পালন করবে৷ সেই মতো এ দিন ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকও করেছে তারা৷ তবে দফা নিয়ে সরকারের সঙ্গে রফা হলেও, কোন দফায় কোন জেলার ভোট হবে তা নিয়ে দু'পক্ষের বিরোধ অব্যাহত রয়েছে৷ রায় যখন প্রায় পুরোটাই অপছন্দ, তখন কমিশন ভোট করছে কেন? কমিশনের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে তারা আদালতে গিয়েছিল৷ ভোট আটকানো তাদের লক্ষ্য নয়৷ ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ না-হলে তার দায় কমিশনের উপর বর্তাবে না, বর্তাবে আদালতের উপর৷
সিঙ্গল বেঞ্চে হেরে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল৷ সিঙ্গল বেঞ্চ ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন, ভোটের দিনক্ষণ স্থির করা এবং আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনা ইত্যাদি ব্যাপারে কমিশনের দাবিকেই সমর্থন করেছিল৷ সিঙ্গল বেঞ্চ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করার কথা বলে৷ ডিভিশন বেঞ্চ তিন দফায় ভোটের আর্জি এবং পর্যান্ত পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কমিশনের দাবি মেনে নেয়৷ কিন্ত্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা, পুলিশ মোতায়েন সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশনের দাবি মানেনি৷
ডিভিশন বেঞ্চ তার রায়ে বলেছিল, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে পরবর্তী সময়ে তা কোনও ভাবেই নজির হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না৷ কমিশন এ দিন রায়ের ওই অংশটুকুও বাদ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে৷
বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ এ দিন বলেন, 'ডিভিশন বেঞ্চ অবাক করা রায় দিয়েছে৷ ওই রায়ের বিরোধিতা করা ছাড়া কমিশনের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না৷' আর এক বিশিষ্ট আইনজ্ঞ তথা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে না-গেলে মানুষ ধরে নেবে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়, অর্থাত্ আদালতে সায় দিয়ে কমিশন পরে উল্টো কথা বলছে৷ তিনি আরও জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে যেতে হলে কমিশনকে আগে সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চের কাছেই রি-কল পিটিশন করতে হবে৷ কমিশন সম্মতি দিয়েছে এই অংশটুকু রায় থেকে বাদ না দেওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যাবে না৷ এ দিন কমিশন সেই পদক্ষেপই করল৷ গত মঙ্গলবার রায় ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পর রায়ের লিখিত বয়ানে চোখ বুলিয়ে কমিশনের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল অভিযোগ করেছিলেন, তিনি আদালত কক্ষে সরকারের কোনও প্রস্তাবেই সায় দেননি৷ একই কথা বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডেও৷ সেদিনই কমিশনের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল তারা রায় বদলের আর্জি জানাবে৷
বিজ্ঞপ্তি জারি: পঞ্চায়েত ভোট ২, ৬, ১০ জুলাই
ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে কমিশনের সঙ্গে সরকারের আলোচনা নিষ্ফলা হয়৷ তবে সরকার অবশেষে কমিশনের প্রস্তাবিত তারিখই মেনে নিয়েছে রাজ্য৷ তবে জেলা বিন্যাসের ক্ষেত্রে কমিশনের প্রস্তাব মানা হয়নি৷ কমিশন প্রথম দফায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পাশাপাশি মুর্শিদাবাদে ভোট চেয়েছিল৷ দ্বিতীয় দফায় নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি ও বীরভূম এবং তৃতীয় দফায় জঙ্গলমহলের তিন জেলা ও বীরভূমে ভোটের প্রস্তাব দিয়েছিল কমিশন৷ কিন্ত্ত তারিখ মেনে নিলেও এই জেলা বিন্যাস মানেনি সরকার৷
কলকাতা: সারদাকাণ্ড নিয়ে গত এক মাস ধরে উত্তাল রাজ্য৷ লগ্নি সংস্থার সঙ্গে শাসক দলের নেতৃত্বের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগে সরব বিরোধীরা৷ সিপিএম-কংগ্রেস দু'পক্ষই ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে একধাপ এগিয়ে সারদাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান৷
এ দিনই বানতলার সভা থেকে সিপিএম নেতা গৌতম দেব জানান, সারদাকাণ্ডে বামেদের আইনজীবী শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন৷ তিনি বলেন, সারদার তোলা টাকার সিংহভাগ গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের কাছে৷।ওই টাকা উদ্ধার করতে হবে৷ আমাদের আইনজীবী কাল সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন৷।সিবিআই সারদাকাণ্ডে তদন্ত শুরুর আগেই তৃণমূল সরকার পঞ্চায়েত ভোট করিয়ে নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন তিনি৷ পাশাপাশি তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুধু রাজ্য বিজেপির সমালোচনা করছেন৷ লোকসভা ভোট পরবর্তী সময় মমতা প্রয়োজনে এনডিএ'র হাত ধরতে পারেন বলেও এদিন ইঙ্গিত দেন তিনি৷ হাওড়া উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী প্রত্যাহার করায় সেই সম্ভাবনাই আরও জোরালো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন গৌতমবাবু৷ বানতলার সমাবেশ থেকেই সারদাকাণ্ড নিয়ে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন রেজ্জাক মোল্লা৷ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদীপ্ত সেন একযোগে সারদাকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের দাবির বিরোধিতা করছেন, কারণ তাঁরা জানেন সিবিআই তদন্ত শুরু করলেই দলের বড় নেতারা ফেঁসে যেতে পারেন৷
রাজনৈতিক মহলের মত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলকে কোণঠাসা করতে সারদাকাণ্ডকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিরোধীরা৷ আর সে কারণেই তারা দিন দিন সিবিআইয়ের দাবিতে সুর চড়িয়ে সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চাইছে৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36772-2013-05-16-16-00-59
কলকাতা: রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি নেমে তিন দফায় পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা করে রাজ্য সরকার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তাতে জেলা বিন্যাসের চেহারা দেখে অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন৷ সর্বদল বৈঠকে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মীরা পাণ্ডে৷ কমিশন সূত্রে খবর, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলে রাজ্যকে চিঠি পারে কমিশন৷ কিন্তু কমিশনের পরামর্শ যদি রাজ্য সরকার না মানে, তাহলে হাতের একটি ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করতে পারেন মীরাদেবী৷
কী সেই ব্রহ্মাস্ত্র? উত্তর, রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইন, ২০০৩-এর ১৩৭(২) ধারা৷ তাতে বলা হয়েছে, রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইন অথবা এই আইন মোতাবেক প্রণয়ন করা কোনও বিধি কার্যকর করতে গিয়ে যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন কোনও জটিলতার সম্মুখীন হয়, তাহলে সেই সমস্যা দূর করার জন্য কমিশন যে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ জারি করতে পারে৷ সেক্ষেত্রে রাজ্য যদি তা না মানে, তাহলে আদালতে যাওয়া ছাড়া আর কোনও গতি নেই তাদের কাছে৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শুধু জেলা বিন্যাসই নয়, পুলিশের ঘাটতি ইস্যুতে এই ধারাই প্রয়োগ করে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার নির্দেশ দিতে পারে কমিশন৷
আইনজীবী মহলের একাংশের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার প্রশ্ন তুলতে পারে, বাহিনী নিয়ে কমিশনের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপন্থী৷ ১৪ মে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়েছে, নির্দেশ মতো পুলিশি ব্যবস্থা করতে গিয়ে যদি দেখা যায়, রাজ্য পুলিশ কম পড়ছে, তাহলে সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী বা ভিন রাজ্যের পুলিশ আনা হবে৷ তবে কোথা থেকে আনা হবে, তা রাজ্যই ঠিক করবে৷
কিন্তু শুধু মুখে আপত্তি তুললেই হবে না৷ আদালতে নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ আইনজীবী মহলের মত, সেক্ষেত্রে রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইন, ২০০৩-এর ১৩৭(২) ধারাকেই হাতিয়ার করবে কমিশন৷ রাজ্যের আপত্তি থাকলে তাদের এই ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে নতুন করে আইনি জট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল৷
তবে এসবই নির্ভর করছে শেষমেশ মীরাদেবী ব্রহ্মাস্ত্রটি প্রয়োগ করেন কি না, তার উপর৷ যদিও ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ এমন প্রশ্নও তুলছেন যে, কমিশনের হাতে এত ক্ষমতা থাকা সত্বেও আগে তার প্রয়োগ করেনি কেন৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36810-2013-05-18-04-54-10
কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের জেলা-বিন্যাস ও দিন নিয়ে জট অব্যাহত৷ জেলা বিন্যাস নিয়ে মতপার্থক্য রয়েই গিয়েছে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের৷ সেই জট-বিতর্কে এবার নয়া মোড়৷ ভোটের দিন ও জেলাবিন্যাস নিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ কিন্তু এ ব্যাপারে রাজ্য ও কমিশন নিজের নিজের অবস্থানে অনড় থাকলে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ফের কি অচলাবস্থা তৈরি হবে? উঠেছে প্রশ্ন৷ শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার জানায়, প্রথম দফায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হাওড়া, হুগলি বর্ধমান এই ন'টি জেলায় ভোট৷ দ্বিতীয় দফায় ভোট- মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূমে৷ তৃতীয় দফায় দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে৷ কিন্তু কমিশন চাইছে, প্রথম দফায় ভোট হোক দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদা ও মুর্শিদাবাদে৷ দ্বিতীয় দফায় নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি এবং বীরভূমে৷ আর শেষ দফায় পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার সঙ্গে হাওড়া, বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে৷
সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রথম দফাতে প্রায় ৩৬ হাজার বুথে ভোট৷ পরের দু দফা মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার বুথে ভোট৷ এই জেলা বিন্যাস বাস্তবসম্মত বলে মনে করে না নির্বাচন কমিশন৷ তারা চায়, ৫৭ হাজার বুথকে মোটামুটি সমান তিন ভাগে ভাগ করা হোক৷ তাই বিন্যাস বদলের আর্জি জানিয়ে তারা চিঠি পাঠাল রাজ্যকে৷ পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কমিশনের চিঠির ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানানো হবে রাজ্যের অবস্থান৷ ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে কমিশনের প্রস্তাবই মেনে নিয়েছে রাজ্য৷ সে মতো বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তারা৷ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভোট হবে ২, ৬ ও ১০ জুলাই৷ কিন্তু ১০ জুলাই রথযাত্রা৷ পাশাপাশি শুরু হচ্ছে রমজান মাসও৷ কমিশন তাই আর্জি জানিয়েছে তৃতীয় তথা শেষ দফার ভোট ১০-এর পরিবর্তে ৯ জুলাই করা হোক৷
২০০৩ সালের রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইনের ৪৩ (২) ধারা অনুযায়ী রাজ্যকে চিঠি লিখেছে কমিশন৷ এই ধারা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেও কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন করাতে অসুবিধা আছে, তবে তারা রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত বদলের আর্জি জানাতে পারে এবং রাজ্য সরকার সেই আর্জি মেনে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে৷
শুক্রবার কমিশনের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে সব দলই ১০-এর বদলে ৯ জুলাই ভোট করার কথা বলে৷ তাই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, কমিশনের এই আর্জি রাজ্য সরকার মেনে নেবে৷ কিন্তু জেলা বিন্যাস নিয়ে কমিশনের পুনর্বিবেচনার আর্জি রাজ্য সরকার মেনে না নিলে কী হবে? রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইনে সেটা স্পষ্ট বলা নেই৷ পঞ্চায়েত মামলায় ডিভিশন বেঞ্চও তার রায়ে এ ব্যাপারটা স্পষ্ট করেনি৷ এই পরিস্থিতিতে জেলা বিন্যাস নিয়ে রাজ্য ও কমিশন, নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36833-2013-05-18-13-02-44
কলকাতা: ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়৷ অনেকেই বলছেন, সৌগত রায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা এমনই৷
তৃণমূলের কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করে দলের পদত্যাগী ৬ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঠাঁই দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসাবে অত্যন্ত সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করছিলেন সৌগত রায়৷ শিল্প নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে বণিকসভাগুলির সঙ্গেও একাধিক বৈঠকও করেছিলেন তিনি৷ বাস্তবতার পথে হেঁটেই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, জমির অভাবে এ রাজ্যে বড় শিল্পের সম্ভাবনা ক্ষীণ৷ কিন্তু এর পরপরই শিল্প উপদেষ্টার পদ থেকে তাঁর ইস্তফার জল্পনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়৷ দমদমের তৃণমূল সাংসদ এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো শোনা যায়, শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর না কি মনোমালিন্য দেখা দিয়েছিল৷ অস্বস্তি এড়াতে উপদেষ্টা কমিটিই ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এরপর ৩০ এপ্রিল পুরনো উপদেষ্টামণ্ডলী ভেঙে দিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তৃণমূলের ৬ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেই তাতে মনোনীত করার কথা জানান মুখ্যসচিবকে৷ কিন্তু প্রথমবারের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এবার সব দিক বুঝেশুনেই পা ফেলতে চাইছেন সৌগত রায়৷
মহাকরণ সূত্রে খবর, ১৩ মে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে নির্দিষ্ট তিনটি প্রশ্ন করেছেন সৌগতবাবু৷ ১. আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান কে হবেন এবং কে তাঁর সচিব হবেন?
২.কমিটির বৈঠক কি নিয়মিত হবে, এবং কে বৈঠকগুলি ডাকবেন?
৩.উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা তাঁদের পরামর্শ কাকে দেবেন?
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্বগ্রহণের আগে সৌগতবাবু বুঝে নিতে নিতে চাইছেন আদৌও তাঁর কোনও কাজ আছে না কি আগের মতোই আলঙ্কারিক হবে গোটা বিষয়টা?(ফাইল চিত্র)
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36832-2013-05-18-12-46-43
প্রথম বাঙালি মহিলা হিসাবে এভারেস্ট জয় করলেন হাওড়ার ছন্দা গায়েন। শনিবার সকাল ছটা দশ মিনিটে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করেন তিনি। দোলের দিন দুই বন্ধুর সঙ্গে এভারেস্ট অভিযানে বেরিয়েছিলেন ছন্দা। কাঠমান্ডু হয়ে এভারেস্টের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছন ছন্দা। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছতে পেরে রোমাঞ্চিত ছন্দা। সকালে হাওড়ায় মা-কে ফোন করে এভারেস্ট জয় করার কথা জানান বাঙালি এই মহিলা।
পূর্বাভাস ছিলই। তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে সন্ধের পর তাই ঝেপে বৃষ্টি নামল দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। কলকাতায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। মহাত্মা গান্ধী রোডের ওপর সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে ঝড়ে একটি গাছ রাস্তার ওপর পড়ে যায়। এর জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবং পুরসভার কর্মীরা গাছটি কেটে সরিয়ে দেন।
কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনা সহ একাধিক জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। গত কয়েকদিনে ঝড়বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় নেমে গেছে। ফলে জৈষ্ঠেও খানিক স্বস্তিতে রাজ্যের মানুষ।
অত্যধিক নারী সঙ্গই কাল হল শ্রীসন্থদের। স্পট ফিক্সংয়ের তদন্তে নেমে এমনই মনে করছে পুলিস। অনেকেই বলছেন অত্যধিক নারী সঙ্গের অভ্যাসই কাল হল শ্রীসন্থদের।
আজ দফায় দফায় জেরা করা হয় শ্রীসন্থ সহ স্পট ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত অন্য দুই ক্রিকেটারকে। সেখান থেকে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বুকিরা টোপ হিসাবে ব্যবহার করত মেয়েদের। জেরায় নিজের ভুল স্বীকার করেন অঙ্কিত চহ্বাণ। ক্রিকেটার বুকি অমিত সিং ছিলেন ট্যালেন্ট স্পটার। দিল্লি পুলিস সূত্রের খবর নিজের দোষ কবুল করেছেন শ্রীসন্থ। যদিও শ্রীসন্থদের আইনজীবী সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
তাঁর দাবি ভুল করে গ্রেফতার করা হয়েছে শ্রীসন্থকে। তাঁকে ফাঁসিয়েছেন জিজু জনার্দন। তামিলনাড়ুতেও অভিযান চালানো হয়। প্রশ্ন উঠছে,তাহলে কি পঞ্চম আইপিএলেও বেশ কিছু ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছিল। ক্রিকেটারদের জেরা করে আরও দুই ক্রিকেটারের নাম পেয়েছে দিল্লি পুলিস। নাম জড়িয়েছে ব্র্যাড হজ আর অজিঙ্কা রাহানের। স্পট ফিক্সিং বিতর্ক নিয়ে রবিবার চেন্নাইয়ে জরুরি ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
সারদা কাণ্ডে তদন্ত কার্যত শেষ বলে আদালতে জানিয়ে দিলেন সরকারি আইনজীবী। ফলে, সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনই জানাল না বিধাননগর থানার পুলিস। স্বাভাবিকভাবেই, সারদা কর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সবকটি মামলায় তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর আদালত। জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সারদা কাণ্ডে অপর অভিযুক্ত অরবিন্দ সিং চৌহানকেও।
সারদা কাণ্ডে কার্যত তদন্ত শেষ বলে আদালতে জানাল বিধাননগর থানার পুলিস। সেইসঙ্গে, বিধাননগর পুলিসের তরফে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনই জানানো হল না। স্বভাবতই সুদীপ্ত সেনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল বিধাননগর আদালত। ৩১ মে পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিধাননগর আদলতে দায়ের হওয়া সবকটি মামলাতেই আজ সুদীপ্ত সেনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সরকারি আইনজীবী আদালতে বলেন, সারদার আর্থিক দুনীর্তি নিয়ে তদন্ত কার্যত শেষ। তবে, সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিস। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৩৪ ৩৭ ও ৪৮ নম্বর মামলায় ২২ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ৩৬নং মামলায় ২৩ তারিখ পর্যন্ত ও ৩৯ নম্বর মামলায় ৩১ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুদীপ্ত সেনকে। তবে দেবযানী মুখার্জির বিষয়ে এখনও কোনও মতামত দেননি বিচারক।
সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে যেসব নাম পাওয়া গেছে তাঁদের ধরতে গেলে পুলিসের চাকরি নিয়েই টানাটানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সুদীপ্ত সেনকে আর নিজেদের হেফাজতে রাখতে চাইছে না পুলিস। এমনটাই বললেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ।
সারদা কাণ্ডের তদন্তে আরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন ছিল পুলিসের। সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের হেফাজতে না চাওয়ার প্রসঙ্গে এমনটাই বললেন আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চ্যাটার্জি।
চিটফান্ড প্রতারণার তদন্তে সারদা গোষ্ঠীর বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পেল বিধাননগর পুলিস। বিধাননগর পুলিস সূত্রে খবর, রাজ্যের ১২টি জেলায় ২৫৬টি প্লটে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ ডেসিমেল জমি রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও একাধিক রাজ্যে জমি রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর। সারদা গোষ্ঠীর স্থাবর সম্পত্তির বিস্তারিত তথ্য চব্বিশ ঘণ্টার হাতে।
পশ্চিমবঙ্গের ১২টি জেলায় ২৫৬টি প্লটে রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি। এরমধ্যে, বাঁকুড়ায় একটি প্লটে ১৯৭ডেসিমেল জমি রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর কোচবিহারের ৮৭টি প্লটে জমির পরিমাণ ১,৪১৭ ডেসিমেলের বেশি। দক্ষিণ দিনাজপুরের ছটি প্লটে রয়েছে ৯৩১ ডেসিমেল জমি। দার্জিলিংয়ে জমি রয়েছে চার ডেসিমেলের বেশি।
জলপাইগুড়ির ১৪টি প্লটে ৩১১২ ডেসিমেল জমি রয়েছে। মালদহের ১০টি প্লটে জমির মোট পরিমাণ ১০৪৮ ডেসিমেল। মুর্শিদাবাদের ৭টি প্লটে রয়েছে ৬৬৩ ডেসিমেল জমি। নদিয়ায় ৫৯৬ ডেসিমেলের বেশি জমি বিভক্ত ১১টি প্লটে। পূর্ব মেদিনীপুরে ছটি প্লটে ৫১৫ ডেসিমেলের বেশি জমি রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার তিনটি প্লটে জমি রয়েছে ২৭০০ ডেসিমেলের বেশি। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ১২০টি প্লটে ৬৩০৫ ডেসিমেল জমি রয়েছে।
এছাড়া হুগলির চন্দননগরেও জমি রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর। রাজ্যের বাইরেও একাধিক জায়গায় সারদা গোষ্ঠীর জমির হদিশ মিলেছে। তারমধ্যে, ওড়িশায় নটি প্লটে রয়েছে ১৩৬০টি ডেসিমেল জমি। অসমের চারটি প্লটে রয়েছে ৩২৮ ডেসিমেল জমি। ত্রিপুরায় ৫৫০ ডেসিমেল জমি রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর। এর বাইরেও রয়েছে সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বাজেয়াপ্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ।
ফিক্সিং কাণ্ডে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এল। শনিবার পরিষ্কার হয়ে গেল শুধু শ্রীসন্থ, অঙ্কিত, অজিতরা নন আইপিএল ফিক্সিং কাণ্ডের জাল আরও গভীরে। আজ বিকেলে পুলিসের সাংবাদিক সম্মেলনে উঠে এল চাঞ্চল্যকর বেশ কিছু তথ্য। কলকাতা নাইট রাইডার্স- রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচেও স্পট ফিক্সিংয়ের চুক্তি হয়েছিল। তবে সেই ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের প্রথম একাদশে ছিলেন না শ্রীসন্থ, অঙ্কিত চহ্বান, অজিত চান্ডিলারা। তাই কেকেআর-রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে স্পট ফিক্সিং হয়নি বলে অনুমান।
পড়ুন শ্রীসন্থকে বিয়ে করতে অস্বীকার পাত্রীর, বানচাল অঙ্কিতের বিয়ে
এদিকে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে যে ভিডিও পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে বুকিদের সঙ্গে খোশ মেজাজে গল্প করছেন বিভিন্ন ক্রিকেটাররা।
মুম্বইয়ের যে পাঁচতারা হোটেলে শ্রীসন্থ ছিলেন সেখানে থেকে তাঁর ল্যাপটপ-আইপ্যাড-মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শ্রীসন্থের ল্যাপটপে পাঁচ বুকি, ও আরও তিন ক্রিকেটারের নাম পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিস জানায়।
এদিকে রাজস্থান রয়্যালসের আরও তিনটে ম্যাচে স্পট ফিক্সিংয়ে হয়েছে বলে অনুমান পুলিসের। সেই মত রাজস্থানের তিনটে ম্যাচের `র ফুটেজ` পরীক্ষা করবে দিল্লি পুলিস। পুলিস জানায় ক্রিকেটারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হবে।
প্রাথমিক অনুমান ওই তিন ক্রিকেটারের মধ্যে আছেন ওয়েইজ শাহ, শন টেট ও রাজস্থান রয়্যালসের আরও এক স্থানীয় ক্রিকেটার। তবে পুলিস অবশ্য এই তিন ক্রিকেটারের নাম জানায়নি।
পুলিস মনে করছে রাজস্থান রয়্যালসের শুধুমাত্র তিন ক্রিকেটার নয়। আরও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার জড়িয়ে আছে ফিক্সিংয়ের এই খেলায়। এই ভিত্তিতে মুম্বইয়ের কালবাদেবি এলাকা থেকে রমেশ ব্যাস নামে এক বুকিকে আটক করেছে মু্ম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। রমেশ ভারতের এবং পাকিস্তানী বুকিদের মধ্যে লিঙ্ক হিসাবে কাজ করত। রমেশের ডায়রিতে সেই সব বুকিদের নাম রয়েছে যারা আইপিএলের স্পট ফিক্সিং মামলায় সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। এরপরই মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ একটি পাঁচতারা হোটেলে অভিযান চালিয়ে থেকে উদ্ধার করেছে শ্রীসন্থের একটি ল্যাপটপ। যার থেকে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অন্যদিকে, আইপিএলের লজ্জার গড়াপেটায় এবার জড়াল কলকাতার নাম। ফিক্সিংয়ে জড়িত টাকার সন্ধানে কলকাতায় আসছে দিল্লি পুলিস। কলকাতার পাশাপাশি দেশের আরও কয়েকটি বড় শহরে তল্লাসি চালানো হবে। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে 'ইউ টার্ন'৷ ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে যে সব বুকি ধরা পড়েছে, তাদের জেরা করেই আরও সূত্র এসেছে৷ সেই সূত্র ধরেই চলবে তল্লাশি৷ এ জন্য বুকিদেরও কয়েক জনকেও সঙ্গে নিচ্ছেন পুলিশকর্তারা৷
এদিকে, স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত রাজস্থান রয়্যালসের শ্রীসন্থ, অজিত চান্ডিলা ও অঙ্কিত চহ্বাণকে আজ দ্বিতীয় দফায় জেরা করতে চলেছে পুলিস। সূত্রে খবর, আজ এই তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে। এই তিন ক্রিকেটারদের একই সঙ্গে ধৃত বুকিদেরও জেরা করা হবে।
আইপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ে বিতর্কের সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজতে আজ ফের খানাতল্লাসি চালাচ্ছে দিল্লি পুলিস। পুলিস চেষ্টা করছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই গড়াপেটায় যুক্ত টাকা উদ্ধার করতে।
অন্যদিকে, জয়পুর পুলিস বিভিন্ন বুকির কল রেকর্ডের একটি তালিকা আজ প্রকাশ করবে বলে খবর। গত দু'মাস ধরে বুকিদের কাছ থেকে ৩০০টির বেশি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
চলতি আইপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটার শ্রীসন্থ, অজিত চান্ডিলা ও অঙ্কিত চহ্বাণ গতকালই পুলিসি জেরায় তাঁদের দোষ কবুল করেনিয়েছেন বলে খবর।
দু'দিনের নীরবতা ভেঙ্গে অবশেষে শুক্রবার রাতে আইপিএল প্রধান রাজীব শুক্লা জানিয়েছেন দোষ প্রমাণিত হলে এই তিনজনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে বিসিসিআই।
পুলিসের স্ক্যানারের তলায় পেপসি আইপিএলের বেশ কিছু ম্যাচের সঙ্গে গত আইপিএলের রাজস্থানের একটি ম্যাচও আছে। পুলিসের আশঙ্কা ওই ম্যাচেও স্পট ফিক্সিং হয়েছিল।
এদিকে, আইপিএলে স্পটফিক্সিং কাণ্ডে, বুকিদের থেকে যে অর্থ পেয়েছেন চান্ডিলা ও শ্রীসন্থ তা বাজেয়াপ্ত করল পুলিস। সূত্রের খবর, চান্ডিলা যে কুড়ি লক্ষ টাকা অর্থ নিয়েছিলেন তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে শ্রীসন্থের অর্থের পরিমান এখন স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। এদিকে রবিবার এই ইস্যুতে বিসিসিআইয়ের ওয়ার্কিং কমিটির পক্ষ থেকে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
আইপিএল স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্করি তদন্তে আরও একধাপ এগোল দিল্লি পুলিস। সূত্রের খবরানুযায়ী, জেরার পর অভিযান চালিয়ে অজিত চান্ডিলা ও শ্রীসন্থ বুকিদের থেকে স্পট ফিক্সিং বাবদ যে অর্থ নিয়েছে,তা উদ্ধার করেছে দিল্লি পুলিসের একটি দল। স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার জন্য কুড়ি লক্ষ টাকা বুকিদের থেকে নিয়েছিলেন চান্ডিলা। মনে করা হয়েছে শ্রীসন্থ ৪০ লক্ষ টাকার মত ঘুষ নিয়ে ছিলেন।
তবে সূত্রের খবর, দুই ক্রিকেটারের থেকেই বুকিদের থেকে পাওয়া সেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় ক্রিকেটার অঙ্কিত চৌহানের স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য বুকিদের কাছ থেকে পাওয়ার কথা ছিল ষাট লক্ষ টাকা। এই অর্থ পাওয়ার কথা ছিল ম্যাচের পর। কিন্তু তার আগেই রাজস্থান রয়্যলসের এই ক্রিকেটার পুলিসের জালে ধরা পড়ায়,পুলিস সূত্রের দাবি, অঙ্কিতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা জমা পড়েনি। আইপিএলে গড়াপেটার মারাত্মক অভিযোগ ওঠার পর বেকায়দায় বিসিসিআই। রবিবার সকাল এগারোটায় বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
অত্যধিক নারী সঙ্গই কাল হল শ্রীসন্থদের। স্পট ফিক্সংয়ের তদন্তে নেমে এমনই মনে করছে পুলিস। অনেকেই বলছেন অত্যধিক নারী সঙ্গের অভ্যাসই কাল হল শ্রীসন্থদের।
আজ দফায় দফায় জেরা করা হয় শ্রীসন্থ সহ স্পট ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত অন্য দুই ক্রিকেটারকে। সেখান থেকে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বুকিরা টোপ হিসাবে ব্যবহার করত মেয়েদের। জেরায় নিজের ভুল স্বীকার করেন অঙ্কিত চহ্বাণ। ক্রিকেটার বুকি অমিত সিং ছিলেন ট্যালেন্ট স্পটার। দিল্লি পুলিস সূত্রের খবর নিজের দোষ কবুল করেছেন শ্রীসন্থ। যদিও শ্রীসন্থদের আইনজীবী সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
তাঁর দাবি ভুল করে গ্রেফতার করা হয়েছে শ্রীসন্থকে। তাঁকে ফাঁসিয়েছেন জিজু জনার্দন। তামিলনাড়ুতেও অভিযান চালানো হয়। প্রশ্ন উঠছে,তাহলে কি পঞ্চম আইপিএলেও বেশ কিছু ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছিল। ক্রিকেটারদের জেরা করে আরও দুই ক্রিকেটারের নাম পেয়েছে দিল্লি পুলিস। নাম জড়িয়েছে ব্র্যাড হজ আর অজিঙ্কা রাহানের। স্পট ফিক্সিং বিতর্ক নিয়ে রবিবার চেন্নাইয়ে জরুরি ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
শুভাপ্রসন্নের সংস্থাতেও টাকা লগ্নী প্রতারকের
নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ১৭ই মার্চ- সেবি ও আয়কর দপ্তরকে রীতিমতো ধাঁধায় ফেলে দিয়েছিলেন প্রতারক সুদীপ্ত সেন। সারদা গোষ্ঠীর একটি সংস্থা বিপুল পরিমাণ টাকার ঋণ দিচ্ছে সারদা গোষ্ঠীরই অন্য সংস্থাকে, যার কোন কার্যকরী অস্তিত্বই নেই। সেই টাকারও আবার কোন হদিশ নেই। কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের নতুন নতুন কৌশল রপ্ত করেছিলেন মমতা ব্যানার্জির সরকারের প্রতি প্রশ্নহীন আস্থা রাখা এই প্রতারক। এদিকে সারদা কাণ্ডে নেই নতুন কোন গ্রেপ্তার। অন্যদিকে গোটা তদন্তকে নখ-দন্তহীন করে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে সিটের বিরুদ্ধে।
এই সূত্রেই রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আর ও সি)'র হাতে এসেছে এমন তথ্য যাতে সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ফের চলে এসেছে মমতা ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ তৃণমূলী শুভাপ্রসন্নের নাম। ইতোমধ্যে সারদা গোষ্ঠীর চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে গেছে শাসক দলের একাধিক দাপুটে নেতা, নেত্রীর নাম। সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নের রীতিমতো ব্যবসায়িক সম্পর্কের হদিশও মিলেছে পুলিসী জেরায়। এবার আর ও সি'র হাতে এসেছে সারদার কোটি কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতির কৌশল।
তদন্তকারী আধিকারিকরা জেরায় জানতে পেরেছেন সারদা গোষ্ঠীর একাধিক কোম্পানির মধ্যেই 'ক্রস লোনের' মধ্য দিয়ে ব্যাপক জালিয়াতি ঘটেছে। আর এই সূত্রেই আর ও সি'র পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফে গত ২৩শে এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠিতেই উল্লেখ করা হয়েছে সারদা চিট ফান্ড সংস্থা 'সারদা রিয়েলিটি ইন্ডিয়া'র আর্থিক অবস্থা যখন ক্রমেই দুর্বল হতে শুরু করে সেই সময়েই এই কোম্পানি সারদা গোষ্ঠীর অন্য একটি সংস্থা 'সারদা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি'-কে প্রায় ১০কোটি টাকা ঋণ দেয়। আর্থিক পরিস্থিতি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও কেন তড়িঘড়ি ১০কোটি টাকা ঋণ দিয়ে দেওয়া হলো? তাহলে তো সারদার রিয়েলিটির অ্যাকাউন্টসে এটি 'অ্যাসেট' হিসাবেই ধরা হবে। কিন্তু সেই টাকা কোথায় খরচ হলো, কোন স্পষ্ট উত্তর নেই।
এই আর্থিক জালিয়াতির সূত্র ধরেই আর ও সি'র হাতে এসেছে 'দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেড' নামে সংস্থাটির নাম। যে সারদা কনস্ট্রাকশান কোম্পানি নিজেই সারদার চিট ফান্ড সংস্থার কাছ থেকে ১০কোটি টাকা লোন নিয়েছিল সেই সংস্থাই আবার হঠাৎ করে সারদার অনুসারী সংস্থা দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেড'কে ২০১২ সালে ৬কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দেয়। এর মধ্যে ২কোটি ৯০ লক্ষ টাকা ঋণ হিসাবে এবং বাকি ৩কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দেবকৃপার শেয়ারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কাছে পাঠানো চিঠিতে আর ও সি' রীতিমতো বিস্ময়ের সঙ্গেই উল্লেখ করেছে, ' দেবকৃপা নামে সংস্থাটির কোন প্রকাশ্য ব্যবসায়িক অস্তিত্বই নেই'।
কেন্দ্রের কর্পোরেট বিষয়ক দপ্তরের আর ও সি(রেজিস্টার্ড অব কোম্পানিজ) তালিকায় নাম রয়েছে এই 'দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেড' সংস্থাটির। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বিষয়ক দপ্তরের সর্বশেষ রিপোর্টে দেখা গেছে ,এই সংস্থার ডিরেক্টর বোর্ডে চার জন রয়েছেন। একজন ডিরেক্টর শুভাপ্রসন্ন। আরেকজন ডিরেক্টর তাঁর কন্যা জোনাকি ভট্টাচার্য। কিন্তু বাকি দুই ডিরেক্টরের একজন আপাতত পুলিস হেফাজতে থাকা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির মাস্টারমাইন্ড সুদীপ্ত সেন। আরেকজন, চিটফান্ড কাণ্ডে সুদীপ্ত সেনের সহযোগী দেবযানী মুখার্জি। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বিষয়ক দপ্তরের সর্বশেষ ঐ রিপোর্টে এই 'দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেড' নামে সংস্থাটির যে স্ট্যাটাস রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কোম্পানিটি তৈরি হয়েছে সাত বছর আগে ২০০৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি। কোম্পানি নম্বর- ইউ ৯২৪০০ ডব্লিউ বি ২০০৬ পি টি সি ১০৭৯২৯।
এই সংস্থার ডিরেক্টরস অব বোর্ডে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির নায়ক সুদীপ্ত সেন ও সারদা গোষ্ঠীর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দেবযানী মুখার্জি ২০১২ সালের ৯ই জুলাই যুক্ত হন। এখানে সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। ২০১২ সালে মানে এরাজ্যে ক্ষমতায় চলে এসেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। চিট ফান্ড ব্যবসায় ততদিনে রীতিমতো দানবে পরিণত হয়ে গেছে সুদীপ্ত সেন। ২০০৬ সালে শুভাপ্রসন্ন যে সংস্থাটি তৈরি করেছিলেন সেই সংস্থাতেই অর্থ লগ্নি করেছেন সুদীপ্ত সেন, কিনে নিয়েছিলেন শেয়ারও। সংস্থাটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১০৭৯২৯। আর ও সি নথিপত্র ঘেঁটে দেবকৃপাকে দেওয়া সরাসরি সেই ২কোটি ৯০ লক্ষ টাকারও কোন হদিশ পায়নি। জেরা থেকে পুলিসের হাতে এ তথ্য এলেও সুদীপ্ত সেনের বিশ্বাস অর্জন করা বিধাননগর কমিশনারেট এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত শুভাপ্রসন্নকে জেরা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি। গোটা বিষয় নিয়ে তৃণমূল কর্মী এই চিত্রশিল্পীর সঙ্গে বারে বারে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিকে সারদা কাণ্ডে নামেই বিধাননগর কমিশনারেট তদন্ত করছে। কিন্তু মূল রাশ এখন মমতা ব্যানার্জির তৈরি করে দেওয়া স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)র হাতে। সিটের অন্যতম আধিকারিক সি আই ডি'র অতিরিক্ত ডিজি শিবাজী ঘোষই কার্যত তদন্তের রূপরেখা তৈরির মূল কাজটি করে চলেছেন। শনিবার আবারও সুদীপ্ত সেনকে আদালতে তোলার কথা।
এদিকে কেন্দ্রীয় সংস্থাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কোন সদিচ্ছা না দেখানোর জন্যই বিধাননগর কমিশনারেটকে নানা তথ্য পেতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। সুদীপ্ত সেনের নিজের নামের স্থাবর সম্পত্তি ছাড়া যেসব বেনামে সম্পত্তি রয়েছে তার ওপর কিছুতেই থাবা বসাতে পারছে না পুলিস। অন্যদিকে, সারদা গোষ্ঠীর মালিকানার সম্পত্তির হদিশ জানাতে সিটের তরফে জেলার পুলিস সুপারদের যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিলো। ২২টি সংস্থার অসংখ্য ডিরেক্টরের সন্ধান ও জেরার পরেও এখনো পর্যন্ত নতুন গ্রেপ্তারির পথে নামতে চাইছেন না বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। সিটের তরফেও নতুন করে গ্রেপ্তার করে তদন্তকে না ছড়ানোর নির্দেশ মিলেছে। আবার আইনী ফাঁক দিয়ে যাতে কোনভাবে কোন কেন্দ্রীয় সংস্থা ঢুকতে না পারে তার জন্য আদালতের নির্দেশ হাতে নিয়েই কমিশনারেটে আসতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার নিজেদের এলাকায় প্রতারণার অভিযোগে করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিধানননগর কমিশনারেটে আসেন হুগলী এবং দক্ষিণ ২৪পরগনার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (ইবি) আধিকারিকরা। ঘন্টা দুয়েক তাঁরা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানীকে জেরা করেন। জানা গেছে, হুগলীর আরামবাগ, শ্রীরামপুর, চন্দননগর তিনটি থানায় আলাদা করে তিনটি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। দক্ষিণ ২৪পরগনার কাকদ্বীপে প্রচুর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সারদা কাণ্ডে সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখার্জি, অরবিন্দ চৌহানকে ইবি নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় বলেও এদিন জানিয়েছেন মূল তদন্তকারী আধিকারিক অশোক কামরী।
http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=40811
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সরকার-কমিশন সংঘাত অব্যাহত। জেলাবিন্যাস এবং ১০ জুলাই ভোটের দিন পরিবর্তনের দাবিতে আজ সরকারকে চিঠি পাঠাল কমিশন। রাজ্য সরকার চাইছে, ৯-৪-৪ জেলাবিন্যাসে ভোট করাতে। কিন্তু কমিশনের প্রস্তাব পঞ্চায়েত ভোট হোক ৬-৫-৬, এই জেলাবিন্যাসে।
রথযাত্রা এবং রমজানের কারণে ১০ জুলাই ভোটে আপত্তি তুলেছে বিরোধী দলগুলি। এই কারণে ১০ জুলাই ভোট করার সিদ্ধান্তও পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে কমিশন। নির্বাচন নিয়ে যাবতীয় জটিলতার মধ্যেই জেলাগুলিকে ভোটপ্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলা সহ মোট নয় জেলার জেলাশাসক এবং পুলিস সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশন কর্তারা। জেলায় জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী যে সব জেলা রয়েছে সেখানে নিরাপত্তার দিকটি আরও ভালো করে নজর দিতে বলা হয়েছে। আজকের বৈঠকে কমিশনের তালিকায় থাকা স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর বুথগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়।
গতকাই নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু জেলাবিন্যাস নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হয়েছে কমিশনের। জেলা বিন্যাস এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সরকারি বিজ্ঞপ্তির খুঁটিনাটি উঠে আসতে পারে আজকের বৈঠকে। জেলাবিন্যাস নিয়ে বিজ্ঞপ্তির ঠিক কোন কোন বিষয়ে তাদের আপত্তি আছে তা সরকারকে পরে চিঠি দিয়ে জানাবে কমিশন।
চিঠির তুলনায় আদালতে পেশ করা হলফনামায় সুর নরম সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের৷ দাবি, কুণাল ঘোষকে মিডিয়া গোষ্ঠীর সিইও করা সত্ত্বেও লাভের মুখ দেখেনি সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল৷ সারদা গোষ্ঠীর যাবতীয় সম্পত্তি, মিডিয়া হাউস বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছেন তিনি৷
৬ এপ্রিল সুদীপ্ত সেনের সিবিআইকে লেখা চিঠি আর বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়া হলফনামার মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক খুঁজে পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল৷
সিবিআইকে লেখা তাঁর চিঠিতে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ এবং সৃঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন সুদীপ্ত সেন৷
চিঠিতে তিনি দাবি করেন, কুণাল ঘোষের নেতৃত্বে বিপজ্জনকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণে নামে 'সংবাদ প্রতিদিন'৷ সংবাদমাধ্যমের আক্রমণের মোকাবিলা করতেই, বাধ্য হয়ে সংবাদমাধ্যম কেনার পথে হাঁটতে হয় তাঁকে৷ ২৪ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে হয় চ্যানেল ১০৷ কিছু দিনের মধ্যেই সৃঞ্জয় বসু এবং কুণাল ঘোষের নেতৃত্বে 'প্রতিদিন'-এর সঙ্গে চুক্তি হয় চ্যানেল ১০-এর৷ সুদীপ্ত সেনের দাবি, চুক্তিতে ঠিক হয়, 'প্রতিদিন'কে প্রতি মাসে ৬০ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে৷ চ্যানেল ১০-এর সিইও করা হয় কুণাল ঘোষকে৷ তাঁর বেতন ধার্য হয় মাসিক ১৫ লক্ষ টাকা৷... 'প্রতিদিন'-এর তরফে আমাকে আশ্বাস দেওয়া হয়, চুক্তি হলে নিরাপদ এবং নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালাতে যাতে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়, তার জন্য নিরাপত্তা দেবেন তাঁরা৷ এ প্রসঙ্গে তাঁরা আমাকে আশ্বস্ত করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে৷
কিন্তু, দু'জনেই সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ উড়িয়ে দেন৷ এরপর গ্রেফতার হন সারদা-কর্ণধার৷ বুধবার হাইকোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় কুণাল ঘোষ সম্পর্কে কোনও অভিযোগ করেননি সুদীপ্ত৷ শুধু বলেছেন, কুণাল ঘোষকে তাঁর সংবাদগোষ্ঠীর সিইও করা সত্ত্বেও নিউজ চ্যানেল কিংবা সংবাদপত্রগুলি লাভের মুখ দেখেনি৷ তাঁর কোনও সংবাদমাধ্যমই সরকারের পক্ষে ছিল না৷ তাই ব্যবসায় ভরাডুবি হয়৷
পাশপাশি, সারদাগোষ্ঠীর সঙ্গে শাসক দলের যোগের যে অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা, হলফনামায় তাও অস্বীকার করা হয়েছে৷ সুদীপ্ত সেনের দাবি, তাঁর সংস্থার একটি পত্রিকার উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তা থেকে প্রমাণ হয় না যে, তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও সম্পর্ক ছিল৷ পাশপাশি, সুদীপ্ত সেনের দাবি, শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর ভাল সম্পর্ক আছে জেনে মানুষ সংস্থায় টাকা রেখেছেন এটা ঠিক নয়৷
এরইসঙ্গে, হলফনামায় সুদীপ্ত সেন বলেছেন,সারদা গোষ্ঠীর যাবতীয় সম্পত্তি, প্রকল্প, মিডিয়া হাউস, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিঃশর্তভাবে হাইকোর্টের হাতে তুলে দিচ্ছি৷ আদালত কমিশন কিংবা কোনও ব্যক্তিকে এগুলির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার নির্দেশ দিক৷...আদালত কমিশন কিংবা কোনও ব্যক্তিকে নির্দেশ দিক এই সব সম্পত্তি, প্রকল্প, মিডিয়া হাউস বিক্রি করে তার থেকে প্রাপ্ত অর্থ সারদার প্রকৃত আমানতকারী এবং ঋণপ্রাপকদের হাতে তুলে দিতে।
পাশাপাশি সারদা-কর্ণধারের দাবি, ২০১৩-র ১ এপ্রিল সেবিকে চিঠি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, একটি তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে খতিয়ে দেখা হোক, সারদা গোষ্ঠী কত টাকা তুলেছে, তার মধ্যে তাদের আয় কতটা, লভ্যাংশ কতটা এবং আমানতকারীর প্রকৃত সংখ্যা কত? কিন্তু সেবি সেই চিঠিতে কর্ণপাত করেনি বলে হলফনামায় দাবি করেছেন সুদীপ্ত সেন৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36733-2013-05-16-05-22-34
কলকাতা: সারদাকাণ্ডের তদন্তভার এখনই সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সময় আসেনি বলে মন্তব্য করল বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত কলকাতা হাইকোর্টের নতুন ডিভিশন বেঞ্চ৷ তবে সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজও করেননি বিচারপতিরা৷ বৃহস্পতিবার সারদা মামলার শুনানি শেষে বেঞ্চ জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ ৫ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে৷ বেঞ্চ বলেছে, পুরো বিষয়টি আদালত গভীরে গিয়ে খতিয়ে দেখতে চায়৷ তারপর পূর্ণাঙ্গ শুনানির পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ পাশাপাশি আদালত তার অন্তর্বর্তী নির্দেশে এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, কারও হলফনামা দিতে বাকি থাকলে শুক্রবারের মধ্যেই তা দিতে হবে৷ লিখিত সওয়াল জমা দিতে হবে ২৩ মে-র মধ্যে৷
আদালত এ দিন মন্তব্য করে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি স্বল্প সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সেভাবে উত্সাহ দিচ্ছে না৷ সরকার যদি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন না করে, তবে ভবিষ্যতেও সারদাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটতে পারে৷
এদিনের শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ফের সারদাকাণ্ডে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হন৷ আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যও একই দাবি জানান৷ সিবিআইয়ের বিরোধিতায় পাল্টা সুর চড়ান সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ দিন তিনি আদালতের কাছে মুখবন্ধ খামে সারদাকাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেন৷ এ দিকে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে সারদা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তুলে দেওয়ার জন্য এ দিন রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত৷ তবে সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে আপত্তি জানান৷ তাঁর যুক্তি, মাঝপথে নথি তুলে দিলে তদন্তের কাজ ব্যাহত হতে পারে৷ এ কথা শুনে আদালত রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, যে যে নথি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে, সেগুলি তাদের খুঁটিয়ে দেখার সুযোগ করে দিতে হবে৷ ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের অন্তর্বর্তী নির্দেশে ক্ষুব্ধ সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ এ দিনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
এদিকে সারদাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36759-2013-05-16-12-56-58
সারদা কেলেঙ্কারির ধাক্কায় মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত রয়েছে৷ লগ্নি সংস্থাকাণ্ডে ফের জোড়া অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির রায়কতপাড়ায় আইকোর লগ্নিসংস্থার এক এজেন্টের স্বামীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ মৃতের নাম বুবাই ঘোষ৷ তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে তাঁর পরিবার সূত্রে বলা হয়েছে, বুবাইয়ের স্ত্রী আইকোরের এজেন্ট৷ স্ত্রীর হয়ে আমানতকারীদের কাছে টাকা তুলতেন তিনি৷ সারদাকাণ্ডের জেরে অবসাদে ভুগছিলেন বুবাই৷ এদিন রায়কতপাড়ায় শ্বশুর বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷
বুবাইয়ের শাশুড়ি প্রতিমা দেব জানিয়েছেন, সারদাকাণ্ডের পর থেকে হতাশায় ভুগছিলেন তাঁর মেয়ে জামাই৷ তার জেরেই এই আত্মহত্যা৷এছাড়া এদিন অসীম বেরা নামে ৫৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মগরার থানার বাগাটিতে৷ এএমসিও নামে একটি লগ্নি সংস্থার মালিক ছিলেন অসীমবাবু৷ পরিবারের দাবি, এদিন সকালে বাড়ির সামনে আহত অবস্থায় পড়ছিলেন তিনি৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় তাঁর৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে অসীমের৷ পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এই ঘটনা খুন না আত্মহত্যা৷
অন্যদিকে, দুর্গাপুরে এদিন আমানতকারী ও এজেন্টদের হাত প্রহৃত হন সত্য সেবা নামে একটি লগ্নি সংস্থার মালিক উত্তম রুইদাস৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাজার থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা তুললেও কাউকে কোনও টাকা ফেরত দেননি তিনি৷ বিপদ আসছে বুঝে গত ১৬ এপ্রিল অফিসে তালা দিয়ে গা ঢাকা দেন৷ এদিন ভোরে তাঁকে ধরে ফেলেন আমানতকারী ও এজেন্টরা৷ শুরু হয় মারধর৷ পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে৷ ধৃতকে শুক্রবার
দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে৷ এর আগেও লগ্নি সংস্থা কাণ্ডে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে৷ সেই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হল আরও দু'টি নাম৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36770-2013-05-16-15-26-01
প্রতারণা-সংকট ক্রমে গভীরতহবিল কিন্ত্ত সমাধান নয়
সুমন চট্টোপাধ্যায়
কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন গণহারে নাম-বিভ্রাট এর আগে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না৷
সারদা কাণ্ড জনসমক্ষে আসার অনেক আগে থেকেই এই সংস্থাগুলিকে বলা হচ্ছে চিট ফান্ড৷ এখন সেই নামকরণ ফিরছে মুখে মুখে৷ অথচ সত্যটা হল এগুলির একটিও চিট ফান্ড নয়৷ বস্ত্তত, এ রাজ্যে কোনও চিটফান্ডই নেই৷ চিট ফান্ড এক ধরনের আইনসিদ্ধ ব্যবসা, দক্ষিণ ভারতে বিশেষ করে কেরলে এই ব্যবসা অতীব জনপ্রিয়৷ পন্ডিতদের অনেকে বলে থাকেন চিট ফান্ডের ব্যবসার ফলে এই সব জায়গায় গ্রামের গরিব মানুষ প্রকৃত অর্থেই উপকৃত হয়েছেন৷ অতএব সাধু-অসাধু মিলিয়ে ফেলে এমন গুরুচন্ডালি পাকানো হচ্ছে, যাতে বাড়ছে বিভ্রান্তি৷
দিন কয়েক আগে দেশের এক প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম তিনিও মনে করতেন এগুলি চিট ফান্ড৷ বর্তমান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও যে একই বিভ্রান্তির শিকার, সেটা বোঝা গেল যখন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, চিট ফান্ড নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় আইনি অধিকার রাজ্যের আছে, অতএব নিষ্ক্রিয়তার জন্য কেন্দ্রকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই৷ রাজ্যের অনুমোদন সাপেক্ষে যে চিটফান্ডের ব্যবসা হয়, সে কথা সত্য৷ কিন্ত্ত যেখানে সংস্থাগুলির ব্যবসাই চিট ফান্ডের ব্যবসা নয়, সেখানে রাজ্যের এক্তিয়ারের প্রশ্নও তো ওঠে না৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিংবা বিরোধী সিপিএমের নেতাদের কথাবার্তা শুনেও মনে হয় না, এ সম্পর্কে তাঁদেরও কোনও স্বচ্ছ ধারণা আছে৷ আসলে ইংরেজি 'চিট' শব্দটির সঙ্গে এই ব্যবসার প্রতারক চরিত্রের মিল আছে বলেই বোধহয় এমন সার্বিক ধোঁয়াশা৷ অথচ ব্যবসার চরিত্রটাই যদি সম্যকভাবে বোঝা না গেল, তা হলে তার উপশমের ব্যবস্থা হবে কী ভাবে? কার হাতে এদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব আর কার হাতে নয়- সেটাই বা বোঝা যাবে কেমন করে?
সহজ বাংলায় বলতে গেলে, এরা সবাই বিবিধ প্রকল্প বা স্কিমের গল্প শুনিয়ে মানুষের কাছে টাকা তোলে৷ তার জন্য একমাত্র যেটা প্রয়োজন হয়, তা হল রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ-এর খাতায় একটি কোম্পানি খুলে ফেলা, যেটা এ দেশে প্রায় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই সহজ ব্যাপার৷ রাজ্যের অনেক জেলায় গিয়ে স্বচক্ষে দেখেছি এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখিয়েই এজেন্টরা বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁদের কোম্পানির পিছনে সরকারি শিলমোহর আছে এবং সেই কারণেই তাঁরা যে কাজটা করছেন সেটা ষোলো আনা আইনসম্মত৷ তার মানে প্রাথমিকভাবে আইন মেনে তারপর শুরু হয় আইন-ভাঙার কাজ৷ এঁদের মধ্যে আবার অতি-উচ্চাশী যাঁরা, তাঁরা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি খুলে যে যাঁর মতো করে ডিবেঞ্চার বা প্রেফারেন্স শেয়ার বাজারে ছেড়ে কোটি কোটি টাকা তোলেন৷
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি খুলে আইনমাফিক হয়তো বা ডিবেঞ্চার বা শেয়ার বাজারে ছাড়া যায়৷ কিন্ত্ত সে কাজ করার যে সব পূর্বশর্ত থাকে (যেমন ট্রাস্ট তৈরি করা, সেখানে টাকা গচ্ছিত রেখে আমানতকারীর আমানত নিরাপদ করা ইত্যাদি) সেগুলির কোনওটাই এঁরা হয় মানেন না, নয়তোবা আংশিক মানেন৷ আসানসোল শহরের কাছে এক খণ্ড জমি কিনে একটি সংস্থাকে দেখেছিলাম প্রসপেক্টাসে মিথ্যে কথা লিখে টাকা তুলছে৷ যে সংস্থার মাটিতে কোনও অস্তিত্বই নেই, তারই সুন্দর ছবি ছাপিয়ে বোকা বানানো হচ্ছে মানুষকে৷ বিষয়টি সে সময় সিপিএমের স্থানীয় সাংসদের গোচরে এনেছিলাম৷ তিনি দেখে তাজ্জব হয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেননি৷ মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিবেঞ্চার ছাড়ার জন্য দুর্গাপুরের এক আমানতকারী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন৷ আদালত স্থানীয় পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল৷ কিন্ত্ত পুলিশও কিছু করেনি৷ ফলে, সারদা কাণ্ডে তৃণমূল জড়িয়ে গিয়েছে বলে সিপিএম ধোয়া তুলসী পাতা, এ কথা মনে করার কোনও কারণই নেই৷
আইনের ফাঁক গলে কী ভাবে ব্যবসা করতে হয় তার তদারকি করার জন্য এই সব সংস্থা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কোটি কোটি টাকা দেয়৷ অথচ এঁদের ভূমিকা বা দায়বদ্ধতা নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্নই তুলছে না৷ প্রতারণায় সক্রিয় সহযোগিতার দায় যদি প্রাথমিক ভাবে কারও কাঁধে বর্তায়, তা হলে তাঁরা এই অ্যাকাউন্ট্যান্টকুল৷ এরপর থাকে মানুষের চোখে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য কাগজে-টিভিতে এমন সব প্রকল্পের ঢালাও বিজ্ঞাপন যাদের অনেকের হয় অস্তিত্বই নেই নতুবা থাকলেও আছে নামমাত্র৷ মজার ব্যাপার, এই সব সংস্থার বেশিরভাগই আমানত স্কিমগুলির বিজ্ঞাপন দেয়নি৷ অন্য প্রকল্প বা প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনের আড়ালে তুলেছে সাধারণ মানুষের আমানত৷
কাগজে-কলমে এই সব সংস্থার কাজকর্মের তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব সত্যিই রাজ্য সরকারের নয়, কেন্দ্রীয় সংস্থা সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড বা সেবির৷ কিন্ত্ত সেবি আর এক নিধিরাম সর্দার, তাদের না-আছে লোকবল, না-আছে তত্ক্ষণাত্ ব্যবসা বন্ধ করার কোনও ক্ষমতা৷ গোটা রাজ্য জুড়ে এমন আগাছার মতো গজিয়ে ওঠা সংস্থাগুলিকে নেক-নজরে রাখার কোনও উপায়ই নেই সেবির৷ কোনও বে-আইনি কাজকর্ম গোচরে এলে সেবি যে সব ব্যবস্থা নেয়, তা আমাদের বিচারব্যবস্থার মতোই দীর্ঘসূত্রী৷ চিঠি-চাপাটি বিনিময় আর শুনানি করতেই চলে যায় বছরের পর বছর৷ তার চেয়েও বড় কথা, সেবি ব্যবস্থা নিলেই অভিযুক্ত সংস্থা দমে গিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে এমনও নয়৷ তাদের মাথার উপরে হাইকোর্ট৷ তার উপরে সুপ্রিম কোর্ট৷ সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিলেও তা কার্যকর করা কতটা কঠিন, সাহারা কাণ্ডে আমরা সেটাও প্রত্যক্ষ করছি প্রতিদিন৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সাহারা কর্তৃপক্ষকে বলেছে, আমানতকারীদের ২৪০০০ হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে৷ কিন্ত্ত সাহারা তা তো করেইনি, বরং গোটা দেশের সব সংবাদপত্রে জোড়া পাতা বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোরাসে জনগণমন গাইতে৷ সুপ্রিম কোর্ট যেখানে অসহায়, সেখানে সেবি তো নেহাতই চুনোপুঁটি৷
যে সব স্কিম দেখিয়ে এই সব সংস্থা টাকা তোলে, সাধারণ অর্থে তাদের বলা হয়ে থাকে 'পঞ্জি স্কিম'৷ ঠগবাজি করে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি অর্জন করা মার্কিন নাগরিক চার্লস পঞ্জির নামানুসারে তৈরি৷ কেউ কেউ আবার বলেন 'পিরামিড স্কিম'৷ আমেরিকার মতো দেশে, যেখানে সাধারণ মানুষ আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষিত, সচেতন এবং সচ্ছল, যেখানে আইন-কানুন অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং আঁটোসাঁটো, সেখানেও পঞ্জির উত্তরসূরীরা হামেশাই বিবিধ রকম স্কিম বাজারে এনে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারণা করে থাকেন৷ সাম্প্রতিক কালে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ম্যাডফ কেলেঙ্কারি৷ বস্ত্তত, দুনিয়ায় হয়তো এমন কোনও দেশই নেই, যেখানে এই ধরনের প্রতারণার কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে এগুলি প্রায় আকছার ঘটে থাকে৷ ভারতবর্ষের অন্য রাজ্যেও ঘটে নিয়মিত৷ সংক্ষেপে এর সারমর্মটি দাঁড়ায় এই রকম৷ গাত্র-বর্ণ, ভাষা বা ভৌগোলিক অবস্থান যাই হোক না কেন, মানুষ মাত্রেই লোভ রিপুর শিকার৷ আর লোভ এমনই বস্ত্ত যা গরীব-বড়োলোক, শহর-গ্রাম, শিক্ষিত-অশিক্ষিতের তারতম্য করে না৷ ফলে, সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের অশিক্ষিত আনপড় গরীব-গুর্বোই শুধু নন, অনেক শিক্ষিত, শহুরে পোড় খাওয়া মানুষও এই সব সংস্থায় টাকা রেখে সর্বস্বান্ত হয়ে এখন মাথা চাপড়াচ্ছেন৷ লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যুর এমন গণলীলা এর আগে দেখিনি কখনও৷
'পঞ্জি' হোক বা 'পিরামিড' বা 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম'- এই ধরনের আত্মঘাতী ব্যবসার চালিকাশক্তি একটিই৷ ইংরেজিতে বললে, 'রবিং পিটার টু পে পল৷' মানে রামের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শ্যামের টাকা ফেরত দেওয়া৷ এই পাওয়া আর দেওয়ার চক্রটি যতক্ষণ ঠিকঠাক চলে, কোন চোরাবালির উপর ব্যবসাটি দাঁড়িয়ে আছে ততক্ষণ তা বুঝতে পারা যায় না৷ পারা যায় তখন, যখন ভুজের ভূমিকম্পের মতো একদিন সকালে হঠাত্ ব্যবসার গোটা কাঠামোটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে৷ সারদা-কাণ্ডে ঠিক এই ঘটনাটিই ঘটেছে৷ এজেন্টদের সক্রিয় সহযোগিতায় যতদিন আমানত ঠিকঠাক জমা পড়ছিল, নিজের ঠাঁটবাট বজায় রেখে, দাতা হরিশ্চন্দ্রের মতো টাকা বিলিয়ে সাম্রাজ্য চালিয়ে যাওয়া সুদীন্ত সেনের পক্ষে মোটেই কঠিন কাজ ছিল না৷ যেই সেখানে গণ্ডগোল হয়ে গেল, অমনি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল তাঁর কারবার৷ হঠাত্ সুনামি এলে চারপাশের লোকজনের যেমনটা হয়ে থাকে, প্রায় তেমনই দুরবস্থা এখন আমানতকারীদের৷
কিন্ত্ত গল্পের শেষ এখানেই নয়৷ বরং বলা যায় শুরু৷ এবং সেই গল্পটি আমাদের রাজ্যের পক্ষে যতটা মর্মান্তিক, প্রায় ততটাই ভয়ঙ্কর৷ সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে বেশ কয়েকজন আতঙ্কে ও অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন৷ অনেক ছোটো সংস্থার মালিক রাতারাতি পাততাড়ি গুটিয়ে হাওয়া হয়ে গিয়েছেন চোখের অন্তরালে৷ কিন্ত্ত সবচেয়ে বড় কথা, এই ঝোড়ো বিতর্কের আবহাওয়ায় গোটা রাজ্য জুড়েই নতুন আমানত সংগ্রহ স্বাভাবিক কারণেই প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে পুলিশ হঠাত্ সক্রিয় হওয়ায় আমানত আসছে না সেখান থেকেও৷ এর অর্থ, সপ্তাহ তিনেক আগে সারদার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, অদূর ভবিষ্যতে বাকি সকলের ক্ষেত্রেও পরপর তা হয়ে চলবে৷ কোনও কমিশন বা তহবিল গড়ে কোটি কোটি বঞ্চিত মানুষের সেই ক্রোধ বা শোক ঠেকানো যাবে না৷ যার উপরে বসে এতদিন সবাই মনের আনন্দে পিকনিক করেছে, এ বার জ্বলে উঠতে চলেছে সেই আগ্নেয়গিরি৷ রাজ্যের পক্ষে তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হবে তার আগাম আন্দাজ দেওয়া কঠিন৷
অথচ কেচ্ছায় নিমগ্ন মিডিয়া বা পারস্পরিক দোষারোপের খেলায় মত্ত রাজনীতির কারবারিদের কারও সে দিকে কোনও নজর নেই৷ কী হয়েছে তা নিয়ে তত্ত্ব-তালাশ যদি বা কিছুটা হচ্ছে, কী হতে চলেছে তা নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই কারও৷ অথচ রাজ্যের সার্বিক স্বার্থে, কোটি কোটি মানুষের স্বার্থে এ ব্যাপারে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণই সবচেয়ে জরুরি৷
কী সেই ব্যবস্থা, কে নেবে সেই ব্যবস্থা কিংবা কী ভাবে নেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা তা নিয়ে সকলেই নীরব৷ চিট ফান্ড নামকরণ নিয়ে যে বিভ্রান্তি, অনেকটা একই রকম বিভ্রান্তি ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়েও৷ কিন্ত্ত মার্জারটির গলায় ঘণ্টাটি বাঁধবে কে?
কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন গণহারে নাম-বিভ্রাট এর আগে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না৷
সারদা কাণ্ড জনসমক্ষে আসার অনেক আগে থেকেই এই সংস্থাগুলিকে বলা হচ্ছে চিট ফান্ড৷ এখন সেই নামকরণ ফিরছে মুখে মুখে৷ অথচ সত্যটা হল এগুলির একটিও চিট ফান্ড নয়৷ বস্ত্তত, এ রাজ্যে কোনও চিটফান্ডই নেই৷ চিট ফান্ড এক ধরনের আইনসিদ্ধ ব্যবসা, দক্ষিণ ভারতে বিশেষ করে কেরলে এই ব্যবসা অতীব জনপ্রিয়৷ পন্ডিতদের অনেকে বলে থাকেন চিট ফান্ডের ব্যবসার ফলে এই সব জায়গায় গ্রামের গরিব মানুষ প্রকৃত অর্থেই উপকৃত হয়েছেন৷ অতএব সাধু-অসাধু মিলিয়ে ফেলে এমন গুরুচন্ডালি পাকানো হচ্ছে, যাতে বাড়ছে বিভ্রান্তি৷
দিন কয়েক আগে দেশের এক প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম তিনিও মনে করতেন এগুলি চিট ফান্ড৷ বর্তমান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও যে একই বিভ্রান্তির শিকার, সেটা বোঝা গেল যখন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, চিট ফান্ড নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় আইনি অধিকার রাজ্যের আছে, অতএব নিষ্ক্রিয়তার জন্য কেন্দ্রকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই৷ রাজ্যের অনুমোদন সাপেক্ষে যে চিটফান্ডের ব্যবসা হয়, সে কথা সত্য৷ কিন্ত্ত যেখানে সংস্থাগুলির ব্যবসাই চিট ফান্ডের ব্যবসা নয়, সেখানে রাজ্যের এক্তিয়ারের প্রশ্নও তো ওঠে না৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিংবা বিরোধী সিপিএমের নেতাদের কথাবার্তা শুনেও মনে হয় না, এ সম্পর্কে তাঁদেরও কোনও স্বচ্ছ ধারণা আছে৷ আসলে ইংরেজি 'চিট' শব্দটির সঙ্গে এই ব্যবসার প্রতারক চরিত্রের মিল আছে বলেই বোধহয় এমন সার্বিক ধোঁয়াশা৷ অথচ ব্যবসার চরিত্রটাই যদি সম্যকভাবে বোঝা না গেল, তা হলে তার উপশমের ব্যবস্থা হবে কী ভাবে? কার হাতে এদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব আর কার হাতে নয়- সেটাই বা বোঝা যাবে কেমন করে?
সহজ বাংলায় বলতে গেলে, এরা সবাই বিবিধ প্রকল্প বা স্কিমের গল্প শুনিয়ে মানুষের কাছে টাকা তোলে৷ তার জন্য একমাত্র যেটা প্রয়োজন হয়, তা হল রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ-এর খাতায় একটি কোম্পানি খুলে ফেলা, যেটা এ দেশে প্রায় নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই সহজ ব্যাপার৷ রাজ্যের অনেক জেলায় গিয়ে স্বচক্ষে দেখেছি এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখিয়েই এজেন্টরা বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁদের কোম্পানির পিছনে সরকারি শিলমোহর আছে এবং সেই কারণেই তাঁরা যে কাজটা করছেন সেটা ষোলো আনা আইনসম্মত৷ তার মানে প্রাথমিকভাবে আইন মেনে তারপর শুরু হয় আইন-ভাঙার কাজ৷ এঁদের মধ্যে আবার অতি-উচ্চাশী যাঁরা, তাঁরা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি খুলে যে যাঁর মতো করে ডিবেঞ্চার বা প্রেফারেন্স শেয়ার বাজারে ছেড়ে কোটি কোটি টাকা তোলেন৷
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি খুলে আইনমাফিক হয়তো বা ডিবেঞ্চার বা শেয়ার বাজারে ছাড়া যায়৷ কিন্ত্ত সে কাজ করার যে সব পূর্বশর্ত থাকে (যেমন ট্রাস্ট তৈরি করা, সেখানে টাকা গচ্ছিত রেখে আমানতকারীর আমানত নিরাপদ করা ইত্যাদি) সেগুলির কোনওটাই এঁরা হয় মানেন না, নয়তোবা আংশিক মানেন৷ আসানসোল শহরের কাছে এক খণ্ড জমি কিনে একটি সংস্থাকে দেখেছিলাম প্রসপেক্টাসে মিথ্যে কথা লিখে টাকা তুলছে৷ যে সংস্থার মাটিতে কোনও অস্তিত্বই নেই, তারই সুন্দর ছবি ছাপিয়ে বোকা বানানো হচ্ছে মানুষকে৷ বিষয়টি সে সময় সিপিএমের স্থানীয় সাংসদের গোচরে এনেছিলাম৷ তিনি দেখে তাজ্জব হয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেননি৷ মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিবেঞ্চার ছাড়ার জন্য দুর্গাপুরের এক আমানতকারী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন৷ আদালত স্থানীয় পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল৷ কিন্ত্ত পুলিশও কিছু করেনি৷ ফলে, সারদা কাণ্ডে তৃণমূল জড়িয়ে গিয়েছে বলে সিপিএম ধোয়া তুলসী পাতা, এ কথা মনে করার কোনও কারণই নেই৷
আইনের ফাঁক গলে কী ভাবে ব্যবসা করতে হয় তার তদারকি করার জন্য এই সব সংস্থা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কোটি কোটি টাকা দেয়৷ অথচ এঁদের ভূমিকা বা দায়বদ্ধতা নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্নই তুলছে না৷ প্রতারণায় সক্রিয় সহযোগিতার দায় যদি প্রাথমিক ভাবে কারও কাঁধে বর্তায়, তা হলে তাঁরা এই অ্যাকাউন্ট্যান্টকুল৷ এরপর থাকে মানুষের চোখে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য কাগজে-টিভিতে এমন সব প্রকল্পের ঢালাও বিজ্ঞাপন যাদের অনেকের হয় অস্তিত্বই নেই নতুবা থাকলেও আছে নামমাত্র৷ মজার ব্যাপার, এই সব সংস্থার বেশিরভাগই আমানত স্কিমগুলির বিজ্ঞাপন দেয়নি৷ অন্য প্রকল্প বা প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনের আড়ালে তুলেছে সাধারণ মানুষের আমানত৷
কাগজে-কলমে এই সব সংস্থার কাজকর্মের তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব সত্যিই রাজ্য সরকারের নয়, কেন্দ্রীয় সংস্থা সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড বা সেবির৷ কিন্ত্ত সেবি আর এক নিধিরাম সর্দার, তাদের না-আছে লোকবল, না-আছে তত্ক্ষণাত্ ব্যবসা বন্ধ করার কোনও ক্ষমতা৷ গোটা রাজ্য জুড়ে এমন আগাছার মতো গজিয়ে ওঠা সংস্থাগুলিকে নেক-নজরে রাখার কোনও উপায়ই নেই সেবির৷ কোনও বে-আইনি কাজকর্ম গোচরে এলে সেবি যে সব ব্যবস্থা নেয়, তা আমাদের বিচারব্যবস্থার মতোই দীর্ঘসূত্রী৷ চিঠি-চাপাটি বিনিময় আর শুনানি করতেই চলে যায় বছরের পর বছর৷ তার চেয়েও বড় কথা, সেবি ব্যবস্থা নিলেই অভিযুক্ত সংস্থা দমে গিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে এমনও নয়৷ তাদের মাথার উপরে হাইকোর্ট৷ তার উপরে সুপ্রিম কোর্ট৷ সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিলেও তা কার্যকর করা কতটা কঠিন, সাহারা কাণ্ডে আমরা সেটাও প্রত্যক্ষ করছি প্রতিদিন৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সাহারা কর্তৃপক্ষকে বলেছে, আমানতকারীদের ২৪০০০ হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে৷ কিন্ত্ত সাহারা তা তো করেইনি, বরং গোটা দেশের সব সংবাদপত্রে জোড়া পাতা বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোরাসে জনগণমন গাইতে৷ সুপ্রিম কোর্ট যেখানে অসহায়, সেখানে সেবি তো নেহাতই চুনোপুঁটি৷
যে সব স্কিম দেখিয়ে এই সব সংস্থা টাকা তোলে, সাধারণ অর্থে তাদের বলা হয়ে থাকে 'পঞ্জি স্কিম'৷ ঠগবাজি করে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি অর্জন করা মার্কিন নাগরিক চার্লস পঞ্জির নামানুসারে তৈরি৷ কেউ কেউ আবার বলেন 'পিরামিড স্কিম'৷ আমেরিকার মতো দেশে, যেখানে সাধারণ মানুষ আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষিত, সচেতন এবং সচ্ছল, যেখানে আইন-কানুন অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং আঁটোসাঁটো, সেখানেও পঞ্জির উত্তরসূরীরা হামেশাই বিবিধ রকম স্কিম বাজারে এনে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারণা করে থাকেন৷ সাম্প্রতিক কালে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ম্যাডফ কেলেঙ্কারি৷ বস্ত্তত, দুনিয়ায় হয়তো এমন কোনও দেশই নেই, যেখানে এই ধরনের প্রতারণার কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে এগুলি প্রায় আকছার ঘটে থাকে৷ ভারতবর্ষের অন্য রাজ্যেও ঘটে নিয়মিত৷ সংক্ষেপে এর সারমর্মটি দাঁড়ায় এই রকম৷ গাত্র-বর্ণ, ভাষা বা ভৌগোলিক অবস্থান যাই হোক না কেন, মানুষ মাত্রেই লোভ রিপুর শিকার৷ আর লোভ এমনই বস্ত্ত যা গরীব-বড়োলোক, শহর-গ্রাম, শিক্ষিত-অশিক্ষিতের তারতম্য করে না৷ ফলে, সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের অশিক্ষিত আনপড় গরীব-গুর্বোই শুধু নন, অনেক শিক্ষিত, শহুরে পোড় খাওয়া মানুষও এই সব সংস্থায় টাকা রেখে সর্বস্বান্ত হয়ে এখন মাথা চাপড়াচ্ছেন৷ লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যুর এমন গণলীলা এর আগে দেখিনি কখনও৷
'পঞ্জি' হোক বা 'পিরামিড' বা 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম'- এই ধরনের আত্মঘাতী ব্যবসার চালিকাশক্তি একটিই৷ ইংরেজিতে বললে, 'রবিং পিটার টু পে পল৷' মানে রামের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শ্যামের টাকা ফেরত দেওয়া৷ এই পাওয়া আর দেওয়ার চক্রটি যতক্ষণ ঠিকঠাক চলে, কোন চোরাবালির উপর ব্যবসাটি দাঁড়িয়ে আছে ততক্ষণ তা বুঝতে পারা যায় না৷ পারা যায় তখন, যখন ভুজের ভূমিকম্পের মতো একদিন সকালে হঠাত্ ব্যবসার গোটা কাঠামোটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে৷ সারদা-কাণ্ডে ঠিক এই ঘটনাটিই ঘটেছে৷ এজেন্টদের সক্রিয় সহযোগিতায় যতদিন আমানত ঠিকঠাক জমা পড়ছিল, নিজের ঠাঁটবাট বজায় রেখে, দাতা হরিশ্চন্দ্রের মতো টাকা বিলিয়ে সাম্রাজ্য চালিয়ে যাওয়া সুদীন্ত সেনের পক্ষে মোটেই কঠিন কাজ ছিল না৷ যেই সেখানে গণ্ডগোল হয়ে গেল, অমনি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল তাঁর কারবার৷ হঠাত্ সুনামি এলে চারপাশের লোকজনের যেমনটা হয়ে থাকে, প্রায় তেমনই দুরবস্থা এখন আমানতকারীদের৷
কিন্ত্ত গল্পের শেষ এখানেই নয়৷ বরং বলা যায় শুরু৷ এবং সেই গল্পটি আমাদের রাজ্যের পক্ষে যতটা মর্মান্তিক, প্রায় ততটাই ভয়ঙ্কর৷ সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে বেশ কয়েকজন আতঙ্কে ও অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন৷ অনেক ছোটো সংস্থার মালিক রাতারাতি পাততাড়ি গুটিয়ে হাওয়া হয়ে গিয়েছেন চোখের অন্তরালে৷ কিন্ত্ত সবচেয়ে বড় কথা, এই ঝোড়ো বিতর্কের আবহাওয়ায় গোটা রাজ্য জুড়েই নতুন আমানত সংগ্রহ স্বাভাবিক কারণেই প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে পুলিশ হঠাত্ সক্রিয় হওয়ায় আমানত আসছে না সেখান থেকেও৷ এর অর্থ, সপ্তাহ তিনেক আগে সারদার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, অদূর ভবিষ্যতে বাকি সকলের ক্ষেত্রেও পরপর তা হয়ে চলবে৷ কোনও কমিশন বা তহবিল গড়ে কোটি কোটি বঞ্চিত মানুষের সেই ক্রোধ বা শোক ঠেকানো যাবে না৷ যার উপরে বসে এতদিন সবাই মনের আনন্দে পিকনিক করেছে, এ বার জ্বলে উঠতে চলেছে সেই আগ্নেয়গিরি৷ রাজ্যের পক্ষে তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হবে তার আগাম আন্দাজ দেওয়া কঠিন৷
অথচ কেচ্ছায় নিমগ্ন মিডিয়া বা পারস্পরিক দোষারোপের খেলায় মত্ত রাজনীতির কারবারিদের কারও সে দিকে কোনও নজর নেই৷ কী হয়েছে তা নিয়ে তত্ত্ব-তালাশ যদি বা কিছুটা হচ্ছে, কী হতে চলেছে তা নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই কারও৷ অথচ রাজ্যের সার্বিক স্বার্থে, কোটি কোটি মানুষের স্বার্থে এ ব্যাপারে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণই সবচেয়ে জরুরি৷
কী সেই ব্যবস্থা, কে নেবে সেই ব্যবস্থা কিংবা কী ভাবে নেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা তা নিয়ে সকলেই নীরব৷ চিট ফান্ড নামকরণ নিয়ে যে বিভ্রান্তি, অনেকটা একই রকম বিভ্রান্তি ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়েও৷ কিন্ত্ত মার্জারটির গলায় ঘণ্টাটি বাঁধবে কে?
No comments:
Post a Comment